Monday, February 10, 2025
বাড়িরাজ্যশ্রমিকদের স্বার্থে মহার্ঘ ভাতা : ভগবান

শ্রমিকদের স্বার্থে মহার্ঘ ভাতা : ভগবান

স্যন্দন ডিজিটাল ডেস্ক। আগরতলা। ৩ ডিসেম্বর : শ্রমিকদের স্বার্থে একাধিক সিদ্ধান্ত নিল রাজ্য শ্রম দপ্তর।ন্যূনতম মজুরি আইনের ৫ নং ধারা অনুযায়ী রাজ্য সরকার কর্তৃক প্রতিটি তালিকাভুক্ত কর্মসংস্থানে প্রতি পাঁচ বছর অন্তর অন্তর ন্যূনতম মজুরি নির্ধারণ হয়ে থাকে। এছাড়া শ্রমদপ্তর তথা রাজ্য সরকার প্রতি বছরে দু’বার ন্যূনতম মজুরি আইনের তালিকা ভুক্ত কুড়িটি কর্মসংস্থানে মহার্ঘ ভাতা বৃদ্ধি করে থাকে। মহার্ঘ ভাতা শ্রম ব্যুরো সিমলা থেকে প্রেরিত ভোক্তা মূল্য সূচকের ৬ মাসের গড় বর্ধিত হিসাবের উপরে ভিত্তি করে বর্ধিত হয়ে থাকে।

 বিগত সময়ের মহার্ঘ ভাতা যা চলতি বছরের ১ জানুয়ারি থেকে কার্যকর হয়েছিল তা শ্রম ব্যুরো সিমলা থেকে প্রেরিত জুলাই ডিসেম্বর ২০২০ সালে ভোক্তা মূল্য সূচকের উপর ভিত্তি করে নির্ধারণ করা হয়েছিল। যা কার্যকর হয় চলতি বছরের ১ এপ্রিল। বর্তমানে ত্রিপুরা সরকার বিবেচনা করে ন্যূনতম মজুরি আইনের তালিকাভুক্ত একুশটি কর্মসংস্থানে পুনরায় মহার্ঘ ভাতা অনুমোদন করেছে। যা চলতি বছরের ১ অক্টোবর থেকে কার্যকর হয়েছে। যা চলতি বছরের জানুয়ারি ২১ থেকে জুন পর্যন্ত ভোক্তা মূল্য সূচকের উপর ভিত্তি করে নির্ধারণ করা হয়েছে। ন্যূনতম মজুরি আইনের তালিকাভুক্ত কর্মসংস্থানগুলি হল রাস্তা নির্মাণ ও রক্ষণাবেক্ষণ বা বিল্ডিং অপারেশনে, যান্ত্রিক কর্মশালা, বিড়ি শিল্প, পেট্রোল পাম্প, রাবার বাগান, রাইস মিলস, স্টোন ব্রেকিং এবং স্টোন ক্রাশিং, দোকান ও প্রতিষ্ঠান, প্রাইভেট টিচিং ইনস্টিটিউট, অটোরিকশা, সাফাই কর্মী, লেম্পস এবং পেক্স, পাবলিক মোটর পরিবহন, কৃষি, গৃহকর্মী, বেসরকারি নিরাপত্তারক্ষী, লোডিং এবং আনলোডিং, গোল্ড স্মিথ, ধুপ এবং ধূপকাঠি, হোটেল এবং রেস্টুরেন্ট। এই মহার্ঘভাতার মাধ্যমে দেড় লক্ষাধিক শ্রমিক উপকৃত হবে। এবং এই বর্ধিত মহার্ঘ ভাতা বর্তমান পরিস্থিতিতে শ্রমিকদের সহায়ক হবে।

