স্যন্দন ডিজিটাল ডেস্ক, ১৮ ডিসেম্বর: প্রতিষ্ঠানের নীতিমালা না মানলে চাকরি থাকবে না- কর্মীদের সাফ জানিয়ে দিয়েছে সার্চ জায়ান্ট গুগল। টিকা নেওয়ার প্রমাণ না দিতে পারলে প্রথমে বেতন দিয়েই ছুটিতে পাঠানো হবে কর্মীদের, পরবর্তীতে ছাটাই করা হবে তাদের।
অভ্যন্তরীণ একটি মেমো থেকে করোনা মহামারীর টিকা নিয়ে গুগলের এই কঠোর অবস্থান সম্পর্কে জানতে পেরেছে মার্কিন টিভি চ্যানেল সিএনবিসি। বেশ কিছু দিন ধরেই কর্মীদের অফিসে ফিরিয়ে আনতে চাইছে গুগল। করোনা সংক্রমণ হারের ওঠা-নামাসহ নানা ঘটনায় বারবার পিছিয়েছে গুগল কর্মীদের নিজ কর্মস্থলে ফেরার দিনক্ষণ। কর্মীরা কর্মস্থলে সশরীরের যোগ দেওয়ার আগেই করোনার টিকা নিয়ে নেবেন– এমনটাই প্রত্যাশা করছে প্রতিষ্ঠানটি।
মার্কিন টিভি চ্যানেলের মাধ্যমে ফাঁস হওয়া অভ্যন্তরীণ নথির সত্যতা নিশ্চিত করেছে গুগল। প্রতিষ্ঠানটির এক মুখপাত্র বিবিসিকে বলেছেন, “আমরা আগেও যেমন বলেছি, আমাদের সেবাগুলো অব্যাহত রাখার জন্য এবং কর্মীদের নিরাপদ রাখার জন্য টিকা নিয়ে এই বাধ্যবাধকতা অন্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।”
“আমাদের যেসব কর্মীর টিকা নেওয়ার সুযোগ আছে এবং নিয়েছেন, তাদের সহযোগিতা করতে আমরা প্রতিজ্ঞাবদ্ধ। আমরা আমাদের টিকা নীতিমালা নিয়ে অনড় থাকবো।”
সিএনবিসি’র প্রতিবেদন অনুযায়ী, টিকা নিয়েছেন তার প্রমাণ দিতে কর্মীদের ৩ ডিসেম্বর পর্যন্ত সময় দিয়েছিল গুগল। কোনো শারীরিক সমস্যা বা ধর্মীয় কারণে টিকা নিতে না পারলে সেটাও প্রতিষ্ঠানকে জানাতে বলেছে এই সার্চ জায়ান্ট।
১৮ জানুয়ারির মধ্যে নির্দেশনা অনুযায়ী কাজ না করলে প্রথমে কর্মীদের ৩০ দিনের জন্য বেতন দিয়েই ছুটিতে পাঠাবে গুগল। এরপর আরও ছয় মাসের জন্য ছুটি দেওয়া হবে ওই কর্মীদের, তবে এবার কোনো বেতন পাবেন না তারা। ওই ছয় মাসের মধ্যেও টিকা নেওয়ার প্রমাণ না দিতে পারলে ছাটাই করা হবে তাদের।
বিবিসি বলছে, কর্মীদের সশরীরে ফেরা প্রসঙ্গে হ-য-ব-র-ল পরিস্থিতিতে পরেছে শীর্ষস্থানীয় প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানগুলো। পরিস্থিতি আরও জটিল করে তুলেছে মার্কিন কর্তৃপক্ষের নীতিমালা আর করোনা মহামারীর দ্রুত পরিবর্তনশীল পরিস্থিতি।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের “অকুপেশনাল সেইফটি অ্যান্ড হেলথ অ্যাডমিনিস্ট্রেশন”-এর নির্দেশনা বলছে, একশ’ বা তার বেশি কর্মী থাকলে প্রতিষ্ঠানগুলোকে হয় নিশ্চিত করতে হবে যে তাদের সবাই টিকা নিয়েছেন, অথবা প্রতি সপ্তাহে একবার করে করোনা টেস্ট করাতে হবে ওই কর্মীদের।
ওই নির্দেশনা কার্যকর হওয়ার কথা ছিল ৪ জানুয়ারি থেকে। কিন্তু আদালতের মাধ্যমে ওই নির্দেশনাকে চ্যালেঞ্জ করায়, আপাতত কার্যকর হচ্ছে না সেটি।
জুলাই মাসেই গুগল বলেছিল, কর্মস্থলে সশরীরের হাজির কর্মীদের টিকা নেওয়া থাকতে হবে, কেবল টেস্ট করালেই চলবে না। আর ঘরে বসে কাজ করেও দায়িত্ব ঠিকঠাক দায়িত্ব পালন করতে পারছেন এমন কর্মীরা ওই বাধ্যবাধকতার অন্তর্ভূক্ত হবেন না।
কিন্তু পরিস্থিতি আরও ঘোলাটে হয়েছে গুগলের বক্তব্যেই। কর্মীদের ঘরে বসে কাজের সুযোগ দেওয়ার কথা বলে, বেশিরভাগ কর্মী সপ্তাহে অন্তত তিন দিন কর্মস্থলে সশরীরের উপস্থিত থাকবেন এমন প্রত্যাশার কথাও বলেছে প্রতিষ্ঠানটি। যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক কর্মীরা ঘরে বসে কাজ চালিয়ে গেলে তাদের বেতন কাটা হবে, এমন কথাও বলেছে প্রতিষ্ঠানটি।