স্যন্দন ডিজিটাল ডেস্ক, আগরতলা। ৫ অক্টোবর :দুর্গা পূজার চাঁদার জন্য চড়িলাম পুরান বাজার এলাকায় অসহায় মহিলার দোকান ভাংচুর। চড়িলাম পুরান বাজার এলাকায় অসহায় মহিলা লিপি দাসের একটি দোকান রয়েছে। এই দোকান চালিয়ে তিনি সংসার চালান। কিন্তু এই দুর্গা পূজা লিপি দাসের কপালে আনন্দের পরিবর্তে নিয়ে এসেছে দুঃখ। স্থানীয় নেতাজি সংঘ ক্লাব লিপি দাসের নিকট দুর্গা পূজার চাঁদা হিসাবে ৫ হাজার টাকা দাবি করে। কিন্তু লিপি দাস ৫ হাজার টাকা চাদা দিতে অস্বীকার করেন। তিনি এক হাজার টাকা চাঁদা দেওয়ার কথা জানান।
কিন্তু নেতাজি সংঘ ক্লাবের সদস্যরা ১ হাজার টাকা চাঁদা নিতে অস্বীকার করে এবং হুমকি দেয় দোকান আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেওয়া হবে। এরই মধ্যে শনিবার রাতে লিপি দাসের দোকানটি ভাংচুর করে দিয়ে যায় কে বা কারা। শনিবার সকালে লিপি দাস দোকানে গিয়ে দোকানের দৃশ্য দেখে কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন। তিনি জানান এই ঘটনা নেতাজির সংঘের দুর্বৃত্ত বাহিনী সংঘটিত করেছে। অত্যন্ত কষ্ট করে তিনি দোকানটি দিয়েছিলেন। যা সহ্য হয়নি স্থানীয় চাঁদাবাজদের চোখে। তারপর এ বিষয়টি যখন সংবাদ মাধ্যমে উঠে আসে তখন নেতাজি সংঘের চাঁদা সংগ্রহকারীরা স্থানীয় কিছু পুরুষ মহিলাকে দিয়ে রাস্তা অবরোধ করে অভিযোগ তুলে এ দোকানে নাকি নেশা সামগ্রী বিক্রি হয়। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে ছুটে আসে মহকুমা পুলিশ আধিকারিক।
তিনি জানান যদি এরকম কোন ধরনের অভিযোগ থাকে তাহলে এলাকাবাসী সাথে আসুক পুলিশ দোকানটি তল্লাশি করবে। কিন্তু ষড়যন্ত্রকারীরা পুলিশের কথামতো রাজি হয়নি। তাদের দাবি দোকানকে একেবারে বন্ধ করে দিতে হবে। শেষ পর্যন্ত মহকুমা পুলিশ আধিকারিক তাদের কথামতোই দোকানটি বন্ধ করে দিয়ে যায়। কিন্তু প্রশ্ন হলো, পুলিশ কিভাবে দোকানটি বন্ধ করতে পারল? যারা চাঁদাবাজ তারা কিভাবে দোকানে এসে মালিককে ধমকাচ্ছেন সেটা ক্যামেরায় স্পষ্ট ধরা পড়েছে। শাসক দলের নাম ভাঙ্গিয়ে তারা দীর্ঘদিন ধরে এলাকায় এ ধরনের চাঁদাবাজি রাজ করে চলেছে। মুখ্যমন্ত্রীর কড়া নির্দেশকে পর্যন্ত পাত্তা দিচ্ছে না স্থানীয় নেতাজির সংঘের গুন্ডারা। এবার এলাকাবাসীকে ফুসলিয়ে ষড়যন্ত্র করে রাস্তায় নামিয়ে পুলিশকে বাধ্য করেছে দোকান বন্ধ করতে। অথচ পুলিশ ষড়যন্ত্রকারীদের পক্ষে হয়ে এখন পর্যন্ত কাউকে গ্রেফতার পর্যন্ত করেনি। এটা কেমন সুশাসন? একজন ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীকে দোকান চালাতে গেলে চাঁদা দিতে হবে তার সাধ্যের বাইরে গিয়ে সেটা তো কোথাও লেখা নেই! এ ধরনের ঘটনা অবশ্যই সরকারের মুখ পুড়বে। কিভাবে লজ্জায় মুখ রক্ষা করবে সেটা নিয়ে আঙ্গুল উঠবে। কারণ পুলিশ কোন রকম প্রমাণ ছাড়া দোকান বন্ধ করতে পারে না। এখন দেখার বিষয় সরকার এদিকে মুখ ফিরিয়ে চায় কিনা।

