Friday, March 29, 2024
বাড়িরাজ্যবিভ্রান্ত হয়ে ভোট দিলে দায়িত্বশীল নাগরিকের পরিচয় আর থাকবে না : মানিক...

বিভ্রান্ত হয়ে ভোট দিলে দায়িত্বশীল নাগরিকের পরিচয় আর থাকবে না : মানিক সরকার

স্যন্দন ডিজিটাল ডেস্ক। আগরতলা। ২০ জানুয়ারি : খবরের কাগজ এবং ইলেকট্রনিক্স মিডিয়া হলো গণতন্ত্রের অন্যতম স্তম্ভ। এগুলি সমাজের চোখ এবং কানের মত। কিন্তু সংবাদ মাধ্যমগুলি বিজেপি সরকার ত্রিপুরায় প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর থেকে সরকারের বিপক্ষে কোন কিছু প্রকাশিত করতে পারছে না। সরকারের ভালো দিক গুলি শুধুমাত্র খবরের কাগজে এবং টিভি চ্যানেলে প্রকাশিত করতে দেওয়া হচ্ছে।

সরকারের ভুল, ত্রুটিগুলি খবর এর প্রকাশ করা যাচ্ছে না। তারপরেও যখন কোন সংবাদপত্রের মালিক সত্যি খবর প্রকাশিত করার চেষ্টা করছে তখন তারা আক্রান্ত হচ্ছে, তাদের অফিস আক্রান্ত হচ্ছে, সাংবাদিক আক্রান্ত হচ্ছে। এবং এই সরকারের আমলে এখন পর্যন্ত ৪৮ জন সাংবাদিক আক্রান্ত হয়েছেন। শুক্রবার ঋষ্যমুখ বিধানসভার অন্তর্গত মতাই এক সমাবেশে একথা বলেন বিরোধী দলনেতা মানিক সরকার। তিনি বলেন, বহু পত্রিকা বিভিন্ন এলাকায় পৌঁছাচ্ছে না। তারপরও যদি খবরের কাগজ বাড়িতে পৌঁছে দেওয়ার চেষ্টা করা হয় তাহলে হকারকে আক্রান্ত করার চেষ্টা করছে। এবং যদি সেই খবরে কাগজ করার চেষ্টা করে তাহলে আক্রান্ত হচ্ছে সেই পাঠকের পরিবারকে। শুধু তাই নয়, কয়েকটি পত্রিকা এবং চ্যানেল বাদ দিলে বহু পত্রিকা এবং চ্যানেল রয়েছে যারা সরকারি বিজ্ঞাপন পর্যন্ত পাচ্ছে না। এই পরিস্থিতির পরিবর্তন করতে হবে আপামোর জনগণকে।

 এবং এই জঙ্গলের শাসন থেকে সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতা পুনঃস্থাপন করতে হবে বলে জানান বিরোধী দলনেতা মানিক সরকার। তিনি আরো বলেন, নারীরা আক্রান্ত হচ্ছে। পরবর্তী সময় আক্রান্ত মহিলা থানায় মামলা দায়ের করতে গেলে দেখা যাচ্ছে দারোগা বাবুর সাথে অভিযুক্ত ব্যক্তি বসে চা খাচ্ছেন। এখন পর্যন্ত ২৫ জন সিপিআইএম কর্মী খুন হয়েছে। পুলিশ কাউকে গ্রেপ্তার করে নি। বিরোধী দলগুলি কর্মসূচি করতে পারছে না, আর বিজেপি যখন খুশি তখন মিছিল মিটিং কর্মসূচি পালন করছে। তাদের বিরুদ্ধে পুলিশ কিছু করছে না। আর এই শাসনকে বিরোধীরা বলছে আইন ভেঙে পড়েছে, অরাজকতা। পাঁচ বছর অতিক্রান্ত হয়ে গেছে, যেখানে সেখানে গিয়ে একটা টিপ দিয়ে ভোট দিয়ে আসলে চলবে না। তাহলে দায়িত্বশীল নাগরিকের পরিচয় আর থাকবে না। ভেবে চিন্তে ভোট দিতে হবে বলে জানান তিনি। আরো অভিযোগ তোলেন অনাহারে মানুষ ভুগছে।

কাজ নেই, খাবার নেই মানুষের। শুধু তাই নয় এই সরকারের আমলে বেকাররা সবচেয়ে বেশি ঠকছে। সরকারি কর্মচারীদের ৩৮ শতাংশ মহার্ঘ ভাতা পাওয়ার কথা থাকলে ২০ শতাংশ ভাতা। গ্রাম উন্নয়ন দপ্তর, শিক্ষা দপ্তর, বিদ্যুৎ নিগম সবকিছুতে বদলির নামে চলছে ব্যবসা। অর্থাৎ সরকার কর্মচারীদের এমনও জায়গায় বদলি করছে যার ফলে সেখানে থেকে বদলি হতে দাবি করলে তখন তার কাছ থেকে অর্থ নেওয়া হচ্ছে। শুধু তাই নয় দোকানপাট, ঠিকাদার সকলের কাছ থেকে অর্থ নিচ্ছে মন্ডলের নেতারাও। কেউ এর প্রতিবাদ জানাতে পারছে না। একটা লুটের রাজত্ব চলছে। এ পরিস্থিতি পরিবর্তনের জন্য ভোট দিয়ে সরকার পরিবর্তনের দাবি করলেন তিনি। তিনি বলেন এ সরকার পরিবর্তন করতে প্রথম থেকেই ফ্যাসিস্ট সুলভ আক্রমণের বিরুদ্ধে লড়তে শুরু করেছে মার্কসবাদী কমিউনিস্ট। কিন্তু বারবারই আক্রান্তের শিকার হয়েছে। তাই আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনে নতুন কাউকে দেখে বিভ্রান্ত হয়ে ভোট দিলে চলবে না। পরিস্থিতি পরিবর্তন করতে হবে। যদি এই সরকার পুনরায় ক্ষমতায় আসতে পারে তাহলে বিজেপি ধরে নেবে রাজ্যের মানুষ তাদের এই শাসন ব্যবস্থা মেনে নিয়েছে। তাই বামফ্রন্ট সরকার ছাড়া আর কেউ বিকল্প নেই বলে জানান বিরোধী দলনেতা। আয়োজিত সভার আগে এলাকায় একটি মিছিল সংঘটিত হয়। এদিন বিরোধী দলনেতা ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন বিধায়ক সুধন দাস সহ এলাকার সিপিআইএম নেতৃত্ব।

সম্পরকিত প্রবন্ধ

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

সবচেয়ে জনপ্রিয়

সাম্প্রতিক মন্তব্য