স্যন্দন ডিজিটাল ডেস্ক। আগরতলা। ২১ জানুয়ারি : ১৮ জানুয়ারি তিপ্রা মথার কর্মী খুনের ঘটনার সাথে জড়িত সমস্ত অভিযুক্তদের গ্রেপ্তারের দাবিতে আগামী ২৩ শে জানুয়ারি কমলপুর মহকুমা ১২ ঘন্টার বনধের ডাক দিল তিপ্রা মথা। শনিবার কমলপুর প্রেস ক্লাবে আয়োজিত এক সাংবাদিক সম্মেলনে তিপ্রা মথার নেতৃত্ব মেরি দেববর্মা এ বিষয়ে জানান।
তিনি বলেন, তিপ্রা মথার কর্মী প্রণজিৎ দেববর্মার মৃত্যুর পর কুলাই হাসপাতাল থেকে মৃতদেহ যখন কমলপুর হয়ে মরাছড়া নিয়ে যাওয়ার জন্য শোক মিছিলে আয়োজন করা হয়েছিল তখন প্রশাসনিক কোন সহযোগিতা না করে বাধা দেওয়া হয়েছে। এবং তিপ্রা ওমেন ফেডারেশনের বহু কর্মীরা প্রশাসনিক কর্মীদের সাথে ধস্তাধস্তিতে আঘাতপ্রাপ্ত হয়েছেন বলে অভিযোগ তোলেন তারা। এমনকি আজ মহকুমা কোন মৌন মিছিল করতে দেওয়া হয় নি। তাই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে আগামী ২৩ জানুয়ারি কমলপুরে মহকুমা সুরমা বিধানসভা কেন্দ্র এবং কমলপুর বিধানসভা কেন্দ্র ১২ ঘণ্টার বনধ পালন করা হবে। যেকোন প্রকারে এ বনধ করা হবে। প্রশাসনের কাছে দাবি জানানো হবে যাতে এই ঘটনার সাথে জড়িত বাকি অভিযুক্তরাও গ্রেফতার হয়। উল্লেখ্য, কমলপুর থানার অন্তর্গত বামনছড়া গ্রামে মাঝ রাস্তায় গাড়ি থেকে নামিয়ে ধারালো দা দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করা হয় প্রনজিৎ নমঃশূদ্রকে। প্রনজিৎ নমঃশূদ্র সুরমা বিধানসভা কেন্দ্রে একটা সময় সিপিআইএম নেতা হিসাবে পরিচিত ছিল। সাত মাস পূর্বে সে তিপ্রা মথা দলে যোগদান করে। তিপ্রা মথা দলের হয়ে বিধানসভা এলাকায় কাজও শুরু করে সে। বুধবার রাত নয়টা নাগাদ প্রনজিৎ নমঃশূদ্র তার নিজের মারুতি ভ্যান গাড়ীটি নিয়ে দুর্গা চৌমুহনী বাজার থেকে বামনছড়া পঞ্চায়েতের যোগেশ নমঃ শুদ্র পাড়ায় যাচ্ছিল।
বামনছড়া এলাকায় আসার পর ৭ থেকে ৮ জনের একটি দুষ্কৃতি দল তার গাড়ি দার করায়। এবং গাড়িতে ভাংচুর করে। পরবর্তী সময় দুষ্কৃতীরা প্রনজিৎ-কে দা দিয়ে কুপিয়ে গুরুতর ভাবে আহত করে রাস্তায় ফেলে রেখে চলে যায়। কমলপুর থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে আহত প্রনজিৎ-কে উদ্ধার করে কমলপুর বিমল সিংহ মেমোরিয়াল হাসপাতালে নিয়ে না গিয়ে কুলাই জেলা হাসপাতালের উদ্দেশ্যে নিয়ে যায়। প্রায় দুই ঘন্টা পর কুলাই জেলা হাসপাতাল থেকে প্রনজিৎ-কে পুনঃরায় কমলপুর বিমল সিংহ মেমোরিয়াল হাসপাতালে নিয়ে যায়।
তারপর প্রনজিৎ-এর দেহ নিয়ে চলে পুলিশ ও চিকিৎসকদের মধ্যে নাটক। শেষ পর্যন্ত কমলপুর মেমোরিয়াল হাসপাতালের চিকিৎসক প্রনজিৎ নমঃশূদ্রকে মৃত বলে ঘোষণা করে দেয়। চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করার পর তার পরিবারের লোকজন হাসপাতালে কান্নায় ভেঙ্গে পড়ে। মৃত প্রনজিৎ নমঃশূদ্রর ভাইয়ের ছেলে বামন ছড়া এলাকার বেশ কয়েকজনের নাম উল্লেখ করে জানান তারাই প্রনজিৎ নমঃশূদ্রকে কুপিয়ে হত্যা করেছে। এদিন আয়োজিত সাংবাদিক সম্মেলনে এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন কুমার হালাম, মেরি দেব্বর্মা, তপন দেব্বর্মা, ও শ্যামল সরকার।