স্যন্দন ডিজিটাল ডেস্ক, ২৬ ডিসেম্বর : হায়রে সুশাসন হায়রে, ডবল ইঞ্জিনের সরকার। এক সংক্রান্তি চলে যাওয়ার পর আরেক সংক্রান্তি দরজায় কড়া নাড়তে শুরু করেছে। কিন্তু দুর্ভাগ্য ফোলা দেববর্মার। প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনায় সরকারি ঘর মঞ্জুর হলেও টাকার দেখা নেই। পরিবারের ছয় সদস্যকে নিয়ে এখন অসহায় অবস্থায় দিন কাটাচ্ছেন গৃহকর্তা। ঘটনা মান্দাই ব্লকের অন্তর্গত মানিকং পঞ্চায়েত এলাকায়। এলাকার ফোলা দেববর্মা প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনায় সরকারি ঘর পেয়েছিলেন ২০২২ সালে। সেই সময় একাউন্টে ঢুকে ছিল প্রথম কিস্তির টাকা।
সেই টাকায় যতটুকু তুলতে পেরেছেন ততটুকুই ঘর মাথা তুলে দাঁড়িয়েছে। এরপর আর কোন কিস্তির টাকা একাউন্টে ঢুকেনি। যার কারণে ঘর তৈরির কাজ আর এগিয়ে নিয়ে যাওয়া সম্ভব হচ্ছে না তার পক্ষে। তিন কন্যা আর এক পুত্র সন্তান, সব মিলিয়ে ছয়জনের সংসার। কোন রকমে বসবাস করছেন একটি ছোট্ট ছনের ঘর। বৃষ্টির দিনে ঘুমোতে পারেন না। বৃষ্টির জল চলে আসে ঘরের ভেতরে। প্রথম কিস্তির ৪৮ হাজার টাকা পাওয়ার পর এখন পর্যন্ত আর বাকি টাকাটা কেন পাননি সে বিষয়ে তিনি যোগাযোগ করেছেন পঞ্চায়েতের সঙ্গে, স্থানীয় রেগা মাস্টারের সাহায্যে।
পঞ্চায়েতের তরফ থেকে জালানো হয়েছে যে জায়গার সঙ্গে জিও ট্র্যাকিং করা হয়েছিল, সেই জায়গায় নাকি তিনি ঘর তোলেননি যার কারণে পরবর্তী কিস্তির টাকা তিনি আর পাচ্ছেন না। কিন্তু দুর্ভাগ্যের বিষয় হলো স্থানীয় প্রশাসন, পঞ্চায়েতের জন প্রতিনিধি কেউই সাহায্যের জন্য হাত বাড়িয়ে দিচ্ছেন না। তার একটাই দাবি, অন্তত ঘরের বাকি টাকাটা একাউন্টে ঢুকলে তিনি মাথা গোজার জায়গা করতে পারবেন। না হলে অভাবের সংসার প্রতিপালন করার পাশাপাশি তিনি পরিবারকে নিয়ে যাবেন কোথায়। কারণ এভাবে একটা ছোট্ট ছনের ঘরে ছয় জনকে নিয়ে থাকা যায় না। সত্যিই আশ্চর্যজনক বিষয়, শাসকদল আশ্রিত কিংবা সরকারি সুবিধাভোগীরা ডানাভাবে সুবিধা লাভ করে কয়েক লক্ষ টাকা খরচ করে ঘর তৈরি করছেন। বিলাসিতার মধ্য দিয়ে জীবনযাপন করার পথ তৈরি করে নিচ্ছেন। কিন্তু সমাজের একটা অংশের পিছিয়ে পড়া মানুষ সরকারি ঘর পাওয়া সত্ত্বেও স্থির টাকা একাউন্টে না ঢুকায় ঘর তৈরি করতে পারছেন না। এবারে প্রশ্ন হল প্রতি ঘরে সুশাসন, বিকশিত ভারত সংকল্প যাত্রা, প্রধানমন্ত্রীর নরেন্দ্র মোদির গ্যারান্টি ভেনের প্রতিটি গ্রামে গ্রামে যাওয়া কতটা কাজে এলো সাধারণ মানুষের? এই প্রশ্নের উত্তর দিতে পারবেন একমাত্র সরকার পরিচালনার দায়িত্বে থাকা কর্তা ব্যক্তিরাই।