স্যন্দন ডিজিটাল ডেস্ক, আগরতলা। ১৬ অক্টোবর : বিপিএল কার্ড ধারী থেকে বর্তমান সরকারের সাত বছরে সর্বোচ্চ করদাতা পরিবার হলো মন্ত্রী সুধাংশু দাসের পরিবার। এই অভিযোগ তুলেছেন বিরোধী দলনেতা জিতেন্দ্র চৌধুরী। তারপরই শাক দিয়ে মাছ ঢাকার জন্য মানহানি মামলা কথা বলছেন মন্ত্রী সুধাংশু দাস। উল্লেখ্য, সম্প্রতি রাজ্যের মন্ত্রী সুধাংশু দাসের একটি ভিডিও সামাজিক মাধ্যমে ভাইরাল হয়। যেখানে দেখা যায় মন্ত্রী সুধাংশু দাস নিজের আয়ের উৎস সম্পর্কে বলেছেন। এই ভিডিও সামাজিক মাধ্যমে ভাইরাল হওয়ার পর থেকে বিভিন্ন মহল থেকে সমালোচনা শুরু হয়। বিরোধী রাজনৈতিক দল গুলির পক্ষ থেকে মন্ত্রী সুধাংশু দাসকে মন্ত্রীসভা থেকে বহিষ্কার করার দাবি জানানো হয়। বৃহস্পতিবার আগরতলা প্রেস ক্লাবের সাংবাদিক সম্মেলন করে মন্ত্রী সুধাংশু দাস নিজের ভাইরাল হওয়া ভিডিও নিয়ে স্পষ্টীকরণ দেন।
সাংবাদিক সম্মেলনে তিনি দাবি করেন গত দুই মাস ধরে একটি ফেস বুক পেইজের মালিক ওনাকে একটা ইন্টারভিউর জন্য ফোন করে আসছেন। গত শনিবার তিনি ইন্টার্ভিউ দেন। ইন্টার্ভিউ শেষ হওয়ার পর ঐ ফেইস বুক পেইজের মালিক ও ওনার স্বামী ৪ থেকে ৫ মিনিট কথা বলে। কথা বলার সময় তারা জানায় মন্ত্রী সুধাংশু দাসের অধিন তিন দপ্তরের কাজের প্রচার করবে তারা তাদের ফেসবুক পেজের মাধ্যমে। তার বিনিময়ে তারা বছরে ৭ লক্ষ টাকা দাবি করে। তখন তিনি তাদেরকে জানান ওনার কাছে কোন উৎস নেই। অনেক লোক অনেক সময় ওনার কাছে সাহায্যের জন্য আসে। তখন তিনি অনেকের কাছ থেকে টাকা পয়সা সাহায্য নিয়ে যারা সাহায্যের জন্য আসে তাদেরকে সাহায্য করেন। ফেইস বুক পেইজের মালিক গোপনে এই কথা কেমেরায় রেকর্ড করে নেয়। এবং তা সামাজিক মাধ্যমে ছেড়ে দেয়। মন্ত্রী সুধাংশু দাস এইদিনের সাংবাদিক সম্মেলন থেকে ঐ ফেইস বুক পেইজের মালিকের নিকট আহ্বান জানান সম্পূর্ণ ভিডিও ফুটেজ প্রকাশ করার জন্য।
শুধুমাত্র ওনাকে হেয় প্রতিপন্ন করার জন্য সম্পূর্ণ ভিডিও থেকে কেটে ২৫ সেকেন্ডের ভিডিও প্রকার করা অত্যন্ত নিন্দনীয়। মন্ত্রী সুধাংশু দাস জানান ওনার ব্যক্তিগত চরিত্র হরণের জন্য চক্রান্ত করে এইটা করা হয়েছে। সাংবাদিক সম্মেলনে মন্ত্রী সুধাংশু দাস আরও জানান বিগত কিছু দিন ধরে বিরোধী দলনেতা জিতেন্দ্র চৌধুরী ওনাকে এবং ওনার পরিবারকে নিয়ে কুরুচিকর মন্তব্য করে যাচ্ছেন। ওনার সম্পত্তি ও ওনার ভাই সর্বোচ্চ ট্যাক্স প্রদান করে বলে প্রচার করছেন। সুধাংশু দাস জানান ২০১৪ সাল থেকে তিনি আয় কর দিয়ে আসছেন। তখন তিনি একটি কোম্পানিতে চাকুরি করতেন। ২০১৭ সালের ২ জুন তিনি চাকুরি থেকে পদত্যাগ করে রাজনীতিতে ঝাপিয়ে পড়েন। যেই সময় তিনি চাকুরি থেকে পদত্যাগ করেছেন সেই সময় ওনার মাসিক আয় ৭০ থেকে ৮০ হাজার টাকা। বিধায়ক হওয়ার আগে তিনটি দেশ ভ্রমণ করেছেন তিনি। জিতেন্দ্র চৌধুরী ওনার মাকে নিয়ে কথা বলেছেন। ওনার মাকে অপমান করেছেন। তার নিন্দা জানান সুধাংশু দাস। জিতেন্দ্র চৌধুরী বিগত চার থেকে ৫ মাস ধরে প্রচার করছেন ওনার বড় ভাই রাজ্যে সর্বোচ্চ করদাতা। সুধাংশু দাস বলেন ওনার বড় ভাইয়ের কাছে কোন কালো টাকা নেই। যেই টাকা আয় করেন তার উপর তিনি কর দেন। কালো টাকার জন্য কর দিতে হয় না। সুধাংশু দাস চ্যালেঞ্জ করে বলেন ওনার বড় ভাই সর্বোচ্চ করদাতা তা প্রমান করে দেখাক জিতেন্দ্র চৌধুরী। তাহলে তিনি পদত্যাগ করবেন। ২৬ অক্টোবরের মধ্যে জিতেন্দ্র চৌধুরীকে তা প্রমান করতে হবে। অন্যায় রাজ্যবাসীর সামনে ক্ষমা চাইতে হবে। তা না করলে তিনি জিতেন্দ্র চৌধুরীর বিরুদ্ধে মান হানির মামলা দায়ের করবেন বলে জানান মন্ত্রী সুধাংশু দাস। মন্ত্রী সুধাংশু দাস এইদিন বিরোধী দলনেতা জিতেন্দ্র চৌধুরীর বিরুদ্ধে মান হানির মামলা করার পাশাপাশি সংশ্লিষ্ট ফেইস বুক পেইজের বিরুদ্ধেও মামলা দায়ের করবেন বলে জানান।

