স্যন্দন ডিজিটাল ডেস্ক। আগরতলা। ১৩ জানুয়ারি : আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনে জনজাতিদের স্বার্থে জোট করার বার্তার ইঙ্গিত শাসক দলের জোট সঙ্গী আই পি এফ টি – কে চিঠি দিল তিপ্রা মথা দলের চেয়ারম্যান প্রদ্যুৎ কিশোর দেববর্মন। মন্ত্রী তথা আই পি এফ টি -র কার্যকরী সভাপতি প্রেম কুমার রিয়াং -এর উদ্দেশ্যে এই চিঠি প্রেরণ করেন তিনি। বিধানসভা নির্বাচনের আগে রাজ্য রাজনীতিতে জোটের নয়া সমীকরণ উঠে আসছে। উল্লেখ্য, ২০১৮ সাল থেকে বিজেপির শরিক দল হিসেবে সরকারের রয়েছে আইপিএফটি। চলতি বছর সরকারের পাঁচ বছর পূরণ হয়ে ভোটের ঘন্টা বাঁজতে চলেছে।
কিন্তু তারই মধ্যে দেখা গেল বছরের প্রথম দিন প্রয়াত হয়েছেন মন্ত্রী নরেন্দ্র চন্দ্র দেববর্মা। তিনি আইপিএফটি দলের সুপ্রিমো ছিলেন। কিন্তু তাঁর প্রয়ানে দলের অস্তিত্ব প্রায় হারানোর পথে। এরই মধ্যে দেখা গেল নয়া চিত্র। তিপ্রা মথার সুপ্রিমো প্রদ্যোত কিশোর দেববর্মন আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনের আগে আইপিএফটির কার্যকারী সভাপতি প্রেম কুমার রিয়াং -এর উদ্দেশ্যে চিঠি দিয়ে গ্রেটার তিপরাল্যান্ড এবং তিপরাল্যান্ডের দাবির জন্য এক মঞ্চে আসার আহ্বান জানান। এদিন প্রদ্যুৎ কিশোর দেববর্মণ চিঠিতে প্রেম কুমার রিয়াং -এর উদ্দেশ্যে চিঠিতে লেখেন, আই পি এফ টি ২০০৯ সাল থেকে এখনও পর্যন্ত ভারতের সংবিধানের ২, ৩, এবং ৪ অনুচ্ছেদের অধীনে টিটিএএডিসি অঞ্চলগুলিকে তিপরাল্যান্ড করার জন্য গণতান্ত্রিকভাবে প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। তিপ্রাহা আদিবাসী প্রগতিশীল আঞ্চলিক জোট ভারতের সংবিধানের ধারা ২, ৩, এবং ৪ -এর অধীনে ‘গ্রেটার তিপ্রাল্যান্ড’ রাজ্যের দাবিও করছে। তিপ্রাসার বেঁচে থাকা এবং অস্তিত্ব রক্ষার জন্য এ দাবি করা হচ্ছে। তাই সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দেওয়া উচিত বলে চিঠিতে প্রকাশ করেন।
চিঠিতে তিনি উল্লেখ করেন গ্রেটার তিপরাল্যান্ড এবং তিপরাল্যান্ডের দাবির মধ্যে তেমন কোন তফাৎ নেই। সুতরাং তিপ্রাসারা স্থায়ী সাংবিধানিক সমাধান চায়। তিনি চিঠিতে আরও উল্লেখ করেন, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের দ্বারা লোভনীয় পদ বা অর্থের প্রতি আকৃষ্ট না হওয়া জন্য। তাহলে তিপ্রাসাদের ভবিষ্যৎ আরো বিলুপ্ত হবে না। কিন্তু এর দ্বারা বোঝা যাচ্ছে এবার আঞ্চলিক দল গুলি জোট হওয়ার জন্য মরিয়া প্রচেষ্টায় রয়েছে। তিপ্রা মথার সঙ্গে বিজেপি বা কংগ্রেস ও সিপিআইএম জোটে আসবে কিনা সেটা নিয়েও সৃষ্টি হয়েছে গুঞ্জন। কিন্তু এদিনের চিঠিতে স্পষ্ট হয়ে গেছে দাবি নিয়ে পিছু হাঁটছে না প্রদ্যুৎ কিশোর দেববর্মন। তবে এই জট কতটা কাটবে আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনের আগে সেটা বলা মুশকিল। যদিও সবকটি রাজনীতির দল এবার পাশে চাইছে মথাকে। কারণ পাহাড় দিয়ে সরকার প্রতিষ্ঠার স্বপ্ন দেখে সবকটি রাজনৈতিক দল। এবং বামেদের ভাষায় দীর্ঘ ২৫ বছর ছিল পাহাড় যার সরকার তার। বিশেষ করে বামফ্রন্টের সরকারের আমলে পাহাড়ের কুড়িটি আসন নিশ্চিত করার পর তাদের সংখ্যাগরিষ্ঠ জন্য আসন গোনা শুরু হতো। ২০১৮ সালেও দেখা গেছে রাজ্যে বিজেপি আইপিএফটি দলের কাঁধে ভর করে আসন সংখ্যা বাড়াতে। কিন্তু চলতি বছর নির্বাচন কি সেদিকে এগুবে নাকি আঞ্চলিক দলগুলি ঐক্যবদ্ধ ভাবে জাতীয় দলগুলি সাথে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবে। রাজনৈতিক পরিমন্ডলে এ ধরনের একাধিক প্রশ্ন এবার ঘুরপাক খাচ্ছে।