Tuesday, January 14, 2025
বাড়িরাজ্যসরকারি অনুদানপ্রাপ্ত বিদ্যালয়গুলির জন্য বড় পরিবর্তন আনতে চলেছে সরকার

সরকারি অনুদানপ্রাপ্ত বিদ্যালয়গুলির জন্য বড় পরিবর্তন আনতে চলেছে সরকার

স্যন্দন ডিজিটাল ডেস্ক। আগরতলা। ২০ নভেম্বর : সরকারি অনুদানপ্রাপ্ত বিদ্যালয়গুলির জন্য আনা হচ্ছে নিয়মকানুনের পরিবর্তন। সরকারি স্কুলগুলির মতো পরিচালনা করার দিকে হাঁটছে সরকার। এ বিষয়ে রবিবার সাংবাদিক সম্মেলন করে তুলে ধরেন শিক্ষামন্ত্রী রতন লাল নাথ। তিনি জানান, রাজ্যে ৪৩ টি সরকারি অনুদান প্রাপ্ত স্কুল রয়েছে। এছাড়াও সরকারি ও বেসরকারি বিদ্যালয় রয়েছে। যে সকল স্কুল সরকারি, সেই সকল স্কুলের সকল খরচ সরকার বহন করে। সরকারি অনুদানপ্রাপ্ত বিদ্যালয় গুলির জন্য টাকা দেয় সরকার। কিন্তু পরিচালন করে ম্যানেজমেন্ট কমিটি। বেসরকারি বিদ্যালয়গুলির সম্পূর্ণ খরচ বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ বহন করে। সরকার শুধুমাত্র অনুমোদন প্রদান করে। সরকারি অনুদান প্রাপ্ত বিদ্যালয়গুলি পরিচালনার জন্য ২০০৫ সালের একটি রুলস ছিল।

 দীর্ঘ বছর ধরে সেই রুলসের কোন সংশোধন করা হয়নি। ফলে বিদ্যালয় গুলি বিভিন্ন সময় বিভিন্ন সমস্যায় ভুগছিল। বর্তমান সরকার প্রতিষ্ঠার পর সরকারি অনুদানপ্রাপ্ত বিদ্যালয়গুলির ম্যানেজিং কমিটির সদস্যদের নিয়ে রাজ্যস্তরে একটি মিটিং করা হয়। বিদ্যালয়গুলির বিভিন্ন সমস্যা দূরীকরণের লক্ষ্যে ২০০৫ সালের যে রুলস রয়েছে তার কোন সংশোধনী করা যায় কিনা, তা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়। সেই মিটিংয়ে রুলস সংশোধনের পক্ষে সকলে রায় দিয়েছে। পরবর্তী সময় একটি কমিটি গঠন করা হয়। সেই কমিটিতে সরকারি অনুদানপ্রাপ্ত বিদ্যালয়েগুলির প্রতিনিধিও ছিল। সেই কমিটি রিপোর্ট দেওয়ার পর শেষ মন্ত্রীসভার  বৈঠকে শিক্ষা দপ্তর থেকে সরকারি অনুদান প্রাপ্ত বিদ্যালয় গুলি পরিচালনার জন্য প্রস্তাবিত সংশোধনী রুলস পেশ করা হয়। এবং মন্ত্রিসভার বৈঠকে সংশোধনী রুলসটি পাস হয়। এমনটা জানান শিক্ষা মন্ত্রী রতন লাল নাথ। তিনি আরও জানান সরকারি অনুদান প্রাপ্ত ৪৩ টি বিদ্যালয়ের মধ্যে ছাত্র-ছাত্রী রয়েছে ২৬ হাজার ৪০৯ জন। কিন্তু দেখা যায় কোন কোন বিদ্যালয়ে ৫০ জনের অধিক শিক্ষক শিক্ষিকা রয়েছে, কোন কোন বিদ্যালয়ে ১০০ জনের অধিক শিক্ষক-শিক্ষিকা রয়েছে, আবার কিছু কিছু বিদ্যালয় সামান্য কয়েকজন শিক্ষক শিক্ষিকা দিয়ে চলছে। তাই কমিটি প্রদত্ত রিপোর্টের উপর ভিত্তি করে সরকারি অনুদানপ্রাপ্ত বিদ্যালয়গুলি পরিচালনার জন্য ২০০৫ সালের রুলসের সংশোধন করা হয়েছে।

