আগরতলা, ৭ আগস্ট: প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির ‘ওয়ান ডিস্ট্রিক্ট ওয়ান প্রোডাক্ট’ বা ‘এক জেলা এক পণ্য’ কর্মসূচির সাথে সামঞ্জস্য রেখে স্থানীয় জনপ্রিয় পণ্যগুলির প্রসারের ক্ষেত্রে ব্যাপক গুরুত্ব দিতে হবে। রাজ্যের বিভিন্ন গ্রাম পঞ্চায়েত ও ভিলেজে এমজিএন রেগায় স্থায়ী সম্পদ সৃষ্টি করার পাশাপাশি স্থানীয় জনপ্রিয় পণ্য উৎপাদনে বিশেষ নজর দিতে হবে। রাজ্যের বিভিন্ন জেলায় অধিক জনপ্রিয় ও উৎপাদিত পণ্য চাষের জন্য গুরুত্ব দিতে হবে। সোমবার মহাকরণে ত্রিপুরা স্টেট এমপ্লয়মেন্ট গ্যারান্টি কাউন্সিলের পর্যালোচনা সভায় এবিষয়ে গুরুত্ব তুলে ধরেন মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর ডাঃ মানিক সাহা।
মুখ্যমন্ত্রীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এই সভায় রেগা সহ গ্রামোন্নয়ন দপ্তরের অন্যান্য প্রকল্পের অগ্রগতি ও ভবিষ্যৎ কর্মপরিকল্পনা পর্যালোচনা করা হয়।
এই সভায় মুখ্যমন্ত্রী বলেন, রাজ্য সরকারের সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলিকে সুবিধাভোগী নির্বাচনের ক্ষেত্রে শুধুমাত্র রেগার উপর নির্ভর না করে দপ্তরের নিজস্ব বাজেট থেকেও বিভিন্ন প্রকল্পের সুবিধাভোগী নির্বাচন করার উদ্যোগ নিতে হবে। রেগায় স্থায়ী সম্পদ তৈরী করার ক্ষেত্রে সঠিক সুবিধাভোগী নির্বাচনে অগ্রাধিকার দিতে হবে যাতে সঠিকভাবে রূপায়ণ সম্ভব হয় এবং স্থায়ী হয়। সেই সঙ্গে রেগা সহ বিভিন্ন প্রকল্পের কাজ সময়ের মধ্যে দ্রুত সম্পাদনের জন্য মনিটরিং ব্যবস্থাকে আরও শক্তিশালী করতে হবে।
মুখ্যমন্ত্রী ডা: সাহা বলেন, পঞ্চায়েত স্তর থেকে শুরু করে এডিসি এলাকায় কোনও প্রকল্পের সুবিধাভোগী নির্বাচনে সুনির্দিষ্ট গাইডলাইন অনুসরণ করতে হবে। আর সুবিধাভোগী বাছাইয়ের কাজটিও সময়ের মধ্যেই শেষ করতে হবে।
সভায় গ্রামোন্নয়ন দপ্তরের সচিব ডঃ সন্দীপ আর রাঠোর তথ্য দিয়ে জানান, রাজ্যের ৮টি জেলায় রেগায় মোট ৬ লক্ষ ৭৭ হাজার জবকার্ড হোল্ডার রয়েছেন। গত ২০২২-২৩ অর্থবর্ষে রেগায় ৩ কোটি ২৫ লক্ষ শ্রমদিবসের অনুমোদন পাওয়া গিয়েছিল। কিন্তু ঐ অর্থবর্ষে রাজ্যে ৩ কোটি ৩৪ লক্ষ ৫৫ হাজার শ্রমদিবসের সৃষ্টি হয়েছে। যা সাফল্যের নিরিখে ১০২.৯৫ শতাংশ। ২০২২-২৩ অর্থবর্ষে রেগায় রাজ্য মোট ৯৯৭.০৮ কোটি টাকার ফান্ড পেয়েছিল। যা গত ৫ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ। চলতি অর্থবর্ষে এখন পর্যন্ত ৪১৪.৭৮ কোটি টাকা পাওয়া গেছে। এরমধ্যে ৩৬০.৪৭ কোটি টাকা ব্যয় করা হয়েছে। এছাড়াও চলতি অর্থবর্ষের ৩১ জুলাই পর্যন্ত অনুমোদিত ২ কোটি ৫০ লক্ষ শ্রমদিবসের মধ্যে ১ কোটি ৪৪ লক্ষ ৭৪ হাজার শ্রমদিবস সৃষ্টি করা হয়েছে। এছাড়া ২০২৩-২৪ অর্থবর্ষে রেগা প্রকল্পে মোট ৩ লক্ষ ৫৭ হাজার ৩৪৮টি কাজ হাতে নেওয়া হয়েছে।
সভায় মুখ্যমন্ত্রী আরো বলেন, চলতি অর্থবর্ষে রেগার মাধ্যমে যে সমস্ত কাজ রূপায়ণ করা হবে সেগুলি জেলাশাসকদের নিয়মিত তদারকি করতে হবে। প্ল্যান্টেশনের ক্ষেত্রে রাবার চাষীরা যাতে সঠিক সময়ের মধ্যে রাবার চারা পেতে পারেন সে বিষয়টি নিশ্চিত করতে হবে। এক্ষেত্রে প্রয়োজনে রাবার বোর্ডের সঙ্গে সভা করারও নির্দেশ দেন মুখ্যমন্ত্রী।
এদিন পর্যালোচনা সভায় উপস্থিত ছিলেন সমবায় মন্ত্রী শুক্লাচরণ নোয়াতিয়া, অন্যান্য বিধায়কগণ সহ মুখ্যসচিব জে কে সিনহা, মুখ্যমন্ত্রী দপ্তরের সচিব পি কে চক্রবর্তী, ৮টি জেলার জেলাশাসক ও প্রশাসনের অন্যান্য পদস্থ আধিকারিকগণ।