স্যন্দন ডিজিটাল ডেস্ক। আগরতলা। ৭ সেপ্টেম্বর : রাজ্য সরকারের ঐকান্তিক উদ্যোগে কৃষকদের উৎপাদিত ফসলের সঠিক মূল্য প্রদান করে তাদেরকে অর্থনৈতিকভাবে আরো শক্তিশালী করে তুলতে খাদ্য ও জনসংভরন ও ক্রেতা সার্থক বিষয়ক দপ্তর কৃষি দপ্তর এবং এফসিআই -এর সহযোগিতায় ২০১৮-১৯ অর্থ বছরের মরশুমে প্রথমবারের মতো সরাসরি কৃষকদের কাছ থেকে সহায়ক মূল্যে ধান কেনা শুরু হয়। চলতি রবি মরশুমে দপ্তরের পক্ষ থেকে গত ৮ জুন থেকে সহায়ক মূল্যে ধান কেনার কাজ শুরু করা হয়।
এই কার্যক্রম গত ১৪ আগস্ট পর্যন্ত জারি ছিল। রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় পর্যায়ক্রমে মোট ৩৫ টি অস্থায়ী ধান ক্রয় কেন্দ্র খোলা হয়। এই মরশুমে মোট ২৬ হাজার ৫১৫ মেট্রিক টন ধান ১৩ হাজার ৩১৩ জন কৃষকের কাছ থেকে ক্রয় করা হয়েছে এবং সহায়ক মূল্য বাবদ মোট ৫১ কোটি ৪৪ লক্ষ টাকা সরকারি কোষাগার থেকে ব্যয় হয়েছে। বুধবার মহাকরণে খাদ্য জনসংভরন ও ক্রেতা বিষয়ক দপ্তরের সাফল্যের খতিয়ান তুলে ধরে এ কথা জানান মন্ত্রী মনোজ কান্তি দেব। জাতীয় খাদ্য সুরক্ষা আইন ২০১৩ সালে দেশে কার্যকর হয়। এই আইন বাস্তবায়নে রাজ্যের বিশেষ সাফল্যের জন্য কেন্দ্রীয় সরকার দ্বারা সম্প্রতি প্রকাশিত এন এফ এস এ স্টেট রাঙ্কিং ইনডেক্স ২০২২ সমীক্ষা রিপোর্টে ত্রিপুরা ১৪ টি স্পেশাল ক্যাটাগরি রাজ্য ও কেন্দ্র শাসিত অঞ্চলের মধ্যে প্রথম স্থান এবং সার্বিকভাবে সারা দেশের মধ্যে পঞ্চম স্থান অধিকার করেছে। প্রধানমন্ত্রী গরিব কল্যাণ অন্য যোজনা ২০২১ থেকে ২০২২ এর সেপ্টেম্বর পর্যন্ত চলবে। দ্বিতীয় পর্যায়ে ২০২২ – এর জুলাই পর্যন্ত গত ১৫ মাসের সময় রাজ্যের প্রায় ৫ লক্ষ ৯৬ হাজার এন এফ এস এ পরিবারকে এক লক্ষ ৮৪ হাজার ৯৩১ মেট্রিক টন চাল মিনামূলে এ স্কিমের আওতায় প্রদান করা হয়েছে। ২০২১ সালের অক্টোবর মাস থেকে মিড ডে মিল ও সুসংহত শিশু উন্নয়ন প্রকল্পের অধীনে সারা রাজ্যে ফ্রটিফায়েড চাল বিতরণের কর্মসূচি বাস্তবায়িত হচ্ছে।
গত এপ্রিল মাস থেকে পিছিয়ে পড়া জেলা হিসেবে রাজ্যের ধোলাই জেলাতে আপাতত ৪৫ চাল বিতরণ করা হচ্ছে এবং ২০২৪ -এর মধ্যে পর্যায়ক্রমে অন্যান্য জেলাতেও এই চাল বিতরণ করা শুরু হবে। নারী ক্ষমতায়ন কর্মসূচির অঙ্গ হিসেবে মহিলাদের প্রাধান্য দেওয়া হচ্ছে। এ পর্যন্ত মোট ২৯৯ টি নতুন রেশন দোকান গঠন করা হয়েছে। এখানে মোট ৪৭৮ জনের কর্মসংস্থান হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী চা শ্রমিক কল্যাণ প্রকল্পের মাধ্যমে জাতীয় খাদ্য সুরক্ষা আইনের বাইরে থাকা ১,০৬৮ এপিএল চা শ্রমিক পরিবারের ৪,৬০৬ সদস্যকে নতুনভাবে জাতীয় খাদ্য সুরক্ষা আইনের আওতায় আনা হয়েছে। কেন্দ্রীয় স্পন্সর স্কিমের অধীনে নতুন গোডাউন তৈরির কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে। ইতিমধ্যে জিরানিয়া বেলাবাড়ি, উদয়পুরের চন্দ্রপুরে ৫০০ মেট্রিক টন ও ১০০০ মেট্রিক টন স্টোরেজ ক্ষমতাসম্পন্ন দুটি গো ডাউন তৈরির কাজ সম্পন্ন হয়েছে। এগুলি অতি শীঘ্রই চালু করা হবে বলে জানান মন্ত্রী মনোজ কান্তি দেব। এছাড়া ২৫০০ মেট্রিক টন স্টোরেজ ক্ষমতা সম্পন্ন আরো চারটি নতুন গোডাউন তৈরির কাজ আগামী কয়েক মাসের মধ্যে সম্পন্ন হবে। মোহনপুর ও লংতরাইভ্যালি মহকুমায় লিগ্যাল মেট্রলজি অর্গানাইজেশনের দুটি ওয়ার্কিং স্ট্যান্ডার্ড ল্যাব চালু করা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী উজ্জ্বলা যোজনার মাধ্যমে এখনো পর্যন্ত মোট ২ লক্ষ ৮৮ হাজার ৮৫৪ টি পরিবারে গ্যাসের সংযোগ প্রদান করা হয়েছে। অনলাইনে রেশন কার্ড পরিষেবার মাধ্যমে রাজ্যের জনগণের সুবিধার্থে রেশন কার্ড সম্পর্কিত পরিষেবা প্রদানের প্রক্রিয়াকে আরো সহজ ও দ্রুত করার লক্ষ্যে রাজ্যে অতি সম্প্রতি রেশন কার্ডের জন্য একটি ই-পরিষেবা মাধ্যম চালু করা হয়েছে বলে জানান তিনি।