Thursday, October 10, 2024
বাড়িরাজ্যপ্রশাসনের সামনেই দিনভর ভোট জালিয়াতি ২০ বক্সনগর ও ২৩ ধনপুর বিধানসভা কেন্দ্রে

প্রশাসনের সামনেই দিনভর ভোট জালিয়াতি ২০ বক্সনগর ও ২৩ ধনপুর বিধানসভা কেন্দ্রে

স্যন্দন ডিজিটাল ডেস্ক। আগরতলা। ৫ সেপ্টেম্বর : প্রহসন মুক্ত হলো না রাজ্যের দুটি কেন্দ্রের উপনির্বাচন। ভোট শুরু হওয়ার পর সবকিছুই শান্তিপূর্ণ হলেও ধীরে ধীরে বেলা বাড়ার সাথে সাথে শুরু হয় গণদেবতাদের গণতান্ত্রিক অধিকার হরণ। এবং পিটিয়ে ভোটকেন্দ্রে পৌঁছাতে না দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে ভোটারদের পক্ষ থেকে।

পাশাপাশি ভোটারদের মাঝ রাস্তা থেকে বাড়ি ফিরিয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে সেদিন ভোট লুটকারীদের বিরুদ্ধে। সব মিলিয়ে এক প্রকার ভাবে মানুষকে এদিন শান্তিপূর্ণভাবে ভোট প্রদানের সুযোগ দেয় নি বলে অভিযোগ। ভোটের আগের দিন অর্থাৎ সোমবার থেকেই দুটি বিধানসভা কেন্দ্রের স্পর্শকাতর এলাকা গুলিতে এক প্রকার ভাবে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছিল বিরোধী দলের কর্মীরা। জানা যায়, বক্সনগর বিধানসভা কেন্দ্রের উপনির্বাচনের আগের রাতে অর্থাৎ সোমবার রাতে বক্সনগরের কলসিমুড়া এলাকায় আক্রান্ত সিপিআইএম নেতা আবু জাফর। এবং শাসক দলের প্রার্থী তোফাজ্জল হোসেনের উপস্থিতিতে হামলার ঘটনার সংগঠিত হয়েছে বলে অভিযোগ তুলেন আবু জাফর। গুরুতর ভাবে আহত সিপিআইএম নেতা আবু জাফর বর্তমানে জিবি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। আহত আবু জাফর জানান তিনি সোনামুড়ায় গিয়েছিলেন ব্যক্তিগত কাজে।

সেখান থেকে ফেরার সময় কলসিমুড়া এলাকায় ওনার স্কুটি দাড় করায় বক্সনগরের বিজেপি প্রার্থী তফাজ্জল হোসেন ও তার সাঙ্গপাঙ্গরা। বিজেপি প্রার্থী তফাজ্জল হোসেন ও তার সঙ্গীরা লাঠি দিয়ে উনাকে বেধড়ক ভাবে মারধর করে বলে অভিযোগ। রাতেই আহত সিপিআইএম নেতাকে চিকিৎসার জন্য জিবি হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়। এদিকে আরো অভিযোগ, প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী মানিক সরকারের বিধানসভা কেন্দ্রে ভোটারকে রাস্তাতেই পিটিয়ে বাড়ি পাঠানো হয়েছে বলে অভিযোগ। ফলে বহু ভোটার ভোট কেন্দ্রে যেতে পারেনি। আবার বহু ভোটার ভোট কেন্দ্রে আসতে অনিচ্ছা প্রকাশ করেন। অপরদিকে বক্সনগর বিধানসভা কেন্দ্রের অন্তর্গত ছান্দুল লাইলংবাড়ি এলাকার ভোট কেন্দ্রে চরম উত্তেজনা সৃষ্টি হয় এদিন। জানা যায় দুই পক্ষের হাতাহাতিতে পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে উঠে।

শেষ পর্যন্ত আতঙ্কগ্রস্ত হয়ে সাধারণ ভোটাররা বাড়ি ঘরে রওনা দেয়। ভোটাধিকার হরণ করা হয় বক্সনগরে। বৃদ্ধ ভোটারদের ভোট দিলেন বহিরাগত যুবক। বহু কষ্ট করে বাড়ি থেকে বের হয়ে দীর্ঘ লাইনে দাঁড়িয়ে গণদেবতা এই উৎসবে নিজের গণতান্ত্রিক অধিকার প্রয়োগ করার জন্য এগিয়ে এসেছিলেন এই বৃদ্ধ। কিন্তু দেখা গেছে তিনি ভোটের মেশিনের সামনে যেতে বহিরাগত যুবক এসে ইভিএম মেশিন এর বোতাম টিপে দেয়। আধা সামরিক বাহিনী থেকে শুরু করে পিসাইডিং অফিসার ও অন্যান্য ভোট কর্মীদের সামনে এ ধরনের ঘটনা সংঘটিত হলেও সকলে ছিলেন ঠুঁটো জগন্নাথ। কেউ বাধা পর্যন্ত দিতে দেখা যায়নি। এবং এই যুবকদের পরিচয় পর্যন্ত কেউ জানে না। কিন্তু প্রশাসনের প্রশ্রয় ছাড়া এই যুবকরা কিভাবে ভোট কেন্দ্রে প্রবেশ করে এ ধরনের ঘটনা সংঘটিত করেছে সেটাও প্রশ্ন হয়ে দাঁড়িয়েছে। সকাল থেকে এ ধরনের ঘটনা চাক্ষুষ করে এবং আশেপাশে মানুষ জনের কাছ থেকে শুনতে পেরে বেলা বাড়ার সাথে সাথে মানুষ ভোটের উৎসাহ হারিয়ে ফেলে। যেখানে নির্বাচন কমিশনের প্রতিশ্রুতি ছিল সুস্থ ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন সেখানে এ ধরনের ঘটনা কোনোভাবেই কাম্য ছিল না গণদেবতাদের। শাসক দলের কাছে দুটি বিধানসভা কেন্দ্রে অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। কারণ বরাবরই দুটি বিধানসভা কেন্দ্র বামেদের দুর্গ। এখন এই কেন্দ্রে দুটিতে পদ্ম ফুটাতে শাসক দল মরিয়া। এদিকে প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি আশীষ কুমার সাহা জানান, মানুষকে ভয়-ভীতি দেখিয়ে এবং আক্রমণ নামে এনে ভোট প্রহসনে পরিণত করেছে শাসক দল বিজেপি। এবং বিরোধী দলের কর্মীদের ভোট কেন্দ্রে গিয়ে শাসক দলকে ভোট দিতে বাধ্য করে বলে অভিযোগ।

সম্পরকিত প্রবন্ধ

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে
Captcha verification failed!
CAPTCHA user score failed. Please contact us!

সবচেয়ে জনপ্রিয়

সাম্প্রতিক মন্তব্য