স্যন্দন ডিজিটাল ডেস্ক, আগরতলা, ১০ সেপ্টেম্বর : প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর নেতৃত্বে তিনটি যুগান্তকারী আইন তথা ভারতীয় ন্যায় সংহিতা, ভারতীয় নাগরিক সুরক্ষা সংহিতা এবং ভারতীয় সাক্ষ্য অধিনিয়ম চালু করা হয়েছে। এই তিনটি নতুন নাগরিক বান্ধব ফৌজদারী আইনের উদ্দেশ্য বিচার ব্যবস্থার মান বৃদ্ধি করা এবং এই প্রক্রিয়ায় আরো স্বচ্ছতা ও গতি সুনিশ্চিত করা। বুধবার রাজধানীর হাঁপানিয়াস্থিত ইন্ডোর এক্সিবিশন হলে নতুন ফৌজদারি আইন সম্পর্কিত রাজ্যস্তরীয় প্রদর্শনীর আয়োজন করা হয়।
প্রদীপ প্রজ্জলন করে এই প্রদর্শনীর উদ্বোধন করেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী ডাক্তার মানিক সাহা। পরবর্তী সময় অনুষ্ঠানে আলোচনা করতে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী ডাক্তার মানিক সাহা বলেন নতুন তিনটি ফৌজদারী আইনের ফলে অনেক সুবিধা হবে। এই ফৌজদারী আইনে উল্লেখ রয়েছে অভিযোগ জমা পড়লে ৩০ দিনের মধ্যে পুলিশকে আদালতে অভিযোগ প্রেরন করতে হবে। নতুন তিনটি ফৌজদারী আইন অনুযায়ী কোন ব্যক্তি যদি প্রথম বারের মতো অপরাধ করে তার সাজা কম করার সুযোগ রয়েছে। নতুন ফৌজদারী আইন অনুযায়ী আসামিকে সমাজ সেবা মূলক কাজের মাধ্যমে সাজা দেওয়ার সুযোগ রয়েছে। জিরো এফআইআর এর মাধ্যমে যে কোন ব্যক্তি যে কোন থানায় মামলা দায়ের করতে পারবে। অভিযোগ কারিকে বিনামূল্যে রিসিভ কপি দিতে হবে পুলিশকে। মানুষকে সঠিক সময়ে ন্যায় দেওয়া না গেলে আইন ব্যবস্থার প্রতি মানুষের আস্তা উঠে যাবে।
তার জন্য প্রধানমন্ত্রী সময় উপযোগী সিদ্ধান্ত নিয়ে নয়া তিনটি ফৌজদারী আইন লাগু করেছেন বলে অভিমত ব্যক্ত করেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি আরও বলেন নয়া তিনটি ফৌজদারী আইন লাগু করার ক্ষেত্রে ত্রিপুরা ভালো জায়গায় রয়েছে। তারপরও কিছু কিছু জায়গায় খামতি রয়েছে। সমগ্র দেশের মধ্যে ত্রিপুরা একমাত্র রাজ্য যেখানে নয়া তিনটি ফৌজদারী আইনের বিষয়ে রাজ্য স্তরে প্রদর্শনীর আয়োজন করা হয়েছে। নয়া তিনটি ফৌজদারী আইনের ফলে বিচার ব্যবস্থা আরও উন্নত হবে বলে দাবি করেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি আরও বলেন নয়া ফৌজদারী আইন অনুযায়ী মহিলা ও শিশু সংক্রান্ত মামলার ক্ষেত্রে দুই মাসের মধ্যে তদন্ত শেষ করতে হবে।
তদন্তের অগ্রগতির বিষয়ে অভিযোগকারিকে সময়ে সময়ে অবগত করতে হবে। নারি গঠিত অপরাধের ক্ষেত্রে মহিলা বিচারকের উপস্থিতিতে নির্যাতিতার জবান বন্দী রেকর্ড করতে হবে। যদি মহিলা বিচারক না থাকে তবে একজন মহিলার উপস্থিতিতে পুরুষ বিচারক জবান বন্দী রেকর্ড করতে পারবেন। অভিযোগ জানানোর ১৪ দিনের মধ্যে অভিযুক্ত ও নির্যাতিতাকে অভিযোগ পত্র, জবান বন্দী, চার্জশিটের কপি প্রদান করতে হবে। নয়া ফৌজদারী আইন অনুযায়ী সাক্ষিদের নিরাপত্তার বিষয়টি সংশ্লিষ্ট রাজ্যের উপর ছাড়া হয়েছে। বক্তব্য রাখতে গিয়ে রাজ্য পুলিশের মহা নির্দেশক অনুরাগ ধ্যান কর বলেন নতুন এই ফৌজদারী আইন চালু করা ভারত সরকারের এটা একটা ক্রান্তিকারী পদক্ষেপ। নতুন এই ফৌজদারি আইনের ফলে সাধারণ মানুষ সুষ্ঠুভাবে বিচার ব্যবস্থার পরিষেবা গ্রহণ করতে পারবে। এর জন্যই ভারত সরকার পুরনো আইন বদল করে এতে ব্যাপক পরিবর্তন আনে। এইদিনের অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী ডাক্তার মানিক সাহা ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন রাজ্যের মুখ্য সচিব জে.কে সিনহা, স্বরাষ্ট্র দপ্তরের সচিব সহ রাজ্য পুলিশের অন্যান্য আধিকারিকরা। বুধবার থেকে শুরু হওয়া এই প্রদর্শনী চলবে ১৪ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত।

