স্যন্দন ডিজিটাল ডেস্ক। আগরতলা। ১০ এপ্রিল : বিধানসভা নির্বাচনের ফলাফলকে কেন্দ্র করে ২০১৬ টি সন্ত্রাসের ঘটনা রাজ্যে সংগঠিত হয়েছে। এই ঘটনাগুলো তথ্য তুলে দেওয়া হয় মুখ্যমন্ত্রীর কাছে। এবং ভোট ফলাফলের আগে থেকে ফলাফল ঘোষণার পর পর্যন্ত রাজ্যে পাঁচজন খুন হয়েছে।
এর মধ্যে চারজন সন্ত্রাসের মুখোমুখি হয়ে মৃত্যু হয়েছে। তাই মুখ্যমন্ত্রীকে বলা হয়েছে এ সন্ত্রাসের ঘটনা যাতে অবিলম্বে বন্ধ করতে প্রশাসনকে নিরপেক্ষভাবে কাজে লাগানো হয় এবং সবকটি রাজনৈতিক দল যাতে শান্তিপূর্ণভাবে গণতান্ত্রিক কাজকর্ম করতে পারে তার জন্য সরকারকে দায়িত্ব নিতে। সোমবার মুখ্যমন্ত্রীর সাথে বামফ্রন্টের একটি প্রতিনিধি দল দেখা করার পর সিপিআইএম রাজ্য দপ্তরে আয়োজিত সাংবাদিক সম্মেলনে এ বিষয়ে জানান পুলেটব্যরোর সদস্য নেতা মানিক সরকার। তিনি বলেন, ভোটের ফলাফলের পর অবিজেপি যুব অংশের সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত। উল্লেখযোগ্য বিরোধী কর্মী বাড়িঘর ছাড়া। আবার কেউ কেউ রাজ্য ছাড়া। শুধু তাই নয়, ভোটের ফলাফলের পর মানুষের কর্মসংস্থানের উপর আক্রমণ নামে এনেছে শাসক দলে আশ্রিত দুর্বৃত্তরা। বহু অটো গাড়ি পুড়ে ফেলেছে, রাবার বাগান পুড়ে ফেলেছে। আশা কর্মী, অঙ্গনওয়াড়ি কর্মী এবং পাম্প অপারেটরদের জোর করে স্বাক্ষর নিয়ে স্বেচ্ছায় বাড়ি পাঠিয়ে দিচ্ছে। এমনকি যারা সরকারি কর্মচারী হয়ে বিরোধীদলের সমর্থক রয়েছেন তাদেরও বাড়ি ফিরতে দিচ্ছে না এলাকার শাসক দলের দুর্বৃত্তরা। রবিবার রাতে যোগেন্দ্রনগর এলাকায় এক সরকারি কর্মচারী বাড়িতে এসেছিলেন। সেই কর্মচারীকে বিজেপির দুর্বৃত্তরা দলীয় কার্যালয়ে নিয়ে গিয়ে বেধড়ক মারধর করে। আবার যারা এই ঘটনাগুলোর প্রতিবাদে থানায় গিয়ে মামলা করতে চাইছে পুলিশ আবার সে আক্রান্ত ব্যক্তির বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা গ্রহণ করছে।
আর এইগুলি চলতে থাকলে রাজ্যে মানুষ কিভাবে বসবাস করবে ? মুখ্যমন্ত্রী কে বলা হয়েছে তিনি যেন সাধারণ প্রশাসনকে নিয়ে অতি সত্বর আলোচনায় বসে নিরপেক্ষ ভূমিকা নিতে নির্দেশ দেন। মুখ্যমন্ত্রীকে আরো বলা হয়েছে শান্তি বজায় রাখার দায়িত্ব শাসক দলের রয়েছে। তাই একদিকে দল এবং অপরদিকে প্রশাসনকে যাতে পরিস্থিতি কঠোর ভাবে মোকাবিলা করার ভূমিকা গ্রহণ করতে তিনি নির্দেশ দেন। কারণ গত পাঁচটি বছর যেভাবে ত্রিপুরা রাজ্যে সন্ত্রাস হয়েছে তা যাতে পুনরায় না হতে দেন মুখ্যমন্ত্রী তার জন্য কার্যকরী ভূমিকা নিতে বলা হয়েছে। এর পরিপ্রেক্ষিতে মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন বিষয়টি তিনি বিবেচনা করবেন। মুখ্যমন্ত্রীকে আরও একটি বিষয় জানানো হয়েছে। যারা সন্ত্রাসে সর্বস্বান্ত হয়ে গেছে তাদের যাতে সহযোগিতা করা হয়।
আয়োজিত সাংবাদিক সম্মেলনে পুলেটব্যরোর সদস্য মানিক সরকার দাবি করেন বিশ্রামগঞ্জ, শান্তির বাজার, মানিক ভান্ডার সহ বহু দলীয় কার্যালয় সিপিআইএমের বন্ধ হয়ে আছে। কার্যালয়গুলি খোলার জন্য ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। যাতে এই কার্যালয় গুলির মধ্যে বসে দলীয় কর্মীরা কাজকর্ম করতে পারেন। এদিন শ্রী সরকার বলেন বিজেপির প্রত্যাশা ছিল আরো বেশি আসন পেয়ে তারা জয়ী হবে। কারণ কেন্দ্র এবং রাজ্যে তাদের সরকার রয়েছে। বিগত নির্বাচনগুলির মত বিধানসভা নির্বাচন বগল দাবা করবে। এবং মানি পাওয়ার সঠিকভাবে কাজে লাগাবে। কিন্তু দেখা গেছে অসংখ্য ভোট কমেছে তাদের। মাত্র ৩৯ শতাংশ ভোট পেয়ে সরকার প্রতিষ্ঠিত করতে হয়েছে। তাই তারা এই আক্রমন নামিয়ে আনছে বলে অভিমত ব্যক্ত করেন পুলেটব্যরোর সদস্য মানিক সরকার। আয়োজিত সাংবাদিক সম্মেলনে এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন প্রতিনিধি দলের সকলে।