স্যন্দন ডিজিটেল ডেস্ক, ১ নভেম্বর: আইপিএলের মেগা নিলামের আগে ধরে রাখা খেলোয়াড়ের তালিকা জমা দিতে ফ্র্যাঞ্চাইজিগুলোকে ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত সময় বেঁধে দিয়েছিল ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড (বিসিসিআই)। গতকাল শেষ দিনেই ফ্র্যাঞ্চাইজিগুলো তা নিশ্চিত করেছে। ১০ দল মিলে ধরে রেখেছে ৪৬ জন খেলোয়াড়।রুপির অঙ্কে ধরে রাখা খেলোয়াড়দের মধ্যে সবার ওপরে সানরাইজার্স হায়দরাবাদের হাইনরিখ ক্লাসেন।
দক্ষিণ আফ্রিকার এই উইকেটকিপার–ব্যাটসম্যানকে রেখে দিতে ২৩ কোটি রুপি খরচ করেছে হায়দরাবাদ। আইপিএলে ধরে রাখা (রিটেইনড) খেলোয়াড়দের মধ্যে ক্লাসেনই এখন সবচেয়ে দামি। যৌথভাবে দুইয়ে বিরাট কোহলি ও নিকোলাস পুরান। তাঁদের ধরে রাখতে ২১ কোটি রুপি দিতে হচ্ছে রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরু ও লক্ষ্ণৌ সুপার জায়ান্টসকে।প্রবল চাপের মধ্যেও দায়িত্ব নিয়ে খেলতে পারা, যেকোনো পরিস্থিতির সঙ্গে নিজেকে মানিয়ে নেওয়া এবং শুরু থেকেই ব্যাট হাতে ঝড় তুলতে পারা ক্লাসেনকে ধরে রাখতে হায়দরাবাদকে প্রভাবিত করেছে। তাঁর উইকেটকিপিং দক্ষতাও দুর্দান্ত।
আইপিএলে ধরে রাখা খেলোয়াড়দের মধ্যে সবচেয়ে দামি
খেলোয়াড় | দল | দাম |
হাইনরিখ ক্লাসেন | সানরাইজার্স হায়দরাবাদ | ২৩ কোটি রুপি |
বিরাট কোহলি | রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরু | ২১ কোটি রুপি |
নিকোলাস পুরান | লক্ষ্ণৌ সুপার জায়ান্টস | ২১ কোটি রুপি |
হায়দরাবাদের হয়ে সর্বশেষ দুই মৌসুম ১৭৭ ও ১৭১ স্ট্রাইক রেটে ব্যাট করেছেন ক্লাসেন। ৪১টি চারের সঙ্গে মেরেছেন ৬৩টি ছক্কা। স্বাভাবিকভাবেই তাঁর প্রতি অন্য দলগুলোর আগ্রহ বেড়ে গিয়েছিল। এ কারণেই ক্লাসেনকে রেখে দিতে ২৩ কোটি রুপি ঢেলেছে হায়দরাবাদ। অথচ ২০১৯ সালে তাঁকে মাত্র ৫০ লাখ রুপিতে কিনেছিল বেঙ্গালুরু। সেই মৌসুমে ৩ ম্যাচ খেলে মাত্র ৯ রান করেন। পরের তিন মৌসুম তাঁর প্রতি কোনো দলই আগ্রহ দেখায়নি।তবে বিশ্বজুড়ে অন্যান্য টি–টোয়েন্টি লিগে ভালো করে আবারও আইপিএল ফ্র্যাঞ্চাইজিগুলোর নজর কাড়েন। গত বছর তাঁকে ৫ কোটি ২৫ লাখ রুপিতে দলে ভেড়ায় হায়দরাবাদ। এক বছরের ব্যবধানে সেই দাম বেড়ে হয়েছে ২৩ কোটি রুপি। অর্থাৎ ক্লাসেনের পারিশ্রমিক বেড়েছে প্রায় সাড়ে ৪ গুণ!
আইপিএলের নতুন নিয়ম অনুযায়ী, একটি ফ্র্যাঞ্চাইজি সর্বোচ্চ ছয়জন খেলোয়াড় ধরে রাখতে পারে। এর মধ্যে কমপক্ষে পাঁচজন জাতীয় দলে খেলা (ক্যাপড প্লেয়ার) ক্রিকেটার হতে হয়। প্রথম তিনজনকে ধরে রাখতে যথাক্রমে ১৮ কোটি, ১৪ কোটি ও ১১ কোটি খরচ করতে হয়। শেষ দুজনের জন্য বরাদ্দ ১৮ ও ১৪ কোটি রুপি। সব মিলে ৭৫ কোটি রুপি।ক্লাসেন ছাড়াও হায়দরাবাদ ধরে রেখে প্যাট কামিন্স, অভিষেক শর্মা, ট্রাভিস হেড ও নিতীশ রেড্ডিকে। দলটির ধরে রাখা পাঁচ খেলোয়াড়ের শুরুতেই ক্লাসেনের নাম। সেই হিসেবে ক্লাসেনের ১৮ কোটি রুপি পাওয়ার কথা। কিন্তু একটি ফ্র্যাঞ্চাইজি চাইলেই ৭৫ কোটি রুপি পাঁচজন ক্যাপড ক্রিকেটারদের মধ্যে নিজেদের মতো করে বণ্টন করতে পারে। হায়দরাবাদ সেটাই করেছে। মানে ক্লাসেনকে আরও ৫ কোটি রুপি বেশি দিয়েছে।
কোহলি ও পুরানের ক্ষেত্রেও ব্যাপারটা একই রকম। অর্থ বণ্টনের সময় এই দুজনকে ৩ কোটি রুপি করে বেশি দিয়েছে বেঙ্গালুরু ও লক্ষ্ণৌ। পুরো আইপিএল ক্যারিয়ারে বেঙ্গালুরুর হয়েই খেলেছেন কোহলি। শোনা যাচ্ছে, আগামী মৌসুমে তিনি আবারও দলটির নেতৃত্বে ফিরবেন। ৩৭ বছর বয়সী এই ব্যাটসম্যান একটি রেকর্ডও গড়ে ফেলেছেন। তাঁর আগে ভারতের আর কোনো ক্রিকেটার আইপিএলে ২০ কোটি রুপি দাম পাননি।আইপিএলের মেগা নিলাম হওয়ার কথা নভেম্বরের শেষ সপ্তাহে। নিলামের ভেন্যু হিসেবে সৌদি আরবের জেদ্দা অথবা রিয়াদ, সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাই, ইংল্যান্ডের লন্ডন এমনকি সিঙ্গাপুরের নাম শোনা গেলেও এখনো চূড়ান্ত করা হয়নি।