Sunday, September 8, 2024
বাড়িরাজ্যওপারে স্বামী জেল বন্দী, কেটে গেল অভাব অনটনের ৩৭ টা বছর, আজও...

ওপারে স্বামী জেল বন্দী, কেটে গেল অভাব অনটনের ৩৭ টা বছর, আজও কেঁদে বুক ভাসায় স্ত্রী

স্যন্দন ডিজিটাল ডেস্ক। আগরতলা। ৪ নভেম্বর :  কেটে গেল ৩৭টা বছর, না স্ত্রীর মিলল স্বামীর ভালোবাসা, না ছেলে পেল পিতার আদর। চারদিকে দেওয়াল বন্দি জেলখানা যেন জীবনের অভিশাপ হয়ে গেছে শাহজাহানের। এপার থেকে আজও স্ত্রী আশায় বুক বাধে স্বামী ফিরে আসবে। কিন্তু স্বামী কাঁটাতারের বেড়ার ওপারে জেলেই জীবনের শেষ প্রান্তে প্রহর গুনছে। কেঁদে বুক ভাসালেও পাশে দাঁড়ানোর জন্য নেই কেউ।

উল্লেখ্য, ৩৭ বছরের অধিক সময় ধরে সোনামুড়া দুর্গাপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের সীমান্ত লাগুয়া শাহজাহান বিলাস নামে এক ব্যক্তি বাংলাদেশের কুমিল্লা কেন্দ্রীয় কারাগারে জেল হেফাজতে রয়েছে। বাড়ি সোনামুড়া মহকুমার দুর্গাপুর গ্রামে। জানা যায়, ৩৭ বছর আগে বাংলাদেশ কুমিল্লা জেলার ঘিলাতলী গ্রামে মামার বাড়িতে বেড়াতে গিয়েছিলেন শাহজাহান বিলাস। মামার বাড়িতে শাহজাহান বিলাসে যাওয়ার পর, ঐদিন রাতে মামার প্রতিবেশী বাড়িতে ডাকাতির মামলায় কুমিল্লা পুলিশ হানা দেয়। তখন ডাকাতি মামলা অভিযুক্ত আসামী, নিজেকে বাঁচতে গিয়ে দুর্গাপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের বাসিন্দা তথা ভারতের নাগরিক শাহজাহান বিলাসের নাম বলে দেয়। তারপর পুলিশ ওই ডাকাতি মামলায় ভারতের নাগরিক শাহজাহান বিলাসকে কুমিল্লা পুলিশ নিয়ে যায়। আর সেই মামলার পরিপ্রেক্ষিতে কুমিল্লা কেন্দ্রীয় কারাগারে শাহাজাহান বিলাসকে পুলিশের তরফ থেকে কোন রকমের অত্যাচার বাদ দেয় নি। গত দুই বছর আগে কুমিল্লা কেন্দ্রীয় কারাগারে ইয়াবা ট্যাবলেট রাখার অপরাধে ভারতের নাগরিক দুর্গাপুরের শাহজাহান বিলাসকে বাংলাদেশের পুলিশ চরম নির্যাতন করেছিল। তার নির্যাতনের ভিডিও বাংলাদেশের বিভিন্ন টেলিভিশনে ও সোশ্যাল মিডিয়াতে প্রচার হয়েছিল। প্রশ্ন হল কুমিল্লা কেন্দ্রীয় কারাগারে একটি সুই নিয়ে ঢোকার মতন কোন পরিবেশ নেই। কিন্তু শাহজাহান বিলাস এই কারাগারে কি করেই ইয়াবা নিয়ে আসবে। এর বিরুদ্ধে বাংলাদেশের সরকার এবং ভারতের সরকার কোন পদক্ষেপ নিচ্ছে না, যার ফলে শাহজাহান বিলাস কুমিল্লা কেন্দ্রীয় কারাগারে অতিরিক্ত জেলের ঘানি টানছেন। তার বাড়ির লোকজনেরা আরো জানান, শাহজাহান বিলাস যেদিন কুমিল্লা কেন্দ্রীয় কারাগারে জেল রায় হয় ঠিক ১৩ দিন পরে শাহজাহান বিলাসের ছেলে লিটন মিয়ার জন্ম হয়।

এখন লিটন মার বয়স ৬৫ বছর। লিটনের বয়স  ৩৭ বছর। স্বামী জেলে যাওয়ার পর, অভাব অনটনে মানুষের বাড়িতে কাজ করে লিটনের মা লিটনকে বড় করেছে। কিন্তু দুঃখের বিষয় হলো আজকের ৩৭ বছর হয়ে গেল, তার স্বামী এখনো বাংলাদেশের জেল থেকে মুক্তি পায়নি। না মন থেকে মুছলো ভালোবাসা, না জীবনে পেল স্বামীর ভালোবাসা। তাই জীবনের শেষ সময়ে স্বামীকে একবারের জন্য ছুঁয়ে দেখতে চান শাহজাহানের স্ত্রী। এর জন্য মুখ্যমন্ত্রী ও কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে দাবি জানান স্বামীকে ফিরিয়ে আনার সুযোগ করে দেওয়ার জন্য। তবে সেই আশা কতটা পূরণ হবে সেটাই বড় বিষয়।

সম্পরকিত প্রবন্ধ

সবচেয়ে জনপ্রিয়

সাম্প্রতিক মন্তব্য