স্যন্দন ডিজিটাল ডেস্ক। আগরতলা। ২০ অক্টোবর : শ্রমিকরাই দেশ গড়ার কারিগর। রাজ্যের বর্তমান সরকার এবং কেন্দ্রীয় সরকার শ্রমিকদের সার্বিক কল্যাণে বিশ্বাস করে। সমাজের অন্তিম ব্যক্তির উন্নয়ন না হলে দেশ কিংবা রাজ্যের উন্নয়ন সম্ভব নয়। তাই শ্রমিকদের সম্মান প্রদর্শন করতে হবে। বৃহস্পতিবার রবীন্দ্র শতবার্ষিকী ভবনে শ্রম দপ্তরের উদ্যোগে আয়োজিত ‘নির্মাণ শ্রমিক কল্যাণ প্রকল্প ২.০’ – এর শুভ সূচনা করে এমনটাই বললেন মুখ্যমন্ত্রী ডাঃ মানিক সাহা। তিনি আরো রাজ্যের পূর্বতন সরকার শ্রমিকদের কোন উন্নয়ন করেনি। বরং শ্রমিকদের ধ্বংসের পথে ঠেলে দিয়েছে। যে সকল জায়গায় সমাজবাদের চিন্তাধারার সরকার ছিল, সেই সকল জায়গায় শ্রমিকদের এই দুরবস্থা হয়েছে।
আন্দোলনের নামে শ্রমিকদের লেলিয়ে দেওয়া হতো মালিকদের বিরুদ্ধে। ধর্মঘট করানো হতো শ্রমিকদের দিয়ে। যারা এইসকল কাজ গুলো করাতো তাদের আঙ্গুল ফুলে কলাগাছ হয়ে গেছে। কিন্তু শ্রমিকরা দুরবস্থার দিকে চলে গেছে। যারা সমাজবাদের কথা বলত, তারা এসব কাজ করে সমাজের শত্রু হয়ে গেছে। বর্তমানে মানুষ তাদেরকে প্রত্যাখ্যান করেছে। সমাজবাদ কোন অবস্থায় মানুষের মঙ্গল করতে পারে না। ধনতান্ত্রিক পদ্ধতিতে কোনভাবেই মানুষের কল্যাণ করা যায় না। প্রকৃতির নিয়ম অনুযায়ী একজন আরেকজনকে ছাড়া বাঁচতে পারবে না। গাছ যেমন মানুষকে অক্সিজেন দেয়, তেমনি মানুষ গাছকে কার্বন-ডাই-অক্সাইড দিয়ে থাকে। রাজ্যের পূর্বতম সরকার একজনকে অপরজনের শ্রেণীশত্রু হিসাবে ব্যবহার করেছে। সেই জায়গা থেকে বর্তমানে মানুষ বেরিয়ে এসেছে। দেশের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি সব সময় বলেন সমাজের অন্তিম ব্যক্তির উন্নয়ন করা না গেলে দেশের উন্নয়ন কখনোই সম্ভব নয়। শ্রমিকদের প্রাপ্যসম্মান তাদেরকে দিতে হবে। রাজ্যের বর্তমান সরকার শ্রমিকদের কল্যাণে একাধিক সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে। শ্রমিকদের উন্নয়নের কথা বলে আগে তাদেরকে দিয়ে মিছিল-মিটিং করানো হতো। তাদের কাছ থেকে চাঁদা সংগ্রহ করা হতো। সেই চাঁদার কালচার বর্তমানে আর নেই। বর্তমান সরকার কোথাও কোন ধরনের চাঁদার কালচার বরদাস্ত করবে না।বর্তমানে মিডলম্যানের কোন স্থান নেই বলেও জানান মুখ্যমন্ত্রী। শ্রমিকরা দেশ তৈরি করার কারিগর। তাদেরকে বঞ্চিত করে রাখলে চলবে না। রাজ্যের পূর্বতম সরকার নিজেদেরকে গরিবের সরকার বলে দাবি করত। বাস্তবে তারা গরীব বানানোর সরকার ছিল বলেও কটাক্ষ করেন মুখ্যমন্ত্রী ডাক্তার মানিক সাহা। নির্মাণ শ্রমিক কল্যাণ প্রকল্প ২.০ এর মাধ্যে রয়েছে মহিলা নির্মাণ শ্রমিকদের বিবাহ যোজনা, মাতৃত্ব কালিন সুবিধা, শিক্ষার ক্ষেত্রে সুবিধা, চিকিৎসার সহায়তা, পেনশনের সুবিধা, গৃহ নির্মাণের জন্য নির্মাণ শ্রমিকদের ঋন ও অগ্রিম প্রদানের সুবিধা, মৃত্যু পরবর্তী সহায়তা, অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ায় সহায়তা, শারীরিক অক্ষমতার সহায়তা সহ অন্যান্য সুবিধা। এইদিন নির্মাণ শ্রমিক কল্যাণ প্রকল্প ২.০ এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী ডাক্তার মানিক সাহা ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন মন্ত্রী ভগবান চন্দ্র দাস, বিধায়ক বিনয় ভূষণ দাস সহ অন্যান্যরা। অনুষ্ঠানে ‘অনলাইন লেবার সেস কালেকশন পোর্টাল’ এর উদ্বোধন করেন মুখ্যমন্ত্রী। অনুষ্ঠানে বেশ কয়েকজন মহিলা নির্মাণ শ্রমিককে নির্মাণ শ্রমিক কল্যাণ প্রকল্প ২.০ মাধ্যমে আর্থিক ভাবে সাহায্য করা হয়। সুবিধাভোগী নির্মাণ শ্রমিকদের হাতে চেক তুলে দেন মুখ্যমন্ত্রী সহ অন্যান্য অতিথিরা। এইদিনের অনুষ্ঠানে নির্মাণ শ্রমিকদের উপস্থিতি ছিল লক্ষ্যনীয়।