Saturday, July 27, 2024
বাড়িরাজ্যউপনির্বাচনেও বিজেপি জনবিচ্ছিন্নতায় ভুগছে : জিতেন্দ্র

উপনির্বাচনেও বিজেপি জনবিচ্ছিন্নতায় ভুগছে : জিতেন্দ্র

স্যন্দন ডিজিটাল ডেস্ক। আগরতলা। ২২ আগস্ট : ধনপুর এবং বক্সনগরে উপনির্বাচন আগামী ৫ সেপ্টেম্বর। এর আগে ভারতীয় জনতা পার্টি জেলা শাসকের অফিস, মহকুমা শাসক অফিস এবং থানা গুলিকে নগ্ন ভাবে গণতন্ত্র জবাইয়ের জন্য ও মানুষের সাংবিধানিক অধিকার হরণ করার জন্য উঠে পড়ে লেগেছে। কারণ ভারতীয় জনতা পার্টি জানে মানুষ তাদের কোন একটি কাজ দেখে প্রথমবার সমর্থন করলেও, দ্বিতীয়বার সমর্থন করে না।

 তাই যেখানে আছে তারা সেখানেই ক্ষমতার অপব্যবহার করছে। নারীদের কর্মসংস্থান ও নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করা সহ রাজ্যবাসীর ৯ দফা দাবি পূরণের লক্ষ্যে সারা ভারত গণতান্ত্রিক নারী সমিতি ত্রিপুরা রাজ্য কমিটির উদ্যোগে প্যারাডাইস চৌমহনি এলাকায় আয়োজিত সভায় এ কথা বলেন সি পি আই এম দলের পরিষদীয় দলনেতা জিতেন্দ্র চৌধুরী। তিনি বক্তব্য রেখে বলেন এই সরকার মাত্র ১৬৮ দিনে হয়েছে। কিন্তু বক্সনগর ও ধনপুরে উপনির্বাচনের জন্য রাজ্যের শাসক দল মানুষকে ডেকে জড়ো করতে পর্যন্ত করতে পাচ্ছে না। এবং এই বিধানসভা কেন্দ্রের অন্তর্গত থানা গুলিকে বেআইনিভাবে কাজে লাগিয়ে বিরোধী দলের কর্মী সমর্থকদের বাড়িঘরে মিথ্যা নোটিশ পাঠানো হচ্ছে। বাড়ি বাড়ি গিয়ে মন্ডলের নেতারা বিরোধী দলের কর্মী সমর্থকদের হুমকি দিয়ে বলছে যদি দুদিনের মধ্যে শাসক দলের মিছিলে না যায় তাহলে কোন কিছু হলে তারা দায়ী থাকবে না। এবং এতে বিরোধী দলের কর্মী সমর্থকরা যদি শাসক দলের মিছিল মিটিংয়ে না যায় তাহলে বাড়িতে পুলিশ পাঠিয়ে অভিযান চালানো হচ্ছে।

 এতে বুঝা যায় শাসক দল কোথায় নেমেছে। এবং তাদের জনবিচ্ছিন্নতা কতটা আতঙ্ক সৃষ্টি করেছে। আর বড় বিষয় হলো এক কেন্দ্রীয় মন্ত্রী মানুষের বাড়ি ঘরে গিয়ে ধমক দিচ্ছেন। এবং আগেভাগেই দলের কর্মীদের পাঠিয়ে দিদি আসছে বলে মানুষকে কাজকর্মে না গিয়ে বাড়িতে থাকতে বাধ্য করছে। তিনি আরো বলেন, বিগত বিধানসভা নির্বাচনে তিন ভাগের একভাগ ভোট পেয়েছে বিজেপি ও আইপিএফটি। কিন্তু এই ৪০ ভাগ ভোট পেয়েও বিজেপি এবং আইপিএফটি জোট সরকার প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পেছনে মূল কারণ হলো বিরোধীদের ভোট ভাগাভাগি। এ সরকার প্রতিষ্ঠিত হওয়ার আগে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল প্রথম মন্ত্রিসভার বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে ২০০ দিনের কাজ এবং মজুরি বৃদ্ধি করে ৩৪০ টাকা। কিন্তু পরবর্তী সময় দেখা গেছে শ্রমিকরা ৫০ দিন কাজ না পেলেও মন্ডলের নেতারা ৯০ দিন থেকে ৯৫ দিনের মজুরি নিয়ে যাচ্ছে। আরো বলেন এই সরকারের আমলে দিন দুপুরে মহিলারা নির্যাতনের শিকার হচ্ছে। থানায় গেলে দারোগা বাবুরা বলেন বিষয়টি মিটমাট করে নেওয়ার জন্য। আর এ ধরনের বিষয় মেনে নিতে পারছে না সাধারণ মানুষ। মহিলাদের স্বনির্ভর করার প্রসঙ্গ টেনে শ্রী চৌধুরী বলেন, বিগত বামফ্রন্ট সরকার মহিলাদের কর্মসংস্থানের জন্য সেল্ফ হেল্প গ্রুপ করেছিল। কিন্তু এই সেলফ হেল্প গ্রুপের বিকাশ করেনি বর্তমান সরকার।

