স্যন্দন ডিজিটেল ডেস্ক, ২৫ অক্টোবর : ‘ওয়াশিংটন-ডে’ ব্যাপারটি বুঝতে কারও সমস্যা হওয়ার কথা নয়। এই টেস্টেই সাড়ে তিন বছর পর টেস্ট খেলতে নেমে দুর্দান্ত বোলিংয়ে চমকে দিয়েছেন ভারতের ওয়াশিংটন সুন্দার। টেস্টে আগে কখনও ইনিংসে তিন উইকেটের বেশি পাননি যিনি, আগের চার টেস্ট মিলিয়ে যার শিকার ছিল ৭টি, সেই তিনি দলে ফিরে একাই নিয়েছেন ৭ উইকেট। স্যান্টনারের বোলিংয়েও তেমন কিছুর আভাস দেখছিলেন স্মিথ।
কী দারুণভাবেই না সেটিকে সত্যি প্রমাণ করে ছাড়লেন স্যান্টনার!অসাধারণ বোলিংয়ে তিনিও শিকার করলেন ৭ উইকেট। পুনে টেস্টের দ্বিতীয় দিনে বাঁহাতি স্পিনের ধ্রুপদি প্রদর্শনীতে ভারতীয় ব্যাটিং ধসিয়ে দিলেন তিনি। ভারতের ইনিংস শেষ হয়ে গেল কেবল ১৫৬ রানেই। নিউ জিল্যান্ড পেল ১০৩ রানের লিড।আগের দিন ওয়াশিংটন ৭ উইকেট নিয়েছিলেন ৫৯ রানে। স্যান্টনার ৭টি নিলেন ৫৩ রানে। টেস্টে তো বটেই, দুজনেরই প্রথম শ্রেণির ক্যারিয়ারের সেরা বোলিং এটি।
ওয়াশিংটনের মতো স্যান্টনারও স্পিনিং অলরাউন্ডার। তবে লড়াইটা ছিল অনেক বেশি দীর্ঘ। এটি যে তার ২৯তম টেস্ট!৪৭ ইনিংস বোলিং করে তার সেরা পারফরম্যান্স ছিল ৩৪ রানে ৩ উইকেট। ইনিংসে ৩ উইকেট নিতে পেরেছিলেন আরও ৬ বার। এর বেশি কখনও আর যেতে পারেননি। ২৮ টেস্টে সব মিলিয়ে উইকেট ছিল ৫৪টি। তবু অলরাউন্ড সামর্থ্য ও কার্যকারিতা মিলিয়ে সুযোগ পেয়েছেন যথেষ্টই।
এই সিরিজের প্রথম টেস্টে অবশ্য তিনি ছিলেন একাদশের বাইরে। শ্রীলঙ্কায় যেমন পারফরম্যান্স তার ছিল, একাদশে জায়গার দাবি জানানোর উপায় ছিল না। গত মাসে শ্রীলঙ্কা সফরে দুই টেস্ট মিলিয়ে স্রেফ একটি উইকেট তার জুটেছিল ১৯৭ রান দিয়ে। ভারত সফরে তাই প্রথম টেস্টে ছিলেন দর্শক হয়ে।পুনেতে এই টেস্টে একাদশে তার জায়গা মেলে ম্যাট হেনরির খানিকটা চোট থাকায়। উইকেটের অবস্থা বুঝে কৌশলগত কারণেও তাকে একাদশে রাখার বিবেচনা হয়তো ছিল। সব মিলিয়ে সুযোগটা তিনি পেলেন এবং কাজে লাগালেন দারুণভাবে।
পিচে উইকেটে স্পিনারদের জন্য সহায়তা তো আছেই। সেই পিচের জন্য একদম আদর্শ গতিতে বোলিং করেছেন তিনি। তার গড় গতি ছিল ঘণ্টায় ৮৭.১ কিলোমিটার। এছাড়াও ফ্লাইট ও লুপ মিলিয়ে ভারতীয় ব্যাটসম্যানদের বিভ্রান্তি ফেলেন তিনি বারবার।শুবমান গিলকে ফিরিয়ে তিনি শুরু করেন শিকার ধরা। এরপর ফ্লাইটে ধাঁধায় ফেলেন তিনি ভিরাট কোহলিকে। আড়াআড়ি ব্যাটে খেলতে গিয়ে কার্যত ফুল টস বলে ব্যাট লাগাতে না পেরে বোল্ড হন ভারতীয় ব্যাটিংয়ের সবচেয়ে বড় তারকা।
দুই বাঁহাতি ইয়াসাসভি জয়সওয়াল ও রিশাভ পান্তকে আউট করেন অফ স্পিনার গ্লেন ফিলিপস। এরপর বাকিটা স্যান্টনারের গল্প। একে একে সারফারাজ খান, রাভিচান্দ্রান অশ্বিন ও রাভিন্দ্রা জাদেজাকে ফিরিয়ে পূর্ণ করেন তিনি টেস্ট ক্যারিয়ারের প্রথম পাঁচ উইকেট। পরে শেষ দুই উইকেট নিয়ে ভারতের লেজও ছেঁটে দেন দ্রুতই।প্রথম শ্রেণির ক্যারিয়ারে ৬৩ ম্যাচে আগে স্রেফ একবার ৫ উইকেট নিতে পেরেছিলেন তিনি। সব বদলে দেওয়ার শুরুটা হলো স্পিনে দক্ষ ভারতীয় ব্যাটিং গুঁড়িয়ে দিয়ে।