Friday, March 29, 2024
বাড়িরাজ্যফলাফলের রাতে বিক্ষিপ্ত সন্ত্রাসের সাক্ষী রাজ্যবাসী

ফলাফলের রাতে বিক্ষিপ্ত সন্ত্রাসের সাক্ষী রাজ্যবাসী

স্যন্দন ডিজিটাল ডেস্ক। আগরতলা। ৩ মার্চ : চমকহীন জয়ের পরেও রাতভর সন্ত্রাস বিজেপির। পাল্লা দিয়ে সন্ত্রাসে লিপ্ত হয়েছে শূন্য থেকে উত্থান মথা। ফলাফলের রাত যেন বিভীষিকাময় হয়ে উঠেছে একাংশ সাধারণ মানুষের কাছে। বৃহস্পতিবার ফলাফলের চিত্র পরিষ্কার হতে সন্ধ্যা ঘনিয়েছে। সন্ধ্যা থেকে শুরু হয় রাতভর সন্ত্রাস। বিরোধী দলের শ্রমিক সংগঠনের অফিসে এবং বাড়িতে প্রবেশ করে মারধর পুরুষ মহিলা থেকে শুরু করে সকলকে। রেহাই পাইনি বাড়ির ছেলে মেয়েরাও।

ভাঙচুর ও অগ্নি সংযোগ করা হয় বাড়িঘর। ঘটনার বিবরণে জানা যায়, ফলাফল ঘোষণা হওয়ার পর ত্রিপুরা মোটর শ্রমিক ইউনিয়ন অফিসটি ভেঙ্গে গুড়িয়ে দিল দুর্বৃত্তরা। ঘটনার তীব্র প্রতিবাদ জানান সংগঠনের নেতারা। তা যেন রাতের বেলা এই ঘটনা সংঘটিত করেছে। ঘটনাস্থলে ছুটে এসেছে পুলিশ। শুক্রবার সকালে তারা কার্যালয়ে এসে এই বিষয়টি প্রত্যক্ষ করেছেন। ভাঙচুর করে চেয়ার টেবিল সহ বিভিন্ন সামগ্রী। লুট করে নিয়ে যায় কার্যালয়ে টিভি সহ বিভিন্ন সামগ্রী। যারা এই ঘটনা সংঘটিত করেছে তাদের যাতে কঠোর শাস্তি হয় এর দাবি জানান তারা। এদিন রাতের বেলা বিশালগড় অরবিন্দ নগরে দুষ্কৃতিকারীরা বিরোধী দলের কর্মী সমর্থকদের বাড়িঘরে হামলা চালায়। এবং ভাঙচুর করে। পুড়িয়ে দেয় গবাদি পশু ঘর। কাশেম মিঞার বাড়িতে প্রবেশ করে গরু ঘরে আগুন লাগিয়ে দেয় দুই ব্যক্তি। পরবর্তী সময়ে তারা ঘটনার স্থল থেকে পালিয়ে যাওয়ার সময় দেখতে পায় বাড়ির মালিক কাশেম মিঞার স্ত্রী যামুনা খাতুন।

 যামুনা খাতুনের চিৎকার শুনে ছুটে আসে আশপাশে এলাকায় লোকজন। খবর দেওয়া হয় দমকল কর্মীদের। দমকল কর্মীরা ঘটনাস্থলে ছুটে আসতে দীর্ঘ এক ঘন্টা কাটিয়ে ফেলে বলে অভিযোগ এলাকাবাসীর। কিন্তু গরু ঘর শেষ রক্ষার হয়নি। এদিকে খয়েরপুর মেখলিপাড়া বাম কর্মী শংকর দেবনাথের বাড়িতে আগুন লাগিয়ে দেয় বলে অভিযোগ শাসক দল বিজেপির বিরুদ্ধে। দমকল কর্মীরা ঘটনাস্থলে ছুটে এসে আগুন নিয়ন্ত্রণ আনে। কিন্তু অগ্নিকাণ্ডে ভুষ্মীভূত হয়ে যায় বসত ঘর। সন্ধ্যার নাগাদ চড়িলাম আড়ালিয়া এলাকায় সুদীপ্তা সরকার নামে এক মহিলার বাড়িতে প্রবেশ করে দুর্বৃত্তরা বাড়িঘর ভাঙচুর করে। বাধা দিতে এগিয়ে আসলে মারধর করা হয় সুদীপ্তা সরকার এবং তার ছেলে মেয়ে সকলকে। এবং এই ঘটনার সাথে যারা জড়িত তারা হলো আক্রান্ত সুদীপ্তা সরকারের দেবর সুভাষ সরকার এবং সুভাষ সরকারের সাঙ্গোপাঙ্গদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন রাজেশ সাহা, দিলীপ সাহা, সুভাষ সরকার সহ আরো অনেকে। পরবর্তী সময়ে খবর পেয়ে দমকল কর্মীরা ঘটনাস্থলে গিয়ে আহত পরিবারের লোকজনদের উদ্ধার করে হাসপাতাল নিয়ে আসে। এদিকে বিশালগড় বাইপাস সংলগ্ন এলাকায় মথার কর্মীদের দ্বারা আক্রান্ত হয়েছেন স্বপন দেবনাথ নামে নাড়াওড়ার বাসিন্দা। পরবর্তী সময় স্বপন দেবনাথকে উদ্ধার করে স্থানীয়রা নিয়ে যায় মহকুমা হাসপাতালে। তার পরিবারের লোকজনেরা জানান এদিন মথার দুর্বৃত্তরা এই ঘটনা সংঘটিত করেছে। এদিকে সন্ত্রাস থেকে রক্ষা পায়নি আগরতলা গোর্খাবস্তি এলাকার জয়া দেব। জয়া দেব নামে বাম মহিলা কর্মীর বাড়ি ঘর ভাঙচুর করে। সিপিআইএম করে বলে এই ঘটনা সংগঠিত করেছে দুর্বৃত্তরা বলে অভিযোগ তুলেন জয়া দেবের। তবে শাসক বিরোধী সব রাজনৈতিক দলের বিরুদ্ধে এ ধরনের অভিযোগ উঠতেই সৃষ্টি হচ্ছে নানা প্রশ্ন। যারা ফলাফলের আগে দফায় দফায় বৈঠক করে সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে পড়েছিল রাজ্যের শান্তি সম্প্রীতি বজায় রাখার জন্য তাদের দলের কর্মীরাই এখন মানুষের রাতের ঘুম কেড়ে নিচ্ছে। নষ্ট করে দিচ্ছে মানুষের সম্পত্তি। এর জবাব কি দিতে পারবে রাজ্যের রাজনৈতিক দলগুলোর শীর্ষ নেতৃত্ব।

সম্পরকিত প্রবন্ধ

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

সবচেয়ে জনপ্রিয়

সাম্প্রতিক মন্তব্য