স্যন্দন ডিজিটাল ডেস্ক। আগরতলা। ৩ অক্টোবর : বিদ্যুৎ ও পানীয় জলের সমস্যা সহ ব্রীজ নির্মাণের দাবিতে পথ অবরোধ করলো এলাকাবাসী। ঘটনা লংতরাইভ্যালী মহকুমার ছামনু দেবেন্দ্র পাড়ার এলাকায়। অভিযোগ, দীর্ঘদিন ধরেই তীব্র পানীয় জল ও বিদুৎ সমস্যায় জর্জরিত এলাকাবাসী। এছাড়াও মনু নদীতে ব্রীজ না থাকায় যোগাযোগ ব্যবস্থা মুখ থুবড়ে পড়েছে বললেই চলে। আপাতকালীন কোন রোগীকে জরুরি স্বাস্থ্য পরিষেবার জন্য হাসপাতালে নিয়ে যেতে বড় সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়।
বহুবার দপ্তর এবং এলাকার জন্য প্রতিনিধিদের কাছে অভিযোগ করার পরেও কিছুই হয়নি। অবশেষে মঙ্গলবার সকাল ৭ টা থেকে ছামনু বনকুমারী এলাকায় মনু – ছামনু রাস্তাটি অবরোধ করে দেবেন্দ্র পাড়ার সাধারণ মানুষ। তাদের দাবি পানীয় জল, বৈদ্যুতিক সমস্যা সমাধান করতে হবে এবং তাদের এলাকায় যাতায়াতের জন্য মনু নদীতে একটি পাকা ব্রিজ করে দিতে হবে। দীর্ঘক্ষণ পথ অবরোধের পর লংতরাইভ্যালী মহকুমা অফিসের ডিসিএম সহ একাধিক অধিকারিক ঘটনাস্থলে ছুটে যান। অতিসত্বর সমস্যার সমাধান করা হবে এই প্রতিশ্রুতি দিলে অবরোধ তুলে এলাকাবাসী। এলাকাবাসী এইদিন ভোট বয়কটের ডাক দিলেন। তাদের অভিযোগ বহুবার এলাকার বিধায়ক, মন্ত্রী থেকে শুরু করে তথাকথিত মহারাজা প্রদ্যোত কিশোর দেববর্মণের কাছে দাবি গুলি উত্থাপন করা হয়েছে।
কিন্তু সকলে বিষয়টি নিয়ে চরম গাফিলতি করছে। তাই রাস্তায় অবরোধে শামিল হয়েছে সাধারণ এলাকাবাসীর সাথে শাসক দল বিজেপি এবং এডিসির ক্ষমতাসীন দল তিপ্রা মথার সমর্থকরা। তারা জানান অবিলম্বে সমস্যার সমাধান না হলে তারা ভোট বয়কট করবে। এবং আন্দোলন আগামী দিন লাগাতার জারি রাখবে। তবে প্রশাসনে আশ্বাস পেয়ে অবরোধ প্রত্যাহার হলেও গ্রামবাসী তোলা দাবি কতটা বাস্তবায়ন হবে সেটাই এখন বড় বিষয়। কিন্তু এদিন জনজাতি এলাকার মানুষের আন্দোলন এবং তাদের বক্তব্য স্পষ্ট করে দিয়েছে এখন আর তারা আশা রাখতে পারছে না রাজনৈতিক নেতাদের উপর। পাহাড়ে গিয়ে জনজাতি দরদী নেতারা মানুষের জন্য যতটাই মিথ্যা মায়া কান্নাই করুক না কেন, পেছনে যে সবটাই ব্যক্তিগত লাগালাভের চেষ্টা সেটা প্রতারক নেতাদের হাবভাবে বুঝে গেছে জনজাতি মানুষ। কারণ রাজ্য এবং এডিসিতে ক্ষমতায় প্রতিষ্ঠিত হয়ে বিলাসবহুল গাড়ি নিয়ে এবং হাই সিকিউরিটি নিয়ে মানুষের কাছে গিয়ে মিথ্যা বুলি আওড়ানো যে তাদের রক্তে মিশে গেছে সেটা সাধারণ মানুষ ভালো করে বুঝে গেছে। তাই মোহ ভাঙছে এই নেতা ও তাদের দলের প্রতি জনজাতিদের। সুতরাং ভোট বয়কট হলে এর প্রভাব পড়বে ভোট ব্যাঙ্কে। আর হয়তো এটা ধরে রাখতে পারবে না রাজনৈতিক দলের কতিপয় জনজাতি দরদী নেতারা। তাদের ছলচাতুরিতে অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে মানুষ। কারণ জনজাতি অংশের মানুষের মৌলিক চাহিদা মিটিয়ে দেওয়ার কোন নাম গন্ধ নেই।
শুধুমাত্র অযৌক্তিক কিছু মৌলিক দাবি নিয়ে দিল্লির সাথে বন্ধুত্ব বজায় রেখে নিজেদের স্বার্থসিদ্ধির চেষ্টা চলছে। তাদের ডাকা বনধ আবার সমর্থন করেছে রাজ্যের ক্ষমতাসীন দল। অর্থাৎ মানুষকে টুপি পরানোর চেষ্টা করলেও এবার নিজেরা টুপি পড়ার দিন ঘনিয়ে আসছে সেটা ভালো করেই বুঝতে পারছে দুই দলের হাই কমান্ড। এমনটাই মনে করছে তথ্যভিজ্ঞ মহল।