এই সংশোধনী রুলসের ফলে অনেকগুলি সুবিধা হয়েছে। এই সুবিধা গুলি আগে ছিল না বলেও দাবি করেন মন্ত্রী রতন লাল নাথ। তিনি বলেন পুরাতন রুলস অনুযায়ী প্রথম থেকে পঞ্চম শ্রেণী পর্যন্ত বিদ্যালয় চালু রাখতে গেলে ন্যূনতম ২০০ জন ছাত্রছাত্রী থাকতে হবে। এই ক্ষেত্রে কোন পরিবর্তন করা হয়নি। আগের রুলস অনুযায়ী ষষ্ঠ থেকে অষ্টম শ্রেণী পর্যন্ত বিদ্যালয় চালু রাখতে গেলে ন্যূনতম ২৫০ জন ছাত্রছাত্রী থাকতে হবে। সংশোধনী রুলস মোতাবেক প্রথম শ্রেণী থেকে অষ্টম শ্রেণী পর্যন্ত ২৫০ জন ছাত্রছাত্রী থাকলে বিদ্যালয় চালু রাখা যাবে। আবার প্রথম শ্রেণী থেকে দশম শ্রেণী পর্যন্ত ৪০০ জন ছাত্রছাত্রী থাকলে বিদ্যালয় চালু রাখা যাবে নতুন রুলস মোতাবেক। এছাড়াও প্রথম শ্রেণী থেকে দ্বাদশ শ্রেণী পর্যন্ত ৬০০ জন ছাত্রছাত্রী থাকলে বিদ্যালয় চালু রাখা যাবে।

ষষ্ঠ থেকে দ্বাদশ শ্রেণী পর্যন্ত ৩৫০ জন ছাত্রছাত্রী থাকলে বিদ্যালয় চালু রাখা যাবে। বিদ্যালয় গুলি যেন সঠিকভাবে চলতে পারে তার জন্য রুলসের সংশোধন করে এই পরিবর্তন আনা হয়েছে। সরকারি অনুদান প্রাপ্ত বিদ্যালয় গুলিতে শিক্ষক নিয়োগের ক্ষেত্রে এতদিন ম্যানেজিং কমিটি নিয়োগ পত্র প্রদান করতে পারত। ফলে তারা যাকে খুশি তাকে নিয়োগপত্র দিতে পারতো। নতুন সংশোধনী রুলস মোতাবেক সরকারি অনুদান প্রাপ্ত বিদ্যালয় গুলি টি.আর.বি.টি-র মাধ্যমে শিক্ষক নিয়োগ করতে হবে।

তবে নিয়োগ পত্র ম্যানেজিং কমিটি প্রদান করবে বলে জানান মন্ত্রী রতন লাল নাথ।সরকারি নিয়ম মোতাবেক সরকারি অনুদান প্রাপ্ত বিদ্যালয় গুলিতে ছাত্র ও শিক্ষকের রেশিও মানতে হবে। সরকারি অনুদান প্রাপ্ত বিদ্যালয় গুলিতে দীর্ঘদিন ধরে প্রধান শিক্ষক ও ডিডিও নিয়ে সমস্যা ছিল। সংশোধনী রুলসের মাধ্যমে প্রধান শিক্ষক নিয়োগের সুযোগ করে দেওয়া হয়েছে বলেও জানান মন্ত্রী রতন লাল নাথ। তিনি আরও বলেন যে বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক নিয়োগ করা হবে, সেই বিদ্যালয়ে যদি সহকারী প্রধান শিক্ষক থেকে থাকেন এবং উনার অভিজ্ঞতা যদি এক বছর থাকে, তাহলে উনাকে পদোন্নতি দিয়ে প্রধান শিক্ষক করা যাবে। সরকারি অনুদানপ্রাপ্ত বিদ্যালয় গুলিতে ক্লার্ক নিয়োগ করতে গেলে মেনেজিং কমিটিকে একটি বোর্ড গঠন করে সেই বোর্ডের মাধ্যমে নিয়োগ করতে হবে। সরকারি অনুদান প্রাপ্ত কোন বিদ্যালয়ে যদি সহকারী প্রধান শিক্ষক এবং প্রধান শিক্ষক না থাকে, তাহলে ম্যানেজিং কমিটি যদি রাজ্য সরকারের নিকট প্রধান শিক্ষক দেওয়ার জন্য দাবি জানায়, তখন রাজ্য সরকার সেই বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক নিয়োগ করবে। প্রতি পাঁচ বছর পর পর সরকারি অনুদানপ্রাপ্ত বিদ্যালয়গুলির পর্যালোচনা করা হবে বলেও জানান তিনি। সরকারি অনুদান প্রাপ্ত কোন বিদ্যালয়ে যদি শিক্ষক-শিক্ষিকার সংখ্যা বেশি থাকে, তাহলে নিকটবর্তী সরকারি অনুদানপ্রাপ্ত বিদ্যালয়ে একবারের জন্য শিক্ষক-শিক্ষিকাদের বদলি করা যাবে নতুন সংশোধনী রুলস মোতাবেক। শিক্ষক শিক্ষিকাদের বদলির বিষয়টি ম্যানেজিং কমিটি আলোচনাক্রমে ঠিক করবে বলেও জানান মন্ত্রী রতন লাল নাথ।

সম্পরকিত প্রবন্ধ

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে
Captcha verification failed!
CAPTCHA user score failed. Please contact us!

সবচেয়ে জনপ্রিয়

সাম্প্রতিক মন্তব্য