এই বর্ধিত মহার্ঘ ভাতা সংগঠিত এবং অসংগঠিত ক্ষেত্রে শ্রমিকদের আর্থিক সহায়তা করবে। শুক্রবার মহাকরণের সাংবাদিক সম্মেলন করে এ বিষয়ে অবগত করেন মন্ত্রী ভগবান চন্দ্র দাস। দায়িত্ব নেওয়ার পর বিভিন্ন শ্রমিক সংগঠন জানতে চায় সরকারিভাবে তাদের মূল্য কতটুকু নির্ধারণ করা হয়েছে। একই সঙ্গে সরকারি ভাবে নির্ধারিত পারিশ্রমিক বৃদ্ধির জন্য দাবি উত্থাপন করা হয়। সেই বিষয়গুলো মাথায় রেখেই সংগঠিত ও অসংগঠিত ক্ষেত্রের শ্রমিকদের মজুরি বৃদ্ধি করা হয়েছে। অনেক ক্ষেত্রে লক্ষ্য করা যায় সংঘটিত ও মালিকানাধীন শ্রমিকরা সরকার নির্ধারিত মজুরি পান না। বিশেষভাবে বেসরকারি নিরাপত্তারক্ষীদের ক্ষেত্রে মজুরি নির্ধারণে এই বৈষম্য লক্ষ্য করা যাচ্ছে। সরকার নির্ধারিত মজুরির নিচে কাউকেই মজুরি প্রদান করা যাবে না। এক্ষেত্রে যদি কোনো শ্রমিক বঞ্চিত হয় তিনি এ বিষয়ে কর্তৃপক্ষকে অবগত করতে পারেন। রাজ্য সরকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে প্রতি ছয় মাস অন্তর অন্তর এই মজুরি বৃদ্ধি করার। সরকারি কর্মচারি নেয় যাতে শ্রমিকরা তাদের যোগ্য সুবিধা পেতে পারে তার জন্য এই উদ্যোগ। শ্রমিকদের স্বার্থে আরো কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়া যায় কিনা এ বিষয়টি খতিয়ে দেখছে সরকার।

দেশের অসংগঠিত শ্রমিকদের ইস রোমের কার্ডের আওতায় আনার জন্য প্রধানমন্ত্রী বিশেষ প্রকল্প ঘোষণা করেছেন। সেই প্রক্রিয়া রাজ্য জুড়ে চলছে। ইস রম কার্ড করার ক্ষেত্রে উত্তর-পূর্বাঞ্চলের মধ্যে প্রথম স্থানে রয়েছে ত্রিপুরা। রাজ্যে শ্রমিকের সংখ্যা ১১ লক্ষ ৬৭ হাজার। তার মধ্যে পাঁচ লক্ষর উপর ইস রম পোর্টালে অসংগঠিত শ্রমিকদের রেজিস্ট্রেশন হয়ে গেছে। এই পাঁচ লক্ষের মধ্যে আড়াই লক্ষ রয়েছেন যারা কৃষি সেক্টরে কাজ করছেন তারা। ১২.৫৭ শতাংশ রয়েছে রেগা, নির্মাণ সহ উন্নয়ন ও শ্রমিক। এই ইস রম পোর্টালের মাধ্যমে শ্রমিকরা বহুবিধ সুযোগ পাবে। সেই সুবিধা সম্বলিত একটি লিফলেট তৈরি করা হয়েছে। যা শ্রমিকদের কাছে পৌঁছে দেওয়া হবে। সহ ইচ্ছায় শ্রমিকরা যাতে ই শ্রম পোর্টালের নাম নথিভুক্ত করা তার জন্য এই উদ্যোগ। দ্রুত বাকি শ্রমিকদেরও এই ই শ্রম পোর্টালের আওতায় আনা হচ্ছে। ২০ টি সেক্টরের বাইরে আরো সেক্টর রয়েছে। সেই সেক্টরগুলিতে কর্মরত অসংগঠিত শ্রমিকদের মজুরি বৃদ্ধির ক্ষেত্রে রাজ্য সরকারের পরিকল্পনা রয়েছে বলে জানান মন্ত্রী ভগবান দাস।

সম্পরকিত প্রবন্ধ

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে
Captcha verification failed!
CAPTCHA user score failed. Please contact us!

সবচেয়ে জনপ্রিয়

সাম্প্রতিক মন্তব্য