স্যন্দন ডিজিটাল ডেস্ক। আগরতলা। ১৯ ডিসেম্বর। রবিবার প্রধানমন্ত্রী রাজ্য সফরে আসার আগে মানুষ অপেক্ষায় ছিল তিনি রাজ্যের মানুষের অসহণীয় অবস্থা থেকে পরিত্রাণ দেওয়ার জন্য আশ্বাস দেবেন। কিন্তু দেখা গেছে তিনি সরকারি কোষাগারের কোটি কোটি টাকা ব্যয় করে স্বামী বিবেকানন্দ ময়দানে এসে জনসভায় অংশ নিয়ে এক প্রকার ভাবে নির্বাচনী সভা সেরে গেছেন। কিন্তু রাজ্যবাসীর কল্যাণে কোন কিছুই ঘোষণা করতে পারেননি প্রধানমন্ত্রী। মানুষকে বিভ্রান্ত করার জন্য পুরনো কতগুলি প্রকল্প তিনি বারবারই এদিন জনসভা থেকে তুলে ধরেছেন। প্রধানমন্ত্রীর এ জনসভা দেখে রাজ্যের মানুষ চরম হতাশ হয়েছে। সোমবার প্রদেশ তৃণমূল কংগ্রেস ক্যাম্পে আয়োজিত সাংবাদিক সম্মেলনে এমনটাই অভিযোগ তুলে নিন্দা জানান প্রদেশ তৃণমূল কংগ্রেস সভাপতি পীযূষ কান্তি বিশ্বাস।
প্রধানমন্ত্রী বুঝতে পারছেন আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপি সরকার গঠনের মতো কোনো সম্ভাবনা নেই। তাই সরকারি কোষাগার থেকে কোটি কোটি টাকা ব্যয় করে রাজ্য সফরে এসে মানুষকে প্রভাবিত করার চেষ্টা করেছেন নরেন্দ্র মোদি। মানুষের কল্যাণে যে টাকা রয়েছে সেই টাকা দলীয় কাজে ব্যবহার করেছে সরকার। এর জন্য জেলা শাসক ও মহাকুমার শাসক সকলকে কাজে নামিয়েছেন। বিজেপি নেতারা বেনিফিশিয়ারদের হুশিয়ারি দিয়ে বলেছেন যদি প্রধানমন্ত্রীর সভায় না যায় তাহলে সরকারি সুবিধা থেকে বঞ্চিত করা হবে। তৃণমূল কংগ্রেসের পক্ষ থেকে প্রধানমন্ত্রীর সফরের তীব্র নিন্দা করা হচ্ছে বলে জানান পীযুষ কান্তি বিশ্বাস।
২০১৮ সালে প্রধানমন্ত্রী রাজ্য সফরে এসে মানুষকে যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন সেই প্রতিশ্রুতি কোনটাই পালন না করে নির্বাচনী প্রাক্কালে প্রধানমন্ত্রীর রাজ্য সফর এসেছেন। এই সফর থেকে প্রমাণিত হয়ে গেছে, মিথ্যে কথা বলতে বলতে প্রধানমন্ত্রীর অভ্যাস হয়ে গেছে। এদিন প্রধানমন্ত্রীর সভা থেকে মানুষ বাড়ি ফেরার সময় বলছিলেন গরিব মানুষের জন্য কোন কিছুই বলা হয়নি। রেগা কাজে মজুরি বৃদ্ধি, মিস কলে চাকুরি এগুলি কোন কিছুই পূরণ হয়নি। তাই তৃণমূল কংগ্রেসের পক্ষ থেকে এর তীব্র নিন্দা জানানো হচ্ছে। তিনি রাজ্যবাসীর উদ্দেশ্যে আরও বলেন প্রধানমন্ত্রী সফরের পর বিভ্রান্ত না হয়। কারণ রাজ্যবাসীর সাথে বিজেপি সরকার শুধু প্রতারণাই করেছে। বিজেপি যদি ভাবে এভাবে মানুষকে প্রতারণা করতে পারবে তাহলে ভুল ভাবছে। মানুষ প্রস্তুত হয়ে রয়েছে বিজিবি সরকারকে পরাস্ত করতে।
এ ডি সি এলাকা প্রসঙ্গে পীযূষ কান্তি বিশ্বাস বলেন, জনজাতি এলাকায় মানুষের কাজ নেই, খাদ্য নেই। সরকারি কর্মচারীদের বেতন দেওয়ার পয়সা নেই এডিসি -তে। যার ফলে জনজাতি অংশের মানুষের দাবি এবং পৃথক রাজ্যের যে দাবি তীব্র আকার ধারণ করেছে এই বিজেপি সরকারের আমলে। গ্রেটার তিপরাল্যান্ডের দাবি আগে ছিল না। প্রধানমন্ত্রীর জনসভা থেকে জনজাতিদের উন্নয়নের জন্য কোন কথাই বলেননি। আর এটা জনজাতি অংশের মানুষ আগে থেকে বুঝতে পেরেই প্রধানমন্ত্রীর সভা বয়কট করেছে। এটা ঘৃণা ও ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ। আগামী দিনে তৃণমূল কংগ্রেস রাজ্যের মানুষের স্বার্থে বিভিন্ন দাবি-দাওয়া নিয়ে আন্দোলনে নামবে বলে জানান তিনি। আয়োজিত সাংবাদিক সম্মেলনে এদিন তেজেন দাস সহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।