স্যন্দন ডিজিটাল ডেস্ক। আগরতলা। ২৪ অক্টোবর : দেবী দুর্গা চারদিন মর্তে কাটিয়ে এবার কৈলাসে রওয়ানা হয়েছে। আনন্দে উচ্ছ্বাসে মিশেছে বিষণ্ণতার সুর৷ সকাল থেকে মন্ডপে মন্ডপে দেবীর বরণ হয়৷ হয় ঘট বিসর্জন। এরপর হয় সিঁদুরখেলা। তার পর হাওয়া নদীতে মা-কে বিদায় জানানো শুরু হয়েছে। পুরান মতে মহিষাসুর বধ সংক্রান্ত কাহিনীতে বলা হয়েছে, মহিষাসুরের সঙ্গে দিনরাত্রি যুদ্ধ করার পরে দশমীর দিনে তার বিরুদ্ধে জয়লাভ করেন দেবী। আশ্বিন মাসের কৃষ্ণা
চতুর্দশীতে দেবী আবির্ভূত হন এবং শুক্লা দশমীতে মহিষাসুর বধ করেন বিজয় দশমী সেই বিজয়কেই চিহ্নিত করে। একে অপরের সাথে আলিঙ্গনে শুভেচ্ছা বিনিময় ও মিষ্টিমুখের মাধ্যমে মাকে বিদায় জানানো পালা৷ হাসি মুখে মাকে বিদায় জানিয়ে আরও একটা বছরের অপেক্ষা। মঙ্গলবার সকাল থেকেই বিজয় দশমীকে কেন্দ্র করে দশমী ঘাটে ছিল ভিড়। সকলের মনের ছিল এক অজানা কষ্ট, মুখে ছিল হাসি, মাকে বিদায় জানিয়ে একটি বছরই অপেক্ষা যেন আবারও প্রহর গোনা শুরু।
সকালেই বাড়ি ঘরের পুজোর প্রতিমা গুলি নিরঞ্জনের জন্য আনা হয় দশমীঘাটে। সেখান পুর নিগমের ব্যবস্থাপনায় একে একে প্রতিমা গুলি নিরঞ্জিত হয় হাওড়া নদীতে। এদিকে দশমীঘাট ছাড়াও শহরের হাওড়া নদীর অন্যান্য ঘাট গুলিতে প্রতিমা নিরঞ্জন পর্ব চলছে। এদিন দশমী ঘাটে প্রতিমা নিরঞ্জন পর্ব খতিয়ে দেখতে যান মেয়র দীপক মজুমদার । পরিদর্শন শেষে মেয়র জানান গত বছর থেকে প্রতিমা নিরঞ্জনের ক্ষেত্রে বিশেষ ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। গতবার যে সমস্ত খামতি ছিল তা এবার দূর করা হয়েছে। ঘাটে পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা রয়েছে। শহরের অধিকাংশ প্রতিমা এই ঘাটেই নিরঞ্জিত হয়। প্রতিমা নিরঞ্জনের সঙ্গে থাকা সাউন্ড সিস্টেম ও বাদ্যযন্ত্র ঘাটে প্রবেশ করতে দেওয়া হবে না। মাঙ্গলিক কাজ করবে পুর নিগম। এন ডি আর এফ, মেডিক্যাল টিম রাখা হয়েছে। ২৭ অক্টোবর পর্যন্ত ৯০ জন শ্রমিক নিরঞ্জনের কাজে নিযুক্ত থাকবে। তিনটি ক্রেইন এবার ব্যবহার করা হয়েছে।
এদিকে প্রতিমা নিরঞ্জন পর্ব দেখতে দশমীঘাটে যান মুখ্যমন্ত্রী ডাঃ মানিক সাহা। মঞ্চে তাঁকে স্বাগত জানান মেয়র দীপক মজুমদার। ছিলেন কর্পোরেটার বাপী দাস, পুর নিগমের কমিশনার শৈলেশ কুমার যাদব সহ অন্যান্যরা। নিরঞ্জন পর্ব সম্পর্কে যাবতীয় খোঁজ খবর নেন মুখ্যমন্ত্রী। মা এসেছিল, আবার চলে যাচ্ছে। তাতে একটু বিষাদের ছায়া রয়েছে। এটাই চিরাচরিত প্রথা। বিজয়া দশমী উপলক্ষ্যে রাজ্যবাসীকে অভিনন্দন ও শুভেচ্ছা জানান মুখ্যমন্ত্রী। আগামী দিনে মায়ের আশীর্বাদে এক ত্রিপুরা শ্রেষ্ঠ ত্রিপুরা গড়ার লক্ষ্য পূরণ হবে বলে আশা ব্যক্ত করেন তিনি।