স্যন্দন ডিজিটেল ডেস্ক, ২০ নভেম্বর: দরিভাল জুনিয়র ব্রাজিলের কোচের দায়িত্ব নেন গত ৮ জানুয়ারি। মাঝের এই ৩১৭ দিনের ব্যবধানে তাঁর অধীনে ১৪ ম্যাচ খেলেছে ব্রাজিল। ৬ জয়, ২ হার এবং ৭ ড্র। ড্র ম্যাচের মধ্যে গত ২ জুলাই কোপা আমেরিকায় কোয়ার্টার ফাইনালে ব্রাজিল-উরুগুয়ে ম্যাচও আছে। সে ম্যাচে গোলশূন্য ড্রয়ের পর টাইব্রেকারে হেরে বিদায় নিয়েছিল ব্রাজিল। সে যা হোক, রসিকতা করে কেউ চাইলে ব্রাজিলের এই কোচকে অন্য নামেও ডাকতে পারেন।যেমন ধরুন ‘ড্র-রিভাল’। ব্যাপারটা আরেকটু নিখুঁত করতে তাঁকে ‘ড্র-রাইভাল’ও বলা যায়। মানে, প্রতিদ্বন্দ্বীর সঙ্গে ড্র। ব্রাজিলিয়ান ফুটবলে জয়ই যেখানে শেষ কথা, সেখানে অর্ধেক ম্যাচ ড্র করে বসলে এমন নাম কি বাড়াবাড়ি হয়? সম্ভবত না।
চলতি মাসে বিশ্বকাপ বাছাইয়ে দুটি ম্যাচেই ড্র করল ব্রাজিল। ভেনেজুয়েলা ও উরুগুয়ের সঙ্গে ম্যাচ দুটিতে স্কোরলাইনও একই, ১-১। দক্ষিণ আমেরিকার বিশ্বকাপ বাছাইয়ের টেবিলে চতুর্থ স্থান থেকে এক ধাপ নিচে নেমে বছর শেষ করল ব্রাজিল। এই মহাদেশ থেকে শীর্ষ ছয় দল সরাসরি সুযোগ পাবে বিশ্বকাপে। সপ্তম দলটিকে খেলতে হবে প্লে অফ।ব্রাজিলিয়ানদের কাছে ফলই সবকিছু। সেটা আমিও জানি। ক্লাবগুলোয় আমার জীবন এভাবেই কেটেছে।সংবাদ সম্মেলনে ব্রাজিল কোচ দরিভাল জুনিয়র অর্থাৎ ব্রাজিলের বিশ্বকাপে খেলা নিয়ে এখনো দুশ্চিন্তার তেমন কিছু না থাকলেও এক ধাপ নিচে নেমে বছর শেষ করার ব্যাপারটি কোনো কোনো সমর্থকের কাছে ভালো না–ও লাগতে পারে। কিন্তু দরিভাল সেই ধাঁচের মানুষ নন। তিনি উন্নতি দেখছেন এর মধ্যেই।
উরুগুয়ের সঙ্গে পয়েন্ট ভাগাভাগির পর আজ সংবাদ সম্মেলনে দরিভাল বলেছেন, সঠিক পথেই আছে ব্রাজিলিয়ান ফুটবল, ‘প্রতিমুহূর্তেই উন্নতি হচ্ছে। সব খেলোয়াড়ের পারফরম্যান্সেই তা দেখছি। শেষ দুই ম্যাচে আমরা ভালো খেলেছি। ভাগ্যটা আরেকটু ভালো হতে পারত। আরও একটি গোল পেলে দ্বিতীয়স্থানে থেকে বছর শেষ করতে পারতাম। আমার মনে হয়, অনেক কিছুই পাল্টেছে। আমরা সঠিক পথেই আছি। আমরা ফল চাই এবং সেটার খুব কাছাকাছিই আছি।’দরিভাল যে এখনো ব্রাজিলের আদর্শ দলটি ঠিক করতে পারেননি সেটিও স্বীকার করে নিয়েছেন পরোক্ষভাবে, ‘আদর্শ দলটা বের করতে আমাদের ধৈর্য ধরতে হবে, যে দলটা সমর্থকদের আরও আত্মবিশ্বাস এনে দেবে।’কোচের দায়িত্ব নেওয়ার প্রায় এক বছরের কাছাকাছি চলে আসার পরও সঠিক দলটা বাছাই করতে না পারা, খেলায় ব্রাজিলিয়ান ছন্দ খুঁজে ফেরা এবং ড্রয়ের পর ড্র—এভাবে চললে কোচের চাকরি থাকবে কি না, এমন প্রশ্নও করা হয়েছিল দরিভালকে।
দলের পারফরম্যান্স ফলের কারণে ঢাকা পড়ে যাচ্ছে, এমন দাবি করে ব্রাজিল কোচ উত্তরে বল ঠেলেছেন সিবিএফ সভাপতি এদনালদো রদ্রিগেজের কোর্টে, ‘আমার চেয়ে এই প্রশ্নের ভালো উত্তর দিতে পারবেন ফুটবল পরিচালক এবং সভাপতি। ব্রাজিলিয়ানদের কাছে ফলই সবকিছু। সেটা আমিও জানি। ক্লাবগুলোয় আমার জীবন এভাবেই কেটেছে।’ফন্তে নোভায় ম্যাচের প্রথমার্ধ শেষে ও শেষ দিকে স্বাগতিক দর্শকদের দুয়ো শুনেছে ব্রাজিল। কোচ নিয়ে বলেছেন, ‘সেটা অবশ্যই ফলের জন্য। প্রথমার্ধ শেষে দুয়োটা অনেক কম ছিল। প্রত্যাশিত ফল না পাওয়াটাও স্বাভাবিক। দর্শকেরা কিন্তু কোথাও হস্তক্ষেপ করেননি…সব জায়গাতেই আমরা সমর্থকদের ভালোবাসা পেয়েছি। ব্রাজিল দলে আমরা আত্মবিশ্বাস পুনরুদ্ধার করছি।’