স্যন্দন ডিজিটাল ডেস্ক। আগরতলা। ১১ মে : গণবন্টন ব্যবস্থায় ভোক্তাগণ যাতে বরাদ্দকৃত রেশন সামগ্রী নিয়মিত এবং যথাসময়ে পান তা সুনিশ্চিত করাই সরকারের লক্ষ্য। তাই রাজ্যে গণবন্টন ব্যবস্থাকে শক্তিশালী এবং সুদৃঢ় করতে হবে। আজ খাদ্য, জনসংভরণ ও ক্রেতাস্বার্থ বিষয়ক দপ্তরের এক পর্যালোচনা সভায় মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর (ডা.) মানিক সাহা একথা বলেন। সচিবালয়ের ২নং সভাকক্ষে আয়োজিত এই পর্যালোচনা সভায় খাদ্য, জনসংভরণ ও ক্রেতাস্বার্থ বিষয়ক দপ্তরের মন্ত্রী সুশান্ত চৌধুরী, রাজস্ব দপ্তরের প্রধান সচিব পুনিত আগরওয়াল, খাদ্য দপ্তরের সচিব রাভেল হেমেন্দ্র কুমার, মুখ্যমন্ত্রীর সচিব ড. প্রদীপ কুমার চক্রবর্তী, খাদ্য দপ্তরের অধিকর্তা নির্মল অধিকারী ছাড়াও দপ্তরের উচ্চপদস্থ আধিকারিকগণ উপস্থিত ছিলেন।
সভায় মুখ্যমন্ত্রী ফুড ইন্সপেক্টর সহ লিগ্যাল মেট্রোলজির আধিকারিকদের বিভিন্ন বাজারগুলিতে নিয়মিত পরিদর্শনের উপর গুরুত্বারোপ করেন। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, নিয়মিত বাজারগুলি পরিদর্শনের ফলে ক্রেতা বিক্রেতা উভয়েই লাভবান হন। গনবন্টন ব্যবস্থায় কেন্দ্রীয় সরকারের রাজ্যের জন্য বরাদ্দকৃত গমের পরিমান বাড়ানোর বিষয়টিও সভার আলোচনায় প্রাধান্য পায়।
পর্যালোচনা সভায় খাদ্য দপ্তরের সচিব রাভেল হেমেন্দ্র কুমার পাওয়ার পয়েন্ট প্রেজেন্টশনের মাধ্যমে দপ্তরের বিভিন্ন কাজকর্ম এবং প্রস্তাবিত কর্ম পরিকল্পনার তথ্য তুলে ধরেন। তিনি জানান, দপ্তর মূলত ফুড এবং পাবলিক ডিস্ট্রিভিউশন, সিভিল সাপ্লাইস, ভোক্তা আদালত ও ভোক্তা কল্যাণ এবং লিগ্যাল মেট্রোলজি এই চারটি বিভাগ নিয়ে কাজ করে। তিনি জানান, রাজ্যে বর্তমানে ন্যায্য মূল্যের দোকানের সংখ্যা ২০৫০টি। এরমধ্যে মহিলা পরিচালিত ন্যায্য মূল্যের দোকান রয়েছে ২৯০টি। সমবায় পরিচালিত ন্যায্য মূল্য দোকানের সংখ্যা ১৬৭টি। রাজ্যে ৩টি ট্রানজিট খাদ্য গুদাম রয়েছে এ ডি নগর, ধর্মনগর এবং উদয়পুরে। মোট ৭৫ হাজার ৬০০ মেট্রিকটন ক্ষমতা সম্পন্ন রাজ্যে ১৩৭টি খাদ্য গুদাম রয়েছে। আরও ৫টি নতুন খাদ্য গুদাম নির্মাণের পরিকল্পনা রয়েছে দপ্তরের। সচিব জানান, রাজ্যে মোট রেশন কার্ড গ্রহীতা পরিবার রয়েছেন ৯ লক্ষ ৬১ হাজার ৭২৬টি। মোট ভোক্তা রয়েছেন ৩৭ লক্ষ ২৭ হাজার ৬৩৮ জন। রাজ্যে এখন পর্যন্ত ২৯৮৩টি রিয়াং (ব্রু) শরণার্থী পরিবারকে অন্ত্যোদয় রেশন কার্ড দেওয়া হয়েছে। তিনি জানান, মুখ্যমন্ত্রী চা শ্রমিক কল্যাণ প্রকল্পে ১২০৫টি পরিবারকে প্রায়োরিটি হাউজ হোল্ড রেশন কার্ড দেওয়া হয়েছে। রাজ্যে ‘ওয়ান নেশন, ওয়ান রেশন কার্ড’ চালু রয়েছে। এই কর্মসুচিতে রাজ্যের ইটভাট্টা, চা বাগানগুলিতে কর্মরত বিভিন্ন রাজ্যের শ্রমিকরা রাজ্যের রেশনশপগুলি থেকে রেশন সামগ্রী সংগ্রহ করছেন। সচিব জানান, রাজ্যে ৪৮টি ধান ক্রয় কেন্দ্রে সহায়ক মূল্যে ধান ক্রয় করা হচ্ছে। এর ফলে প্রায় ৯০ হাজার কৃষক উপকৃত হয়েছেন। ২০২৩ সালের এপ্রিল মাস থেকে সারা রাজ্যে গণবন্টন ব্যবস্থায় ফর্টিফায়েড রাইস দেওয়া শুরু হয়েছে।
সভায় দপ্তরের প্রস্তাবিত কর্ম পরিকল্পনা তুলে ধরে সচিব রাভেল হেমেন্দ্র কুমার জানান, ৭৬৫টি রেশনশপকে মডেল রেশনশপে রূপান্তরিত করার পরিকল্পনা বর্তমানে প্রক্রিয়াধীন। সমস্ত রেশন কার্ড হোল্ডারদের পিভিসি অর্থাৎ স্মার্ট রেশন কার্ড দেওয়ার পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে। তাছাড়া গনবন্টন ব্যবস্থায় ভুর্তকীতে সরিষার তেল দেওয়ার পরিকল্পনা নিয়েছে দপ্তর। প্রতি তিনমাসে ১ লিটার করে সরিষার তেল দেওয়ার উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। তিনি জানান, রাজ্যে পশ্চিম ত্রিপুরা, গোমতী, ঊনকোটি এবং ধলাই জেলায় ভোক্তা কমিশন রয়েছে। এছাড়াও আরও তিনটি ডিস্ট্রিক কমিশন স্থাপনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। সভায় দপ্তরের সচিব, লিগ্যাল মেট্রোলজির কাজকর্ম নিয়েও বিস্তারিত আলোচনা করেন। তিনি জানান, রাজ্যের ৭টি মহকুমা ব্যতিত প্রত্যেকটি মহকুমায় লিগ্যাল মেট্রোলজির পৃথক অফিস রয়েছে।