স্যন্দন ডিজিটাল ডেস্ক। আগরতলা। ১৫ ডিসেম্বর : রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংক বেসরকারীকরণের প্রতিবাদে ও ব্যাংকিং আইন সংশোধনের প্রস্তাবনার বিরুদ্ধে ইউনাইটেড ফোরাম অফ ব্যাংক ইউনিয়নস্ -এর পক্ষ থেকে আগামী ১৬ এবং ১৭ ডিসেম্বর সারা ভারত ব্যাংক ধর্মঘট ডাকা হয়। সারা দেশের মতো ত্রিপুরা রাজ্যেও ব্যাঙ্ক ধর্মঘট চলবে ইউনাইটেড ফোরাম অফ ব্যাংক ইউনিয়নস্ -এর রাজ্য কমিটির পক্ষ থেকে।
বুধবার আগরতলা প্রেসক্লাবে সাংবাদিক সম্মেলন করে এ কথা জানান ইউনাইটেড ফোরাম অফ ব্যাংক ইউনিয়নস্ -এর সঞ্জয় দত্ত। তিনি বলেন কেন্দ্রীয় সরকার বিগত বছর দুটি ব্যাংক বেসরকারিকরণ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এবার পার্লামেন্টের শীতকালীন অধিবেশনে ব্যাংকিং রেগুলেশন অ্যাক্ট আমেন্ডমেন্ট বিল ২০২১ আনার জন্য প্রচেষ্টা করছে। সরকার আগেও ব্যাঙ্কগুলির মূলধন বৃদ্ধি লক্ষ্যে মার্জার করা হচ্ছে বলে মিথ্যা প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল। তখন ব্যাংক কর্মীরা বুঝেছিল বিষয়টি সম্পূর্ণ মিথ্যা কথা বলে বেসরকারিকরণের দিকে এগুচ্ছে সরকার। ১৯৬৯ সালের পর থেকে ১ লক্ষ ১৭ হাজার ব্যাংক শাখা দেশে হয়েছে। রাষ্ট্রায়ত্ব ব্যাংকগুলির আমানত ১ লক্ষ ৫৭ হাজার কোটি টাকা। ঋণদান ১ লক্ষ ১৭ হাজার কোটি টাকা। তিনি আরো বলেন বেসরকারি ব্যাংকের শাখাগুলি শুধু শহরাঞ্চলে রয়েছে। কিন্তু রাষ্ট্রায়ত্ব ব্যাংকগুলির শাখা রাজ্যগুলির প্রত্যন্ত এলাকায় পরিষেবা প্রদান করছে। দেশে শিল্প বিপ্লব ও কৃষি বিপ্লবে রাষ্ট্রায়ত্ব ব্যাঙ্কগুলির সুদূর প্রসারী ভূমিকা রয়েছে।
এবং সবগুলি ব্যাংক বর্তমানে লাভে পরিচালিত হচ্ছে। ৮৩ শতাংশ অনাদায়ী ঋণ ব্যাঙ্কগুলি কাছ থেকে পুঁজিপতিরা গ্রহণ করে আছে। বাকি ১৭ শতাংশ ঋণ সাধারণ মানুষের। পুঁজিপতিদের কাছ থেকে ঋণ আনার কোনো উদ্যোগ নেই সরকারের। যদি পুঁজিপতিদের কাছ থেকে ঋণ সংগ্রহ করা হতো তাহলে ব্যাঙ্কগুলি মূলধন আরো বেশি বৃদ্ধি পেত। কিন্তু সরকার পুঁজিপতিদের কাছ থেকে ঋণ গ্রহণ না করে যে বিপথে পরিচালিত করার সিদ্ধান্ত নিচ্ছে তাতে আপামর জনগণের ব্যাংকে জমা রাখা অর্থ রাশির কোন নিশ্চয়তা থাকবে না বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেন তিনি। এবং আরো বলেন যেহেতু ব্যাংকগুলি রাষ্ট্রের নিয়ন্ত্রণে থেকেই ঋণ সংগ্রহ করতে পারছে না তাহলে মালিকানার হাতে চলে গেলে ঋণ আরো বেশি সংগ্রহ করা যাবে না বলে জানান তিনি। গ্রাহকদের বড় ক্ষতি হবে। সরকারের কুমতলব রুখতে দুদিনের ধর্মঘট ডাকা হয়েছে। ব্যাংক বাঁচলে দেশ বাঁচবে, উন্নয়ন হবে দেশের। এদিন আয়োজিত সাংবাদিক সম্মেলনে আরো উপস্থিত ছিলেন সংগঠনের সুমিত চৌধুরী এবং রাহুল চক্রবর্তী। পাশাপাশি এদিন রবীন্দ্র শতবার্ষিকী ভবনের সামনে থেকে সন্ধ্যায় ব্যাংক বাঁচাও দেশ বাঁচাও স্লোগান তুলে ইউনাইটেড ফোরাম অফ ব্যাংক ইউনিয়নস্ -এর পক্ষ থেকে একটি মিছিল সংঘটিত হয়। মিছিলটি শহরের বিভিন্ন পথ পরিক্রমা করে।