Sunday, March 23, 2025
বাড়িরাজ্যসরকারি টাকা হাফিজ করে যাওয়ার অভিযোগ ইঞ্জিনিয়ারের বিরুদ্ধে

সরকারি টাকা হাফিজ করে যাওয়ার অভিযোগ ইঞ্জিনিয়ারের বিরুদ্ধে

স্যন্দন ডিজিটাল ডেস্ক। আগরতলা। ১২ এপ্রিল : কৈলাসহরের জুমেরচেগ নিম্ন বুনিয়াদি সরকারি স্কুলের ক্লাস রুম নির্মান না করে এবং কাজে নিয়োজিত শ্রমিকদের টাকা না দিয়ে সরকারি টাকা হাফিজ করে দেয় কাজের দায়িত্বপ্রাপ্ত ইঞ্জিনিয়ার বলে অভিযোগ। এত বড় আর্থিক দুর্নীতি ঘটার পর ঊনকোটি জেলায় বহু জেলাশাসক এসেছেন এবং চলে গিয়েছেন কিন্তু কোনো জেলাশাসকই এই দুর্নীতির বিরুদ্ধে কোনো ধরনের পদক্ষেপ নিতে সাহস করেন নি। অবশেষে আট বছর পর ঊনকোটি জেলার জেলাশাসক অভিযুক্ত ইঞ্জিনিয়ারের বিরুদ্ধে কৈলাসহরের ইরানি থানায় লিখিত মামলা দায়ের করেন। উল্লেখ্য, কৈলাসহরের গৌরনগর ব্লকের অধীনে ইরানি গ্রাম পঞ্চায়েতটি অবস্থিত। এই ইরানি গ্রাম পঞ্চায়েতের দুই নং ওয়ার্ড এলাকায় অবস্থিত জুমেরচেগ নিম্ন বুনিয়াদি বিদ্যালয়টি।

 স্কুলটি নানান সমস্যায় জর্জরিত রয়েছে বলে জানান স্কুলের ভারপ্রাপ্ত ইনচার্জ মো: বাছির আলী। বিশেষ করে স্কুলে ক্লাস রুমের অভাবে ছাত্র ছাত্রীরা সঠিক ভাবে ক্লাস করতে পারছে না বলে বারো এপ্রিল বুধবার দুপুরে নিজ স্কুলে সংবাদ প্রতিনিধিদের মুখোমুখি হয়ে জানান স্কুলের ভারপ্রাপ্ত ইনচার্জ তথা শিক্ষক মো: বাছির আলী। তিনি আরো জানান, প্রথম শ্রেনী থেকে পঞ্চম শ্রেণী পর্যন্ত এই জুমেরচেগ স্কুলের মোট ছাত্র ছাত্রীদের সংখ্যা হলো বিরাশি জন। তিনি সহ স্কুলে মোট তিনজন শিক্ষক রয়েছেন। ২০১৭ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে এই স্কুলে যোগদান করেন। স্কুলে যোগদান করেই তিনি দেখতে পেয়েছিলেন স্কুলে ক্লাস রুমের অভাবের জন্য শিক্ষা দপ্তরের পক্ষ থেকে আরেকটি ক্লাস রুমের বরাদ্দ হয়েছে। কিন্তু, সেই ক্লাস রুমের কুড়ি শতাংশ কাজ করে নির্মান কাজ বন্ধ হয়ে রয়েছে। পরবর্তী সময় খবর নিয়ে জানতে পারেন, ২০১৪-১৫ সালে মোট দশ লক্ষ টাকা বরাদ্দ হয়েছিলো এই ক্লাস রুমের জন্য। ইঞ্জিনিয়ার সুদীপ রায় এই কাজের দায়িত্বে ছিলেন। ইঞ্জিনিয়ার সুদীপ রায় স্থানীয় শ্রমিকদের দিয়ে কাজ করানোর পর শ্রমিকদের ন্যায্য মজুরিও দেননি এবং ক্লাস রুমের নির্মান কার্যও সম্পন্ন করেন নি বলে জানান ভারপ্রাপ্ত ইনচার্জ মো: বাছির আলী।

এখনও প্রায় সময়ই স্থানীয় শ্রমিকরা স্কুলের ইনচার্জের কাছে ইঞ্জিনিয়ার সুদীপ রায়ের ফোন নাম্বার খোঁজ করেন বলে জানান বাছির আলী। অথচ, ক্লাস রুমের অভাবের জন্য স্কুলের ছাত্র ছাত্রীরা প্রতিদিন খুব কষ্ট পাচ্ছে বলে জানান বাছির আলী। এব্যাপারে বারো এপ্রিল বুধবার ইরানি থানার ওসি যতীন্দ্র দাসকে জিজ্ঞাসা করলে তিনি জানান, জুমেরচেগ স্কুলের ক্লাস রুমের নির্মান কার্য সম্পন্ন না করায় ইঞ্জিনিয়ার সুদীপ রায়ের বিরুদ্ধে ঊনকোটি জেলার তৎকালীন জেলাশাসক ডঃ বিশাল কুমার গত বছরের আঠারো মার্চ ইরানি থানায় লিখিত মামলা করেন। মামলাটি ইরানি থানায় রেজিস্ট্রিও করা হয়েছে। মামলায় জেলাশাসক ডঃ বিশাল কুমার ইঞ্জিনিয়ার সুদীপ রায়ের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেন যে, ২০১৪-১৫ সালে দশ লক্ষ টাকা বরাদ্দ ছিলো জুমেরচেগ স্কুলের স্কুল রুম নির্মানের জন্য। কাজের দায়িত্বে ছিলেন ইঞ্জিনিয়ার সুদীপ রায়। কাজ কিছুটা শুরু করার পর ইঞ্জিনিয়ার সুদীপ রায় গৌরনগর ব্লকের সরকারি স্টোর থেকে প্রচুর সিমেন্ট, লোহার রড, স্টিলের দরজা এবং লোহার শীট নিয়েছিলেন। কিন্তু ব্লকের স্টোর থেকে সরকারি জিনিস গুলো বের করে এনে কাজে কিছুই ব্যবহার করা হয় নি। তাছাড়া, এই কাজ দেখিয়ে তিন দফায় প্রায় দুই লক্ষ নগদ টাকা সরকারি কোষাগার থেকে নিয়েছেন বলে লিখিত মামলায় জেলাশাসক ডঃ বিশাল কুমার জানিয়েছেন বলে ইরানি থানার ওসি যতীন্দ্র দাস জানান।

সম্পরকিত প্রবন্ধ

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে
Captcha verification failed!
CAPTCHA user score failed. Please contact us!

সবচেয়ে জনপ্রিয়

সাম্প্রতিক মন্তব্য