যদি সেল্ফ হেল্প গ্রুপের সঠিকভাবে উন্নয়ন করতে তাহলে আজকে কাজ এবং খাদ্যের অভাব হতো না। এবং গ্রাম শহরের বাজারগুলির ক্ষতশীল অবস্থা হতো না। জিতেন্দ্র চৌধুরী আগরতলা শহরের স্মার্ট সিটিকে কটাক্ষ করে বলেন, আগরতলা শহরকে বলা হচ্ছে স্মার্ট সিটি। স্মার্ট মানে সবদিক থেকে হয় চন্দনের মত উজ্জ্বল এবং মানুষের সহায়ক। হাত পাতলে সবকিছু পাওয়া যাবে। কিন্তু গত সাড়ে পাঁচ বছরে ত্রিপুরা রাজ্য বা আগরতলা শহর কোন ক্ষেত্রে স্মার্ট হতে পারেনি। একটু বৃষ্টি হলেই অটো, রিক্সা চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। দোকানপাট বৃষ্টির জলে ভেসে যায়। এবং যারা সকাল থেকে আগরতলা শহরের বিভিন্ন চৌমুহনিতে ভিড় করে তাদের পেটে হাত দিয়ে বাড়ি চলে যেতে হয়। সবচেয়ে বড় বিষয় হলো গত সাড়ে পাঁচ বছরে কোন ওয়ার্ডে ড্রেইন বা রাস্তা নতুন করে হয়েছে বলে জানা নেই। এদিন সভার আগে নারীদের কর্মসংস্থান ও নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করা সহ রাজ্য বাসীর ৯ দফা দাবি পূরণের লক্ষ্যে সারা ভারত গণতান্ত্রিক নারী সমিতি ত্রিপুরা রাজ্য কমিটির উদ্যোগে রাজধানীর রবীন্দ্র শতবার্ষিকী ভবন প্রাঙ্গণ থেকে এক সু বিশাল মিছিলের আয়োজন করা হয়। উপস্থিত ছিলেন সারা ভারত গণতান্ত্রিক নারী সমিতির সাধারণ সম্পাদিকা মরিয়ম ধাওয়ালে সহ গণতান্ত্রিক নারী সমিতির অন্যান্য নেতৃবৃন্দ। সারা ভারত গণতান্ত্রিক নারী সমিতির সাধারণ সম্পাদিকা মরিয়ম ধাওয়াল জানান, দেশে এবং রাজ্যে একটা ঝুমলা বাজ সরকার চলছে। এই সরকার দেশ থেকে না হটাতে হবে, নাহলে মানুষ তার অধিকার ফিরে পাবে না। তিনি বলেন এই সরকারের আমলে মানুষের রোজগার কমেছে। রেগা কাজ নেই, রান্নার গ্যাসের সিলিন্ডারের মূল্য বেড়েছে এবং মহিলারা সুরক্ষিত নয়। এবং যতগুলি মহিলা সংক্রান্ত ঘটনা রাজ্যে এবং দেশে সংঘটিত হচ্ছে সবগুলিতে দোষীদের প্রশ্রয় দিচ্ছে বিজেপি নেতৃত্বাধীন সরকার। এবং গত কয়েক বছরে এই সরকার দেশের সংবিধানকে পর্যন্ত চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলে দিয়েছে বলে জানান তিনি। সর্বভারতীয় নেত্রী আরো বলেন আরএসএস স্বাধীনতা সংগ্রামের আগে যেমন স্বাধীনতা সংগ্রামের বিরোধিতা করেছিল তেমনি বর্তমানে তাদের নেতৃত্বাধীন সরকার ষড়যন্ত্রে উঠে পড়ে লেগেছে বলে দাবী করেন তিনি। এদিন মিছিলটি শহরের বিভিন্ন পথ পরিক্রমা করে। মিছিলে উপস্থিত ছিলেন সারা ভারত গণতান্ত্রিক নারী সমিতির রাজ্য স্তরের নেতৃত্ব রমা দাস সহ অন্যান্যরা।

সম্পরকিত প্রবন্ধ

সবচেয়ে জনপ্রিয়

সাম্প্রতিক মন্তব্য