স্যন্দন ডিজিটাল ডেস্ক। আগরতলা। ৫ সেপ্টেম্বর : জমি অধিগ্রহণ নিয়ে উত্তেজনা এয়ারপোর্ট থানায়।মোতায়েন করা হলো পুলিশ এবং টি এস আর বাহিনী। উল্লেখ্য, ১৯৮৭ সালে জোর করে জমি দখল নেওয়ার অভিযোগে আদালতে মামলা করেন জমির মালিক মিলন রানী পাল। অভিযোগ ছিল এয়ারপোর্ট থানা জোর করে তার জমির একটা অংশ দখল করে রেখেছে। নিজের জমি ফেরৎ পেতে মামলা করেন তিনি। আদালতে দীর্ঘ বছর মামলা চলার পর ১৯৯৫ সালে আদালতের রায় যায় জমির মালিকের পক্ষে। সেই সময় আদালতের নির্দেশ মোতাবেক জমি দখল নিতে গেলে পুলিশি দুর্ব্যহার ও রনংদেহী সাজের কারনে জমির দখল নেওয়া সম্ভব হয়নি। দীর্ঘ বছর এই ভাবেই চলতে থাকে।
ইতিমধ্যে এয়ারপোর্ট থানার পরিকাঠামোর বিস্তার ঘটানো হয়। থানা চত্বরে নির্মাণ করা হয় মন্দির। ২০২০ সালে জমির মালিকের পক্ষ থেকে জোর করে দখল করা জমি ফেরৎ চেয়ে উচ্চ আদালতে একটি রিট পিটিশন দাখিল করা হয়। আদালতের নির্দেশ থাকার পরেও দীর্ঘ ৩৫ বছর জমি ভোগ করতে না পারার বিষয়টি উচ্চ আদালতকে অবগত করা হয়। জেলা দায়রা আদালতকে বিষয়টি নিস্পত্তি করার নির্দেশ দেয় উচ্চ আদালত। গত ২৯ আগস্ট জেলা দায়রা আদালত থেকে একটি অর্ডার বের হয়। তাতে প্রকৃত মালিককে জমি হস্তান্তর করার নির্দেশ দেওয়া হয়। সেই মোতাবেক গত ২ সেপ্টেম্বর জমি দখল নেওয়ার উদ্যোগ নেওয়া হয়। এরই মধ্যে ১ সেপ্টেম্বর মিথ্যা তথ্য দিয়ে দায়রা আদালতে একটি অ্যাপিল ফাইল করা হয় বলে জানান মামলাকারীর আইনজীবী। স্থগিতাদেশ চায় তারা। ২ সেপ্টেম্বর আদালত সমস্ত নথী যাচাই করে সেই স্থগিতাদেস তুলে নেয়। ভুল তথ্য দেওয়ার একজনকে বদলী করা হয়। সোমবার আদালতের নির্দেশ মেনে জমি দখল করতে আসলে এলাকাবাসী বাঁধা দেয়। তারা দাবি জানান মন্দিরের যাতে কোন ক্ষতি না হয়। মালিক পক্ষ থেকে জানানো হয় মন্দিরকে শ্রদ্ধা জানিয়ে এই জায়গা ছেরে দিয়ে বাকী জায়গা তারা দখল নেবেন। সেই মোতাবেক শুরু হয় মাপঝাপ। এরপরেই এলাকাবাসী তাদের দাবি পরিবর্তন করে জানায় এদিন কোন মাপঝোক করা যাবে না। এই ক্ষেত্রে মামলাকারীর আইনজীবী অভিযোগ করেন পুলিশি ভূমিকা ছিল নিস্ক্রিয়। একই সঙ্গে তিনি অভিযোগ করেন এর পেছনে ইন্ধন ছিল পুলিশের। বিষয়টি ফের আদালতকে জানানো হবে বলে জানান আইনজীবী। এদিকে পুলিশের আধিকারিক জানান পুলিশ সহায়তা করেছে। তবে একটি মন্দির থাকায় ধর্মীয় ভাবাবেগের কারনে এলাকাবাসী বাঁধা দেওয়ায় কাজ সম্পন্ন করা যায়নি। এলাকাবাসীর পক্ষ থেকে জানানো হয় এয়ারপোর্ট থানায় একটি মন্দির রয়েছে। এখানে সকলে পুজো দেয়। কিন্তু মন্দির ভাঙ্গা যাবে না। এলাকার সমস্ত মানুষ মিলে বসে আলোচনা করে পরবর্তী সময় সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হবে বলে জানান তিনি। মন্দির ভাঙ্গা হবে না বলে জমির মালিক যে মৌখিক আশ্বাস দিয়েছেন তা তারা মানেন না বলেও জানান। শেষ পর্যন্ত জমি দখল না নিয়েই ফিরে আসতে হয় আদালতের কর্মী ও আইনজীবী এবং মালিক পক্ষকে। এই ঘটনায় পুলিশি ভূমিকা নিয়ে সরব হয়েছেন মামলাকারীর আইনজীবী। এয়ারপোর্ট থানা চত্বরে দেখা দেয় সাময়িক উত্তেজনা। পুনরায় আদালতকে অবগত করার পর কি নির্দেশ আসে এখন সেদিকে তাকিয়ে সকলে।