স্যন্দন ডিজিটাল ডেস্ক। আগরতলা। ৮ অক্টোবর : অবশেষে মুখ খুললেন বিরোধী দলনেতা অনিমেষ দেববর্মা। বিদ্যুৎ মাশুল বৃদ্ধি, আগরতলা পুর নিগম বাসীর উপর সম্পদ করের বোঝা চাপানো, শহর থেকে হকার উচ্ছেদ অভিযান, প্যান কার্ড এবং আধার কার্ড লিঙ্ক করানোর জন্য ১০০০ টাকা করে পকেট কাটার ফন্দি সহ বহু কিছু গত কয়েক মাসে হয়ে যাওয়ার পর মহাশয় তিনি নড়েচড়ে বসলেন। এমনটাই মনে করছে রাজনৈতিক মহল।
কারণ রবিবার তিনি সাংবাদিক সম্মেলন করে এ বিষয়গুলি একের পর এক সংবাদ মাধ্যমের কাছে তুলে ধরে প্রতিবাদ জানিয়ে জনগণের জন্য দুঃখ প্রকাশ করেন। কিন্তু প্রধান বিরোধী দলের পক্ষ থেকে কোন ধরনের আন্দোলনের ঘোষণা দেননি তিনি। তিনি বিধানসভায় সাংবাদিক সম্মেলন করে বলেন, সরকার বিদ্যুৎ পরিষেবা মানুষকে সঠিকভাবে দিতে না পারলেও বিদ্যুৎ মাশুল বৃদ্ধি করেছে। এ বিষয়টা নিয়ে তিনি প্রতিবাদের সুরে বললেন শহরাঞ্চলে চলছে লোড সিডিং। বিদ্যুৎ নিগমের অফিস গুলিতে নেই পর্যাপ্ত পরিমাণে গাড়ি। গ্রামাঞ্চল গুলির অবস্থা অত্যন্ত করুন। তিনি নিজ বিধানসভা কেন্দ্র আশারাম বাড়ির প্রসঙ্গ টেনে বলেন একবার বিদ্যুৎ নষ্ট হয়ে গেলে তিন থেকে চার দিন সময় লেগে যায় বিদ্যুৎ সংস্কার করতে। তাই সরকারের বিদ্যুৎ মাশুল বৃদ্ধি না করে কিভাবে মানুষকে সঠিকভাবে পরিষেবা দেওয়া যায় সেটা গুরুত্ব দেওয়া প্রয়োজন ছিল বলে দাবি করেন তিনি। তিনি বলেন মন্ত্রী মহোদয় শুধু বলছেন নেশা মুক্ত ত্রিপুরা করবেন।
কিন্তু নেশা মুক্ত ত্রিপুরা কিভাবে হবে সে বিষয়ে তাদের কাছ থেকে কোন আশা মিলছে না বিরোধী দলের। নেশা মুক্ত ত্রিপুরা যদি সত্যিই সরকার করতে চায় তাহলে নেশা মুক্ত কেন্দ্রগুলির মধ্যে গিয়ে কি ধরনের ওষুধ খাওয়ানো হচ্ছে সে বিষয়টাও খতিয়ে দেখার প্রয়োজন রয়েছে। সুতরাং শুধু মুখে বললে চলবে না, নেশা মুক্ত ত্রিপুরা গড়তে হলে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে হবে বলে আশা ব্যক্ত করেন তিনি। আগরতলা পুর নিগম এলাকায় ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের উচ্ছেদ প্রসঙ্গে বলেন, এ ধরনের কার্যকলাপ দুর্গাপূজার আগে অত্যন্ত অমানবিক। এই ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের জন্য কিভাবে দয়া হলো না, তা নিয়ে পুর নিগমের দিকে প্রশ্ন তুললেন তিনি। কারণ আগরতলা শহর কর্পুরেট শহর। দুর্গাপূজার আগে সকলে এই শহরে ব্যবসা করে পরিবারের চাহিদা মেটাতে চায় বলে দাবি করেন তিনি। দুর্গাপূজার আগে দিকে দিকে চাঁদার জুলুমবাজি চলছে বলে তিনি আক্ষেপ প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, ধর্মনগর থেকে আসার পথে মানুষ চাঁদার ঝুলুম বাজিতে পড়ছে।
এমনকি জনপ্রতিনিধিদের এসকট পর্যন্ত থামিয়ে দিচ্ছে বলে তিনি প্রত্যক্ষ করেন। নিজ অভিজ্ঞতা থেকে তিনি জনগণের জন্য এদিন সরকারের উদ্দেশ্যে বললেন চাঁদার জুলুমবাজি বন্ধ করার জন্য। এবং কতজনকে এখন পর্যন্ত গ্রেফতার করেছে সে বিষয়টিও জানতে চান সরকারি দৃষ্টি আকর্ষণ করে। দাবি করে এ বছর প্রথম এ ধরনের চাঁদার জুলুমবাজি তিনি দেখেছেন। সম্পদ কর নিয়ে তিনি বলেন মেয়র বলছেন সম্পদ বৃদ্ধি হয়নি। কিন্তু আবার মানুষের বাড়িতে যাচ্ছে এভাবে সম্পদ কর। আর এটাই কি স্বচ্ছ ত্রিপুরা তা নিয়ে দ্বিধা প্রকাশ করেন বিরোধী দলনেতা। আরো বলেন আধার কার্ড প্যান কার্ডের সাথে সংযুক্তিকরণ করার বিষয়টি প্রয়োজন হতেই পারে। কিন্তু ১ হাজার টাকা করে মানুষের পকেট কাটা হচ্ছে। রাজ্য সরকার চাইলে দিল্লির কাছে দাবি করতে পারত ১০০০ টাকা করে না নিয়ে কুড়ি থেকে পঞ্চাশ টাকা নিয়ে সংযুক্তিকরণ করার জন্য। এগুলি কিছুই করছে না সরকার বলে জানান তিনি।