স্যন্দন ডিজিটাল ডেস্ক। আগরতলা। ৩০ নভেম্বর : ত্রিপুরার মানুষ সন্ত্রাস থেকে উদ্ধার হতে চাইছে। কারণ বিজেপি সরকার দীর্ঘ সাড়ে তিন বছরেও প্রতিশ্রুতি রূপায়ণ করতে পারেনি। প্রতিশ্রুতি রূপায়ণ করতে না পেরে এখন তারা উল্টো পথে হাঁটছে। তাদের পারফরম্যান্স শূন্য।
কোভিডের মধ্যে একটি আর্থিক মন্দা অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে সারা রাজ্যে। কাজ নেই, খাদ্য নেই। মানুষ যাতে এগুলো নিয়ে মুখ খুলতে না পারে, এবং জবাব চাইতে না পারে তার জন্য মানুষের কণ্ঠরোধ করার চেষ্টা করছে বিজেপি সরকার। তাই তারা বুঝতে পেরেছে এই পরিস্থিতিতে দাঁড়িয়ে যদি ভোট করা হয় তাহলে তাদের সমস্যায় পড়তে হবে। তারা বুঝে গেছে রাজ্যের মানুষের মধ্যে সরকারের প্রতি ক্ষোভ, অনাস্থা এবং ঘৃনা বেড়েছে। তাই তারা মানুষের কন্ঠ রোধ করার চেষ্টা করছে।
এর প্রতিফলন ঘটেছে সদ্য পুর নির্বাচনে। আর এটা শক্তি নয়, দুর্বলতা এবং জনবিচ্ছিন্নতার নিদর্শন। মঙ্গলবার সিপিআইএম রাজ্য কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সাথে মুখোমুখি হয়ে এ কথা বলেন বিরোধী দলনেতা মানিক সরকার। তিনি বলেন এই পরিস্থিতি থেকে বেরিয়ে আসতে মানুষকে আন্দোলন করতে হবে। আগামী ২০২৩ -এ বিধানসভা নির্বাচনে সন্ত্রাস হবে না সেটা নিশ্চিত করবে জাতীয় নির্বাচন কমিশন। যদিও জাতীয় নির্বাচন কমিশনের নিরপেক্ষ ভূমিকা নিয়ে দেশের বিভিন্ন রাজ্যে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। তবে রাজ্যে গত ৪০-৪৩ মাস যাবত যে সন্ত্রাস আবহের মধ্যে নির্বাচন হয়েছে তাতে দেখা গেছে সবগুলি নির্বাচন প্রহসনে পরিণত হয়েছে। সর্বশেষ নিদর্শন হল সদ্য শেষ হওয়া নির্বাচন। মানুষ ভোটদানের অধিকার বাহুবলের মধ্য দিয়ে পুলিশকে নিষ্ক্রিয় করে নির্বাচন কমিশনকে অথাব্য বানিয়ে ভোটাধিকার হরন করেছে। একদলীয় স্বৈর শাসন জাকির বসার প্রচেষ্টা দিন দিন বেড়ে চলেছে। এবং সম্প্রতি যেটা বলা হচ্ছে ভোট, সেটা ভোট হয় নি। প্রধানমন্ত্রী সামাজিক মাধ্যমে রাজ্যবাসীকে অভিনন্দন জানাচ্ছেন। এর থেকে লজ্জার কিছু নেই। মানুষকে দাবিয়ে রেখে ভোট করা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী এ বিষয়ে জানেন না, তা হতে পারে না। কারণ তিনি সব খবর রাখেন। রাজ্যবাসী সাথে মহকারি করা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর এই ধরনের ভূমিকা তীব্র নিন্দা জনক এবং লজ্জাজনক বলে জানেন বিরোধী দলনেতা মানিক সরকার। তবে সম্প্রতি যে প্রহসনে পরিণত হয়েছে তাতে প্রশ্ন উঠছে দেশের মধ্যে ত্রিপুরা একটি অঙ্গরাজ্য কিনা। কারণ এটা এখন প্রাসঙ্গিক বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। পুলিশকে কাঠ পুতুল বানিয়ে নির্বাচন করা হচ্ছে। কিন্তু সেই পুলিশ রাষ্ট্রপতি কালার্স প্রাপ্ত। এবং এখন বিজেপি যে নির্বাচনী ফলাফল দেখাচ্ছে, তাতে প্রশ্ন হচ্ছে এত শতাংশ ভোট হলে তো রাস্তা দিয়ে মানুষ হাঁটতেই পারত না ভোটের দিন। মানুষকে ভোটের আগের দিন থেকে প্রাণনাশের হুমকি পর্যন্ত দেওয়া হয়েছে। পোলিং এজেন্টদের ভোটকেন্দ্রে থাকতে দেওয়া হয়নি। প্রিসাইডিং অফিসারের সামনে পোলিং এজেন্টদের বের করে দেওয়া হয়েছে। অর্ধেক মানুষই ভোট দিতে পারেনি। সম্পূর্ণভাবে জালিয়াতি করেছে। আবার ভোটের ফলাফলের হিসেবে দেখাচ্ছে বিজেপি। এর বিরুদ্ধে মানুষকে রুখে দাঁড়াতে হবে। যে ফল দেখাচ্ছে বিজেপি তা গ্রহণ করা হচ্ছে না বামফ্রন্টে পক্ষ থেকে বলে জানান তিনি।