আগরতলা, ৬ অক্টোবর (হি.স.) : দুর্নীতি উন্নয়নের প্রধান শত্রু। তাই, দুর্নীতির বিরুদ্ধে শূন্য সহনশীলতা নীতি অবলম্বন করে ত্রিপুরা সরকারকে কাজ করতে হবে। কারণ, সমাজের অন্তিম ব্যক্তি পর্যন্ত সরকারি কাজের সুবিধা পৌঁছাতে হবে। আজ বুধবার ত্রিপুরা সফরে এসে আগরতলায় রবীন্দ্র শতবার্ষিকী ভবনে নাগরিক সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে এই পরামর্শ দিলেন উপ-রাষ্ট্রপতি এম ভেঙ্কাইয়া নাইডু। তাঁর কথায়, কেন্দ্রীয় সরকার উত্তর-পূর্বাঞ্চলের উন্নয়নে উদ্যোগী হয়েছে। ফলে, অর্থ বরাদ্দের পরিমাণও বেড়েছে। সেই অর্থ মানুষের কাছে পৌঁছানো নিশ্চিত করতে হবে। সাথে তিনি যোগ করেন, উন্নয়নের প্রশ্নে সরকার ও বিরোধী উভয়ের সম্মিলিত প্রয়াস নিতে হবে।
আজ উপ-রাষ্ট্রপতি আগরতলা স্মার্ট সিটি প্রকল্পে এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাঙ্কের অর্থানুকূল্যে ৪৪৪.০৬ কোটি টাকা ব্যয়ে ১৫টি নতুন রাস্তার ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন করেছেন। এতে তিনি আগরতলা শহরবাসীর কাছে অনুরোধ জানান, সাময়িক কষ্ট মেনে নেবেন। ত্রিপুরা সরকার ও প্রশাসনকে সহযোগিতা করবেন। তাতে, আগামীদিনে দারুণ সুযোগ-সুবিধা পাবেন। তাঁর কথায়, উন্নয়নের কাজে মানুষকে এগিয়ে এসে অংশিদারিত্ব নিতে হবে। কারণ, শক্তিশালী এবং উন্নত যোগাযোগ ব্যবস্থা উন্নয়নের প্রধান শর্ত।
এদিন তিনি বলেন, মুখ্যমন্ত্রী, মুখ্যসচিব, মন্ত্রীগণ এবং বিধায়কদের প্রশাসনিক আধিকারিকদের সাথে উন্নয়নমূলক কাজে অংশ নিতে হবে এবং সমাজের অন্তিম ব্যক্তি পর্যন্ত তা পৌঁছাতে হবে। তাতে স্বচ্ছতা বজায় রাখা এবং দায়িত্বশীল হতে হবে। তাঁর বার্তা, জনগণকে দাঁড় করিয়ে রাখা এবং সরকারি সুযোগ-সুবিধা প্রদানে বিড়ম্বনা, এমন পরিস্থিতি এড়াতে হবে।
উপ-রাষ্ট্রপতির বক্তব্য, সাম্প্রতিককালে এই অঞ্চলের উন্নয়নে অর্থ বরাদ্দের পরিমাণ বেড়েছে। সেই অর্থ মানুষের কাছে পৌঁছে দিতে হবে। তাঁর সাফ কথা, সরকারি সুযোগ-সুবিধা প্রদানে ত্রিপুরা সরকার এবং স্থানীয় প্রশাসনিক আধিকারিকদের স্বচ্ছতা বজায় রাখার সাথে দায়িত্বশীল হতে হবে। তিনি বলেন, সরকারি সুবিধা পাওয়ার জন্য মানুষের লাইনে দাঁড়ানো এড়াতে হবে। কারণ, মানুষের বুঝতে হবে, দিল্লি তাঁদের যত্ন নিচ্ছে। তেমনি শহরবাসীর জন্য আগরতলাও যত্নশীল। সমাজের সকল অংশের মানুষের কাছে সেই বার্তা পৌঁছে দিতে হবে। তাঁর সাফ কথা, উন্নয়নে বাধা তৈরি হোক এমনটা এড়াতে হবে।
তাঁর মতে, রাজনৈতিক দলের মধ্যে লড়াই থাকবে। কিন্তু রাজনেতারা নিজেদের শত্রু ভাবতে পারবেন না। কারণ, ত্রিপুরার উন্নয়নে সরকার এবং বিরোধী উভয়ের সম্মিলিত প্রয়াসের প্রয়োজন।
এদিন তিনি ত্রিপুরায় উৎপাদিত বিভিন্ন পণ্য দেশীয় এবং আন্তর্জাতিক বাজার দখলে বিপণন এবং ব্র্যান্ডিঙের গুরুত্ব অপরিসীম বলে দাবি করেছেন। তাঁর বক্তব্য, ত্রিপুরা থেকে বিভিন্ন পণ্যের রফতানি তিন গুণ বাড়াতে হবে। এক্ষেত্রে, কৃষকরা তাঁদের উৎপাদিত ফসল দেশীয় এবং আন্তর্জাতিক বাজারে বিক্রি করতে পারেন, সেই বিষয়টি নিশ্চিত করতে হবে। পাশাপাশি তিনি প্রযুক্তিকে ভর করে কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরির জন্য যুব প্রজন্মকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়েছেন।