Friday, March 29, 2024
বাড়িরাজ্যনির্ভয়া কান্ডের ছায়া ত্রিপুরায়, অভিযুক্তকে পাঁচদিনের পুলিশ রিমান্ডে পাঠায় আদালত

নির্ভয়া কান্ডের ছায়া ত্রিপুরায়, অভিযুক্তকে পাঁচদিনের পুলিশ রিমান্ডে পাঠায় আদালত

স্যন্দন ডিজিটাল ডেস্ক। আগরতলা। ১১ মে : দিল্লির নির্ভয়া কান্ডের ছায়া পড়ল ত্রিপুরা রাজ্যে। পুলিশের ব্যর্থতাকে কাজে লাগিয়ে গাড়িতে ঘন্টার পর ঘন্টা গণধর্ষণের শিকার হলেন কলেজ পড়ুয়া ছাত্রী। এবং এ ঘটনা সংঘটিত হয়েছে আগরতলা শহরে বুকে। গত সোমবার এই ঘটনাটি সংগঠিত হলেও সামনে এসেছে বুধবার রাতে। রাজ্য পুলিশের পক্ষ থেকে নিজেদের মুখ লুকাতে পুলিশ বিষয়টি সংবাদ মাধ্যমের সামনে আনতে চায় নি।

শেষ পর্যন্ত বিষয়টি যখন সংবাদ মাধ্যমের নজরে আসে তখন রাজ্যবাসীর সামনে তুলে ধরা হয়। বর্তমানে রামঠাকুর কলেজের এই ছাত্রী জিবি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। ঘটনার বিবরণে জানা যায় ২২ বছরের কলেজ পড়ুয়া এই ছাত্রীকে সোমবার কলেজ থেকে বাড়ি পৌঁছে দেওয়ার নামে গাড়িতে তুলে নিয়ে যায় গৌতম শর্মা নামে এক যুবক। তারপর রাত সাড়ে এগারোটা পর্যন্ত এ ছাত্রীকে মারধর এবং ট্যাবলেট খাইয়ে অচৈতন্য করে গণধর্ষণ করেছে বলে অভিযোগ। আর বিকাল থেকে পরিবারের লোকজনেরা কলেজ ছাত্রীর কোন খবর না পেয়ে উদ্বিগ্ন হয়ে ওঠে। শেষ পর্যন্ত আমতলী থানার দ্বারস্থ হলেও পুলিশের পক্ষ থেকে কোন সহযোগিতা হাত বাড়িয়ে দেওয়া হয়নি।

তারপর রাত পৌনে বারোটা নাগাদ ছাত্রীর বাড়ির লোকজনদের তার বান্ধবীর ফোন করে জানায় বাইপাস এলাকায় পরিতক্ত অবস্থায় রয়েছে তাদের মেয়ে। খবর পেয়ে ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার করে জিবি হাসপাতাল নিয়ে যাওয়া হয়। মানসিকভাবে বিপর্যস্ত তরুণী জানান কলেজ থেকে তাকে গাড়িতে করে বাড়ি পৌঁছে দেওয়ার নাম করে তুলে নিয়ে যায় গৌতম শর্মা নামে এক যুবক এবং তার সঙ্গী সাথীরা। গাড়িতে তাকে মারধর করে ট্যাবলেট খাইয়ে দেয়। এরপরই গাড়িচালক সহ তিনজন মিলে তার উপর পাশবিক নির্যাতন চালায়। পরবর্তী সময় জিবি হাসপাতাল থেকে শারীরিক নির্যাতনের বিষয়ে জিবি পুলিশ ফাঁড়িতে জানানো হলে তৎক্ষণাৎ খবর পাঠানো হয় আমতলী থানায়। তারপর গা ঝাড়া দিয়ে তদন্তে নামে পুলিশ। পরিবারের পক্ষ থেকে একটি লিখিত অভিযোগ পেয়ে বুধবার রাতে ঘটনায় মূল অভিযুক্ত যুবক গৌতম শর্মাকে মহেশখলা এলাকা থেকে আটক করে।

 আমতলী তথা সদরের ভারপ্রাপ্ত এস ডি পি ও -আশিষ দাশগুপ্ত জানান ঘটনাটি নিয়ে পরিবারের তরফে বুধবার বিকেলে একটি লিখিত অভিযোগ জানানো হয়েছে। পুলিশ তদন্তে নেমে অভিযুক্তের মোবাইলের কল রেকর্ড ক্ষতি দেখে। পাশবিক লালসার শিকার হওয়া ছাত্রীর বাড়ি কাঁঠালতলী এলাকায়। অভিযুক্ত গৌতম শর্মার বাড়ি দাসপাড়া এলাকায়। গৌতম শর্মা আহত ছাত্রীর বড় বোনের প্রেমিক। গোটা ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। এখন দেখার গনধর্ষণ কান্ডে বাকী দুই অভিযুক্তকে কবে জ্বালে তুলতে সক্ষম হয় পুলিশ। এলাকাবাসীর পক্ষ থেকে দাবি উঠেছে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে কঠোর শাস্তির ব্যবস্থা গ্রহণ করার জন্য। গৌতম শর্মাকে বৃহস্পতিবার আদালতে তোলা হলে পাঁচ দিনের পুলিশ রিমান্ডে পাঠানো হয়। আগামী ১৫ মে পুনরায় আদালতে তোলা হবে অভিযুক্ত গৌতম শর্মাকে। এ কথা জানান আইনজীবী বিদ্যুৎ সূত্রধর। এদিকে রাজ্যে মহিলা কমিশনের দায়-দায়িত্ব নিয়ে উঠছে প্রশ্ন। এ ধরনের ঘটনা সভ্য সমাজকে আঙ্গুল তুলে দেখিয়ে দিয়েছে মহিলা কমিশনের নিষ্ক্রিয়তা। শীততাপ কক্ষে বসে শুধু সচেতনতা শিবির করলে এ ধরনের ঘটনার রেশ কোনভাবেই টানতে পারবে না প্রশাসন। জনসম্মুখে এসে যদি পুলিশ এবং মহিলা কমিশন যদি কড়া পদক্ষেপ গ্রহণ করে তাহলেই বহু নারী এ ঘটনা থেকে রেহাই পাবে বলে মনে করছে সচেতন মহল।

সম্পরকিত প্রবন্ধ

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

সবচেয়ে জনপ্রিয়

সাম্প্রতিক মন্তব্য