Monday, November 17, 2025
বাড়িরাজ্যক্লাস চলাকালীন সময় বিদ্যুতিক পাখা তথা সিলিং ফ্যান ভেঙ্গে পড়ল দুই ছাত্রের...

ক্লাস চলাকালীন সময় বিদ্যুতিক পাখা তথা সিলিং ফ্যান ভেঙ্গে পড়ল দুই ছাত্রের মাথায়

স্যন্দন ডিজিটাল ডেস্ক, আগরতলা। ২৯ অক্টোবর : রাজধানীর উমাকান্ত ইংরেজি মাধ্যম বিদ্যালয়ের শিক্ষক শিক্ষিকা এবং বিদ্যালয় পরিচালন কমিটির চরম গাফিলতি এবং উদাসীনতার কারণে প্রাতঃবিভাগে ঘটে গেল এক ভয়ঙ্কর ঘটনা। বুধবার প্রাতঃ বিভাগের ক্লাস চলাকালীন সময় বিদ্যালয়ের তৃতীয় শ্রেণীর দুই ছাত্রের মাথায় সিলিং ফ্যান ভেঙ্গে পড়ে। এতে আহত হয় দুই ছাত্র। তাদের মধ্যে একজনের নাম রাজদীপ রায় এবং অপরজনের নাম অংশুমান দাস।

 রাজদীপের মাথায় গুরুতর আঘাত লাগে এবং অংশুমানের চোখের পাশে আঘাত লাগে। ঘটনার সাথে সাথে বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা আহত দুই ছাত্রকে দ্রুত নিয়ে যায় আইজিএম হাসপাতালে। ঘটনার সময় বিদ্যালয়েরই এক শিক্ষিকা তৃতীয় শ্রেণীর ক্লাস করাচ্ছিলেন। তিনি জানান তিনি ব্ল্যাক বোর্ডে লিখছিলেন। এমন সময় একটি সিলিং ফ্যান খুলে এক ছাত্রর মাথায় পড়ে যায়। তিনি আরও জানান সিলিং পাখাটি বেশকিছু দিন ধরে ধীর গতিতে ঘুরছিল। এবং পাখা ঘুরার সময় শব্দ করতো। এই বিষয়ে তিনি কয়েকদিন পূর্বে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষককে অবগত করেছেন। আহত ছাত্রর বাবা সংবাদ মাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে জানান বিদ্যালয় ছুটির কিছু সময় পূর্বে তিনি খবর পান উনার ছেলে আহত হয়েছে। সাথে সাথে আইজিএম হাসপাতালে ছুটে যান।

হাসপাতালে গিয়ে জানতে পারেন সিলিং ফ্যান উনার ছেলের মাথায় খুলে পড়েছে। ওনার ছেলের মাথা ফেটে গেছে। কুড়ি থেকে পঁচিশ বছর আগে বিদ্যালয়ের মধ্যে সিলিং ফ্যান গুলো লাগানো হয়েছে। মাঝেমধ্যে এগুলি পরিচর্যা করার কোন সদিচ্ছা নেই বিদ্যালয়ে শিক্ষক-শিক্ষিকা এবং পরিচালন কমিটির। যার কারণে এমন ঘটনা সংঘটিত হয়েছে বলে মনে করেন তিনি। তিনি আরও জানান উমাকান্ত ইংরেজি মাধ্যম বিদ্যালয়ের পরিষেবা নিয়ে রয়েছে বহু অভিযোগ। বিদ্যালয়ের সমস্যা নিয়ে প্রধান শিক্ষকের সাথে কথা বলার পর যে সকল অভিভাবকরা কথা বলে তাদের ছেলেকে শাস্তি প্রদান করা হয়। বিদ্যালয়ে নেই ভালো শৌচালয়। বিদ্যালয়ে আয়া থাকলেও তাদের কোন ভূমিকা দেখা যায় না। অপর এক অভিভাবক জানান বিদ্যালয়ে গিয়ে জানতে পারেন এক ছাত্রর মাথায় সিলিং ফ্যান খুলে পড়েছে। এই ভাবে চললে ছেলে মেয়েদের বিদ্যালয়ে পাঠানো আতঙ্কের বিষয়। বিদ্যাজ্যোতি স্কুল অথচ নেই কোন পরিষেবা। ক্লাস চলাকালীন সময় তৃতীয় শ্রেণীর ছাত্রর মাথায় পাখা খুলে পড়ার বিষয়টি জানাজানি হওয়ার পর অভিভাবক ও বিদ্যালয়ের পড়ুয়াদের মধ্যে আতঙ্ক দেখা দিয়েছে। এইদিন অভিভাবকদের সাথে কথা বলতে গিয়ে জানা যায় উমাকান্ত ইংরেজি মাধ্যম বিদ্যালয়ের পরিষেবা ভালো নয়। অভিভাবকরা এইদিন বিদ্যালয়ের বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ উত্থাপন করেন।

অন্যতম অভিযোগ হলো, বিদ্যালয়ের মধ্যে শিক্ষক শিক্ষিকারা মোবাইল নিয়ে ব্যস্ত থাকেন বেশি। ক্লাসরুমে পড়াতে এসেও তারা মোবাইল নিয়ে ব্যস্ত থাকেন বলে ছেলেদের কাছ থেকে জানতে পেরেছে। আশ্চর্যের বিষয় হলো কোন বিষয় নিয়ে বিদ্যালয়ে অভিভাবকরা অভিযোগ জানালে কিংবা সংশোধন করে দেওয়ার চেষ্টা করলে শিক্ষক শিক্ষিকারা ছাত্রদের বিভিন্ন কায়দায় শাস্তি প্রদান করে। যার কারণে অভিভাবকরা মুখ খোলা বন্ধ করে দিয়েছে। এমন অরাজকতা রাজ্যের কোন বিদ্যালয়ে আছে কিনা জানা নেই। বিদ্যালয় রয়েছে ১৫৪১ জন ছাত্র। শিক্ষক শিক্ষিকাদের বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ ভূ-ভারতে আর কোথাও রয়েছে কিনা জানা নেই। রাজ্যের শিক্ষা দপ্তর এই বিষয়ে অবগত হওয়া প্রয়োজন। শিক্ষা দপ্তরের আজিকারিকদের কুম্ভ নিদ্রা থেকে উঠে বিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষিকাদের এমন রাজত্বের বিরুদ্ধে তদন্ত করা প্রয়োজন বলে মনে করে অভিভাবকরা। কারণ আগরতলা শহরে বসে চাকরি করে গাড়ি, ফ্ল্যাট, বাড়ি সবকিছুই জমজমাট তাদের। তারপরও কয়েক ঘণ্টার জন্য বিদ্যালয়ে এসে ছাত্রদের উপর এমন শাস্তি নামে আনা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়।

সম্পরকিত প্রবন্ধ

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে
Captcha verification failed!
CAPTCHA user score failed. Please contact us!

সবচেয়ে জনপ্রিয়

সাম্প্রতিক মন্তব্য