স্যন্দন ডিজিটাল ডেস্ক। আগরতলা। ২৮ জানুয়ারি : প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার নির্মীয়মান ১৪ টি ঘর ভেঙে তছনছ করে দেওয়ার পর দুই গোষ্ঠীর মধ্যে সৃষ্টি হয় চরম উত্তেজনা। ঘটনার সূত্রপাত শুক্রবার রাতে, প্রতিবাদে শনিবার সকাল থেকে পথ অবরোধের পর দুপুরে মীমাংসা হয় মন্ত্রীর আশ্বাসে। কিন্তু রবিবার অপর গোষ্ঠী গাছের লগ রাস্তায় ফেলে পাল্টা অভিযোগ তুলে পথ অবরোধের শামিল হয়। ঘটনার বিবরণে জানা যায়, তেলিয়ামুড়া আর.ডি ব্লক এলাকার উত্তর ব্রহ্মছাড়ার কলই পাড়াতে শুক্রবার রাতের অন্ধকারে রাস্তায় বিতর্কিত শব্দ লিখে ১৪ টি নির্মীয়মান সরকারি ঘর ভেঙে তছনছ করে দেয় দুষ্কৃতিরা।
শনিবার এই ঘটনা প্রত্যক্ষ করতে পারে এলাকাবাসী। এই ঘটনা প্রত্যক্ষ করতে পেরে স্থানীয় এলাকার মানুষ শনিবার সকাল ৯ টা থেকে ব্রহ্মছাড়া-কাঁকড়াছড়া সড়কে গাছের লগ ফেলে সড়ক অবরোধের শামিল হয়। ক্ষতিগ্রস্তদের অভিযোগ, স্থানীয়দের অভিযোগ রাজ্যের এক রাজনৈতিক দলের শীর্ষ নেতার কোনো এক মন্তব্যের জেরেই দুষ্কৃতিকারীরা এই ধরনের ঘটনা সংগঠিত করেছে। স্থানীয়রা অভিযোগ তুলে অপর গোষ্ঠী বিগত দিনও তারা এ ধরনের ঘটনা সংঘটিত করেছে। এই ঘটনার পূর্বপরিকল্পিত। খবর পেয়ে পুলিশ প্রশাসন ঘটনাস্থলে ছুটে আসলে তেমন কোনো আশ্বাস দিতে পারেনি এলাকাবাসীকে। প্রশাসনের আধিকারিকরা ক্ষতিগ্রস্ত ঘরগুলি পরিদর্শন করে জানান পুলিশ তাদের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করবে। এলাকায় নিরাপত্তা কর্মীদের টহলদারি বাড়ানো হবে। যদিও শেষ পর্যন্ত মন্ত্রী বিকাশ দেববর্মার কাছ থেকে অবরোধকারীরা নিরাপত্তার আশ্বাস পেয়ে অবরোধ প্রত্যাহার করেছে। কিন্তু পুলিশ প্রশাসনের পক্ষ থেকে দেওয়া হয়েছিল যারা এই ঘটনার সাথে যুক্ত তাদের অবিলম্বে গ্রেপ্তার করা হবে।
কিন্তু ২৪ ঘন্টা অতিক্রান্ত হয়ে গেল কাউকে গ্রেফতার করার খবর নেই বলা চলে। এরই মধ্যে রবিবার সকাল থেকে যে গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছিল সেই গোষ্ঠী রাস্তায় নেমে পাল্টা অভিযোগ তুলেছে। এই গোষ্ঠীর বক্তব্য তারা যদি এলাকায় শান্তি-শৃঙ্খলা নষ্ট করার চেষ্টা করত তাহলে সেই গোষ্ঠীর গৃহপালিত পশু তারা ছিনিয়ে নিয়ে যেতে পারত। যে অভিযোগটি তাদের বিরুদ্ধে তোলা হয়েছে সেটা সম্পূর্ণভাবে ভিত্তিহীন। এদিকে পরিস্থিতি আবারো উত্তপ্ত হওয়ার ইঙ্গিত পেয়ে তাড়াতাড়ি ছুটে আসে তেলিয়ামুড়া থানার ওসি সহ অন্যান্য প্রশাসনিক আধিকারিক।
তবে সকলেই নীরব দর্শকের ভূমিকা পালন করেছে এদিন। গোটা ঘটনায় ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছে প্রশাসন। তদন্ত প্রক্রিয়া কতটা এগিয়েছে সে বিষয়ে কোন কিছুই উল্লেখ করেননি পুলিশ। রবিবার পথ অবরোধ করা এই গোষ্ঠীর দাবি যারা এলাকায় ঘর ভাঙচুর করেছে এবং রাস্তায় বিতর্কিত মন্তব্য লিখেছে তাদের বিরুদ্ধে অবিলম্বে পদক্ষেপ গ্রহণ করার জন্য। প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে পুলিশ যদি শনিবারের পথ অবরোধ ঘটনার পর এলাকায় সঠিকভাবে নিরাপত্তা কর্মী মোতায়েন করে থাকে তাহলে রবিবার পুনরায় কিভাবে পথ অবরোধ করে সাধারণ জনগণের সমস্যা সৃষ্টি করতে পারল উত্তেজিত জনতা। সুতরাং এক প্রকার ভাবে আগুনে ঘি ঢালার মত পরিস্থিতি হয়ে উঠেছে।