স্যন্দন ডিজিটাল ডেস্ক। আগরতলা। ১৭ আগস্ট : ৭৬ তম স্বাধীনতা দিবসের দিন রাতের বেলা পুলিশের সদর কার্যালয় থেকে ১৬৫ টি ফাইল চুরি হয়ে যায়। ফাইলগুলিতে ছিল দুর্নীতির বহু তদন্তের রিপোর্ট। পরে পশ্চিম থানার পুলিশ এবং বটতলা ফাড়ি পুলিশের যৌথ অভিযান চালিয়ে বুধবার দুই চোরকে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয়। একই সঙ্গে ৩ জন দোকানদারকে আটক করে পশ্চিম থানায় নিয়ে আসা হয়। পুলিশ আধিকারিক শংকরলাল পুরোকায়স্ত ১৬৫ টি ফাইল চুরির অভিযোগ দায়ের করেছিলেন। চুরি যাওয়া C.N.13/22/ US 457/380 CPC ফাইলগুলো সম্পর্কে উল্লেখ করা হয়েছিল অভিযোগ পত্রে। ধৃত দুই চোরের নাম বিজয় ঋষি দাস ওরফে কালু এবং তাপস আচার্য। বিজয় ঋষি দাসের বাড়ি বিলোনিয়ার কালিনগরে। তাপস আচার্যের বাড়ি ভট্টপুকুরে। ফাইলগুলো যারা কিনেছিলেন তারা হলেন অমিত দে , সুব্রত সূত্রধর। তাদের দোকান বটতলার হাওড়া মার্কেটে। আর তৃতীয় জন হচ্ছেন নেতাজি চৌমুহনির ব্যবসায়ি সুমন দে।
বাইপাস সংলগ্ন সুমন দের গোডাউন থেকে ফাইল গুলি উদ্ধার করা হয় মঙ্গলবার গভীর রাতে। পুলিশের এক বিশ্বস্ত সূত্রে খবর ফাইলগুলো চুরি হয়েছে লিগেল সেল থেকে। সরকারের বিভিন্ন দপ্তরের কোনো ইস্যুকে কেন্দ্র করে কোনো ধরনের অভিযোগ দাখিল করা হলে সেই সমস্ত অভিযোগগুলোকে এই লিগেল সেলে ফাইল বন্দী করে রাখা হয়। কী ভাবে চোরেরা পেছন দিক থেকে এসে জানালার রড খুলে নিয়ে ভেতরে ঢুকে এই ১৬৫ টি ফাইল চুরি করে নিয়ে যায় , সে সমস্ত তথ্য তুলে ধরেন পুলিশেরই এক কর্মী। বর্তমান সরকারের আমলে পুলিশের সদর কার্যালয় যে নিরাপদ নয়, তা স্পষ্ট হয়ে গেছে এই ঘটনায়। কিন্তু প্রশ্ন থাকছে কার দুর্নীতি ঢাপা-চাপা দিতে এ ধরনের ঘটনা। এর পেছনে বহু পুলিশ আধিকারিক জড়িত থাকতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে বলে সূত্রে খবর।
এদিকে ঘটনার তীব্র নিন্দা জানান বিরোধী দলনেতা মানিক সরকার। পুলিশের সদর কার্যালয় থেকে গত ১৫ আগস্ট গুরুত্বপূর্ণ ১৬৫ টি ফাইল গায়েব হয়ে যাওয়ার ঘটনার সুষ্ঠ তদন্তের দাবি জানিয়ে তিনি বুধবার মুখ্যমন্ত্রী ডাঃ মানিক সাহাকে চিঠি প্রদান করেন। তিনি বলেন এ ধরনের ঘটনা সম্পূর্ণভাবে অভাবনীয়। এটা সাধারণ চুরির ঘটনা বলে মনে করার কোন কারণ নেই। এই ফাইল সমূহ সরিয়ে নেওয়ার পেছনে সরকার তথা প্রশাসনের কোনো না কোনো অংশে স্বার্থযুক্ত রয়েছে বলে চিঠিতে তিনি আশঙ্কা প্রকাশ করেন। এই ফাইল সরিয়ে নেওয়া বা গায়েব করার পেছনে গভীর রহস্য ও ষড়যন্ত্র রয়েছে বলে মনে করলে ভুল কিছু হচ্ছে বলে মনে করার কোন কারণ নেই বলেও জানান। শ্রী সরকার আরো বলেন এটা বিস্ময়কর উত্তেজজনক ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে পুলিশ সদর থেকে প্রাথমিক পরিক্রিয়া যে বিবৃতি দেওয়া হয়েছে তা জনমনের সন্দেহ আরো গভীর করেছে। তাই মুখ্যমন্ত্রী ত্রিপুরা পুলিশের ইতিহাসে প্রথম ঘটে যাওয়া সেই শিহরিত হবার মতো বিষয়ের যথারীতি কিনারা করতে নিশ্চয়ই দ্রুততার সাথে কার্যকরী ব্যবস্থা গ্রহণ করবে বলে জানান বিরোধী দলনেতা। এর জন্য সাধারণ প্রশাসন এবং পুলিশ প্রশাসনের উচ্চ পর্যায়ে নির্ভীক একাধিক অফিসারকে অবিলম্বে দায়িত্ব দেওয়া প্রয়োজন বলে অভিমত ব্যক্ত করে তিনি। পাশাপাশি চিঠিতে তিনি উল্লেখ করে বলেন ত্রিপুরাবাসী অপেক্ষায় থাকবে মুখ্যমন্ত্রী ভূমিকা এবং পদক্ষেপ গ্রহণের বিষয়ে।