স্যন্দন ডিজিটাল ডেস্ক। আগরতলা। ৩ নভেম্বর : আত্মনির্ভর ভারত ও আত্মনির্ভর ত্রিপুরার যে স্লোগান দেওয়া হচ্ছে তার গুরুত্ব ও মাহাত্ম্য বুঝতে হবে সকলকে। জনগণ শক্তিশালী হলে সরকার শক্তিশালী হবে। এই চিন্তা ভাবনাকে মাথায় রেখে কৃষকদের আয় দ্বিগুণ করার লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছে সরকার। অর্থনৈতিকভাবে জনগণ শক্তিশালী হলে রাজ্য সরকার আত্মনির্ভর হবে। তাহলে আর দিল্লি থেকে অর্থ আনতে হবে না। বৃহস্পতিবার কমলা সাগর বিধানসভা কেন্দ্রের সেকেরকোট কৃষি উপবিজাকারের পাশে কৃষক জ্ঞানার্জন কেন্দ্রের উদ্বোধন করে এমনটাই বলেন মুখ্যমন্ত্রী ডাঃ মানিক সাহা। মুখ্যমন্ত্রী বলেন বর্তমানে বিজ্ঞানের যুগ।
নতুন নতুন বহু বৈজ্ঞানিক যন্ত্রপাতি আবিষ্কার হয়েছে। সেগুলিকে সঠিকভাবে ব্যবহার করতে পারলে তবেই ফলাফল পাওয়া যাবে। বর্তমানে কৃষকদের জন্য কৃষক জ্ঞান অর্জন কেন্দ্রে যে ধরনের ব্যবস্থাপনা রয়েছে, সেই ধরনের ব্যবস্থাপনা অতীতে কলেজেও ছিল না। কিভাবে উৎপাদন বৃদ্ধি করা যায় এবং উৎপাদিত ফসল বাজারজাত করা যায় সেই বিষয়ে কৃষক জ্ঞান অর্জন কেন্দ্রে কৃষকদের প্রশিক্ষণ প্রদান করা হবে। ভারতবর্ষ কৃষি প্রধান দেশ। ত্রিপুরাও তার ব্যতিক্রম নয়। অর্থনৈতিকভাবে কৃষকরা উন্নত হলে, তবেই সমাজের উন্নয়ন হবে। এই বিষয়টির উপর রাজ্যের পূর্বতন সরকার গুরুত্ব দেয়নি। কৃষকদের আয় দ্বিগুণ করার লক্ষ্যে দেশের বর্তমান প্রধানমন্ত্রী প্রতিনিয়ত প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। বর্তমান রাজ্য সরকার বাস্তবমুখী সরকার। বর্তমান রাজ্য সরকার জনগণের সরকার। প্রধানমন্ত্রীর নরেন্দ্র মোদির দেখানো পথকে পাথেয় করে স্বচ্ছতার সাথে কাজ করছে বর্তমান রাজ্য সরকার। পরিকাঠামোগত উন্নয়ন করে দিচ্ছে কেন্দ্র সরকার। রেল যোগাযোগের সম্প্রসারণ ঘটেছে রাজ্যে। আগরতলা রেল স্টেশন আন্তর্জাতিক মানের রেল স্টেশনে পরিণত হবে।
এমবিবি বিমানবন্দরে প্রতিদিন ২০ টার মতো বিমান আসা-যাওয়া করে। সড়কপথে যোগাযোগ ব্যবস্থার ব্যাপক সম্প্রসারণ ঘটেছে। অটল বিহারী বাজপেয়ি বলেছিলেন লোক ইস্ট পলিসির কথা। বর্তমান প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী বলেছেন এক্ট ইস্ট পলিসির কথা। মুখে বড় বড় কথা না বলে তিনি কাজ করে দেখাচ্ছেন বলে দাবি করেন মুখ্যমন্ত্রী ডাক্তার মানিক সাহা। নাম না করে রাজ্যের পূর্বতন বামফ্রন্ট সরকারকে কটাক্ষ করে মুখ্যমন্ত্রী বলেন পূর্বতন রাজ্য সরকারের সময়ে রাজ্যে সেই ধরনের কোন শিল্প তৈরি না হলেও কথার শিল্প তৈরি করেছিল তারা। কথার মাধ্যমে মানুষকে বোকা বানানো হত। বর্তমান সরকারের মন্ত্রী বিধায়করা কথা দিয়ে নয়, কাজের মাধ্যমে মানুষের মন জয় করে নিচ্ছে। রাজ্যে পূর্বতন সরকারের সময় কৃষকদেরকে কৃষি আন্দোলনের নামে ভুল পথে পরিচালিত করা হয়েছে।
কৃষকরা সমাজের প্রকৃত বন্ধু, অন্নদাতা। তাদের কল্যাণ হলে, সরকারের কল্যাণ হবে। মুখ্যমন্ত্রী এইদিনের অনুষ্ঠানে আরও বলেন বর্তমান সরকার চায় সাধারণ মানুষের সাথে থাকতে। রাজ্যে মাঝারি থেকে বড় ধরনের শিল্প স্থাপনের সম্ভাবনা ছিল। কিন্তু পূর্বতন সরকারের সময়ে তা করতে দেওয়া হয়নি। আন্দোলনের নামে শ্রমিকদের মালিকের বিরুদ্ধে লেলিয়ে দিয়ে সকল কলকারখানা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। তিনি আরো বলেন শ্রমিক ও মালিক উভয়কে বাঁচাতে হবে। বর্তমান সরকার সেই দিশাতে কাজ করছে। এইদিনের অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন পশ্চিম ত্রিপুরা জেলা পরিষদের সভাধিপতি অন্তরা দেব সরকার, ডুকলি পঞ্চায়েত সমিতির ভাইস চেয়ারম্যান দুলাল সরকার, কৃষি দপ্তরের সচিব অপূর্ব রায়, এলাকার বিশিষ্ট সমাজসেবি সুবীর চৌধুরী সহ কৃষি দপ্তরের অন্যান্য আধিকারিকরা। এইদিনের অনুষ্ঠানে এলাকার গরিব কৃষকদের মধ্যে একটি ট্রাক্টর, দুটি স্প্রে মেশিন এবং একটি জলের পাম্প মেশিন বিতরণ করা হয়। অনুষ্ঠানে এইদিন এলাকার কৃষকদের পাশাপাশি সাধারন মানুষের উপস্থিতি ছিল লক্ষ্যনীয়।