স্যন্দন ডিজিটাল ডেস্ক। আগরতলা। ৬ নভেম্বর: রাজ্যে ত্রিপুরা স্টেট রাইফেলস বাহিনী করা হয়েছিল জঙ্গি দমনের জন্য। আর জঙ্গি দমনে বড় প্রশংসনীয় ভূমিকা পালন করেছে টিএসআর বাহিনী। বর্তমানে জঙ্গি দমন নিয়ন্ত্রণে আসতে টিএসআর বাহিনীকে এখন ট্রাফিক পুলিশ লেখা জ্যাকেট পরিধান করে কোন ধরনের প্রশিক্ষণ ছাড়াই ট্রাফিক পরিষেবা নিয়ন্ত্রণে আনার কাজে ব্যবহার করা হচ্ছে।
পর্যাপ্ত পরিমাণে ট্রাফিক কর্মী শহরের মূল রাস্তাগুলিতে দায়িত্ব না দিয়ে টিএসআর দিয়ে কর্মযজ্ঞ করে চলেছে। এতে করে বাড়ছে সড়ক দুর্ঘটনা। শহরে অতিমাত্রায় গাড়ি চলাচল নিয়ন্ত্রণে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা পালন করতে পারছে না তারা। শুধুমাত্র হাত নেড়ে দায়িত্ব পালন করছেন। যার পরিণামে হচ্ছে ফিল্মি গত সড়ক দুর্ঘটনা। এই দৃশ্য ফুটে উঠেছে সোমবার অফিস টাইমে ব্যস্ততম রাস্তা ভিআইপি রোডে। সার্কিট হাউস সংলগ্ন এলাকায় পর্যাপ্ত পরিমাণে ট্রাফিক কর্মী না থাকায় চলাচলকারী অধিকাংশ গাড়ির মধ্যে ছিল না নিয়ম মাফিক দূরত্ব। যার কারণে একসাথে চারটি গাড়ি সংঘর্ষ হয় এ দিন। জানা যায় একটি বোলেরো গাড়ি ব্র্যাক কষতেই পেছন থেকে অপর একটি মারুতি গাড়ি এসে ধাক্কা দেয় বোলেরো গাড়িটিকে। বোলেরো গাড়িকে ধাক্কা দেয় পেছনে একটি ওয়াগনার গাড়ি।
ওয়াগনার গাড়িটিকে ধাক্কা দেয় একটি বাস। এতে মারুতি গাড়ি চালক অল্প বিস্তারে আহত হয়েছে। বোলেরো গাড়ি ছাড়া বাকি তিনটে গাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। পরে পথচারীদের দায়িত্ব দেখাতে ছুটে আসেন ট্রাফিক দপ্তরের নিচু মহল থেকে উঁচু মহল পর্যন্ত একগাদা অফিসার। এবং তারা এসে ঘটনা সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে অভিজ্ঞতা নেওয়ার আগেই গাড়িগুলির নম্বর ফটো তুলতে ব্যস্ত হয়ে পড়ে। অভিযোগ ট্রাফিক কর্মীরা ভিআইপি রোড দিয়ে ভিআইপি ও লাল বাতির গাড়ি যাতায়াতের সময় রাস্তার পাশে দাঁড়িয়ে কর্মযজ্ঞ করতে দেখা যায়। বাকি সময় তারা কোথায় থাকে তাদের কেউ দেখে না বলে জানান এক গাড়ি চালক। দিনে শিপটিং ডিউটি হলেও ট্রাফিক কর্মীদের কোন সক্রিয় ভূমিকা নেই শহরের এই ভিআইপি রোড থেকে শুরু করে ব্যস্ততম সড়ক গুলোর মধ্যে। প্রতিদিন এভাবে দুর্ঘটনার মাত্রা শহরে লাফিয়ে বাড়ার পরে ট্রাফিক পুলিশের কুম্ভ-নিদ্রা ভাঙছে না। বছরের পর বছর শহরে বুকে চাকরি করে তাদের অলসতা এতটাই বেড়ে গেছে যে ঠিকভাবে দপ্তরে দায়িত্বটুকু পালন করছে না।
এমনটাই অভিযোগ পথচারীদের মুখ থেকে শোনা যায়। শহরে অধিকাংশ রাস্তা শুধু অফিস টাইমে নয়, এখন দিনরাত ব্যাপক ব্যস্ত থাকে। ব্যস্ততম রাস্তা দিয়ে জরুরী ভিত্তিক গাড়ি এম্বুলেন্স, দমকলের ইঞ্জিন পর্যন্ত নির্দিষ্ট গতিতে যাতায়াত করতে পারে না। রাস্তার মধ্যে যেখানে সেখানে যাত্রীবাহী অটো, টমটম, স্কুল বাস এবং যাত্রীবাহী বাস দাঁড়িয়ে পড়ছে। ফলে দুর্ঘটনায় সংঘটিত হচ্ছে। যখন কোন ভিআইপি রাস্তা দিয়ে যাতায়াত করে তখন তাদের সেলামী দিতে রাস্তার পাশে দাঁড়িয়ে ভুল করে না ট্রাফিক বাবুরা। ভিআইপি যাওয়ার সাথে সাথে আবার তারা শহরে মূল রাস্তার দায়িত্ব থেকে নিখোঁজ হয়ে যায়। ভিআইপি যাওয়ার আগে অগ্রিম খবর আসলে তাদের আবার দেখা পায় পথচারীরা। সুতরাং ট্রাফিক কর্মীদের উদাসীনতায় শৃঙ্খলার চরম অবনতি ঘটছে শহরের রাস্তাগুলোর মধ্যে। এবং দায়িত্বে থাকা ট্রাফিক আধিকারিক কাউকে শহরের কোন রাস্তায় ঘাটে দেখতে পায় না পথচারীরা। পশ্চিম জেলা পুলিশ সুপারের পর এক আধিকারিক ট্রাফিকের দায়িত্ব পেয়েও শীততাপ নিয়ন্ত্রিত কক্ষ থেকে বের হতে চান না। মাঠে ময়দানে ওনার চরম অভিজ্ঞতা কম, নাকি অলসতা সেটাও জানেনা অভিজ্ঞ মহল। এমনটাই গুঞ্জন সকলের মধ্যে।