স্যন্দন ডিজিটাল ডেস্ক। আগরতলা। ৬ জানুয়ারি : রাজ্যের ৫০ শতাংশ পরিবার কৃষির সঙ্গে যুক্ত। এর মধ্যে অনেকেই পশু পালনের সঙ্গে যুক্ত। স্বাভাবিক ভাবেই রাজ্যের ৫০ শতাংশকে মানুষকে কিভাবে পশু পালনের মাধ্যমে সুবিধা দেওয়া যায় ও আর্থিক বিকাশের জন্য দপ্তরের কিছু পরিকাঠামো বৃদ্ধির জন্য পরিকল্পনা হাতে নেওয়া হয়েছে। বৃহস্পতিবার মহাকরণে সাংবাদিক সম্মেলন করে এই কথা জানান মন্ত্রী ভগবান চন্দ্র দাস।
ইতিমধ্যেই বেশ কিছু পরিকল্পনা সম্পন্ন হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী পশু পালনের উপর বিশেষ ভাবে জোর দিয়েছেন। গ্রামীন ও শহর এলাকায় যারা পশু পালন করছেন তাদের সহায়তা করতেই এই উদ্যোগ বলে জানান তিনি। গান্ধী গ্রামের ফার্মকে উন্নত করতে ইতিমধ্যেই অর্থের মঞ্জুরি মিলেছে। ৪ কোটি ৪৩ লক্ষ ৭৪ হাজার টাকার অনুমোদন মিলেছে। শীঘ্রই সিলান্যাস করা হবে। সিপাহীজলা জেলার চড়িলামে ২ কোটি ৭৮ লক্ষ টাকা ব্যয়ে একটি শূকরের ফার্ম করার অর্থ মঞ্জুর হয়েছে। কাজ শুরু হবে কিছু দিনের মধ্যে। ঊনকোটি জেলার চন্দ্রপুরে ২ কোটি টাকা ব্যায়ে একটি হাসের ফার্ম করার জন্য অনুমোদন মিলেছে। এখন আর বাইরে থেকে হাসের শাবক আনতে হবে না বলে জানান মন্ত্রী ভগবান চন্দ্র দাস। খোয়াই, উদয়পুর, বিলোনিয়া, সাব্রুম এবং ধর্মনগরে পশু হাসপাতাল করার জন্য অনুমতি মিলেছে। এর জন্য ৬ কোটি ৫ লক্ষ টাকা বরাদ্দ হয়েছে। ১৩ টি পশু ডিসপেন্সারি নির্মাণ করা হবে। ১১ কোটি টাকা ব্যয় হবে এর নির্মাণের জন্য। ১৭ টি ভেটেইনারি সাব সেন্টার নির্মাণ করা হচ্ছে। ধলাই জেলায় সেল্টার হাউস নির্মাণ করা হবে। এই ধরনের ২৭ টি পরিকল্পনার বাস্তবায়নের জন্য আর্থিক মঞ্জুরি মিলেছে বলে জানান তিনি। এর মধ্যে বেশ কিছুর কাজ সম্পন্ন হয়েছে । অপেক্ষায় রয়েছে উদ্বোধনের । ফার্মারদের প্রশিক্ষনের ব্যবস্থা করা হচ্ছে বলেও জানান তিনি।
রাজ্যের সমস্ত প্রকারের প্রানী সুরক্ষা এবং প্রাণী রোগ সংক্রমণের সমস্যা সমাধানে রাজ্যে সর্ব প্রথম মোবাইল ভেটেরিনারী ইউনিট ও কল সেন্টার প্রকল্প চালু হতে চলেছে। চলতি অর্থ বর্ষে কেন্দ্রীয় সরকার এই প্রকল্পের জন্য প্রাথমিক ভাবে ১ কোটি ৯২ লক্ষ টাকার অনুদান হিসাবে প্রদান করেন বলেও জানান মন্ত্রী ভগবান চন্দ্র দাস। প্রকল্পের প্রাথমিক পর্যায়ে প্রানী স্বাস্থ্য সুরক্ষা প্রদানে ১২ টি অ্যাম্বুলেন্স প্রদান করেন। তাছাড়া এই ১২ টি অ্যাম্বুলেন্স পরিচালনার জন্য প্রয়োজনীয় বাৎসরিক খরচের ৯০ শতাংশ কেন্দ্রীয় সরকার বহন করবে বলে জানান তিনি। বাকী ১০ শতাংশ অর্থ বহন করবে রাজ্য সরকার। এই অ্যাম্বুলেন্স গুলি রাজ্যের বিভিন্ন জেলায় পরিভ্রমণ করবে। প্রতিটি অ্যাম্বুলেন্সে একজন প্রানী চিকিৎসক, একজন প্রানী চিকিৎসা সহায়ক এবং একজন চালক দিন রাত কাজ করবেন। টোল ফ্রি নাম্বারে ফোন করলে গারি পশু পালকদের বাড়িতে পৌঁছে যাবে এবং অসুস্থ প্রানীর চিকিৎসা শুরু হয়ে যাবে বলেও জানান তিনি। আগামী ৩ মাসের মধ্যে এই প্রকল্পটি রাজ্যে বাস্তব রুপ নেবে বলে আশা ব্যক্ত করেন মন্ত্রী ভগবান চন্দ্র দাস।
মন্ত্রী আরও জানান রাজ্যের এস টি এবং এস সি হোস্টেল গুলির অবস্থা বেহাল। তাই এগুলিকে সংস্কার করার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। হোস্টেল গুলিতে কিছু লোক নিয়োগ করা হবে। রাজ্যে ৯৭ টি এস টি হোস্টেল এবং ২৮ টি এস সি হোস্টেল রয়েছে। তাতে কুক, কুক কাম হেল্পার, ওয়াটার কেরিয়ার ও নাইট গার্ড নিয়োগ করা হবে। এস টি ৯৭ টি হোস্টেলের জন্য ২৯ জন কুক, ৩৪ জন কুক কাম হেল্পার, ৪৮ জন ওয়াটার কেরিয়ার এবং ৬৪ জন নাইট গার্ড নিয়োগ করা হবে। অন্যদিকে ২৮ টি এস সি হোস্টেলের জন্য ৫ জন কুক, ১১ জন কুক কাম হেল্পার, ২২ জন ওয়াটার কেরিয়ার ও ২৫ জন নাইট গার্ড নিয়োগ করা হবে। আবাদিকদের ভাল পরিষেবা দিতে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে জানান মন্ত্রী ভগবান চন্দ্র দাস।
তিনি আরও বলেন বিরোধী দলনেতা সাংবাদিক সম্মেলনের মাধ্যমে অসত্য তথ্য তুলে ধরছেন। নিজেদের কলঙ্ক ঢাকার জন্য এই সমস্ত অসত্য তথ্য তুলে ধরছেন বলে জানান মন্ত্রী। অতীতে অসত্য তথ্য তুলে ধরে মিথ্যা প্রতিশ্রুতি দেওয়া হত। তারা সেই পথে বর্তমানেও হাঁটছেন। সংকীর্ণ মানসিকতার পরিচয় দিচ্ছেন তারা। ধবংস করে দেওয়া হয়েছিল পশু পালন দপ্তরকে। এখন মিশন মুডে কাজ হওয়ায় তাদের গাত্রদাহ হচ্ছে বলে জানান মন্ত্রী ভগবান দাস।