স্যন্দন ডিজিটেল ডেস্ক, ১৫ মে: রেয়াল মাদ্রিদের হয়ে আগেও লা লিগা ও চ্যাম্পিয়ন্স লিগ জিতেছেন আনচেলত্তি। তবে এবারের মৌসুমে তার চ্যালেঞ্জ ছিল এভারেস্টসম। মূল গোলকিপার থিবো কোর্তোয়া ও সেন্টার ব্যাক এদের মিলিতাও চোটের কারণে বাইরে ছিলেন প্রায় গোটা মৌসুম। আরেক সেন্টার ব্যাক ডাভিড আলাবা এখনও বাইরেই। চোটের কারণে উল্লেখযোগ সময় মাঠের বাইরে থাকতে হয়েছে ভিনিসিউস জুনিয়র, এদুয়ার্দো কামাভিঙ্গা ও অহেলিয়া চুয়ামেনিকে।ছোট-বড় মিলিয়ে মৌসুমে ৩৭টি চোটের ঘটনা ঘটেছে। কারিম বেনজেমা ক্লাব ছাড়ার পর সত্যিকারের কোনো গোলস্কোরার দলে যোগ করা হয়নি। এবারের মৌসুমে তাই রেয়ালকে নিয়ে সংশয় ছিল প্রবল।
কিন্তু সব সংশয় উড়িয়ে চার ম্যাচ বাকি রেখেই লা লিগা শিরোপা জিতে নেয় তারা। চ্যাম্পিয়ন্স লিগেও নক আউট পর্বে ম্যানচেস্টার সিটি, বায়ার্ন মিউনিখের কঠিন চ্যালেঞ্জ পেরিয়ে এখন তারা ফাইনালের। দলের এমন অভাবনীয় সাফল্যের নেপথ্য কারিগর আনচেলত্তি। এমনিতে তিনি কিংবদন্তি হলেও তার কোচিংয়ের ধরন নিয়ে নানা সময়ে নানা প্রশ্ন উঠেছে। কিন্তু এই মৌসুমে তিনি ছিলেন যেন প্রায় নিখুঁত। সুনিপুণভাবে পরিচালনা করেছেন দল, নিজের হাতে থাকা সম্পদগুলো ব্যবহার করেছেন উপযুক্তভাবে।আনচেলত্তি নিজেও তা অনুভব করতে পারছেন। লিগ শিরোপা জয়ের পর রেয়াল যেন হয়ে উঠেছে আরও বিধ্বংসী। গ্রানাদাকে ৪-০ গোলে হারানোর পর মঙ্গলবার তারা ৫-০ গোলে উড়িয়ে দিয়েছে আলাভেসকে। এই ম্যাচের পর আনচেলত্তি মূল্যায়ন করলেন এই মৌসুমের।“কোচ হিসেবে এটিই আমার সেরা মৌসুম। দল দুর্দান্ত পারফর্ম করে চলেছে এবং লিগে অসাধারণ খেলেছে। যোগ্য হিসেবেই এই দল লা লিগা জিতেছে, এখানে এক বিন্দু সংশয় নেই। অন্য দলগুলি আমাদের হোঁচট খাওয়ার অপেক্ষায় ছিল। কিন্তু আমরা তা হতে দেইনি।”
জোড়াতালি দেওয়া রক্ষণভাগ নিয়েও লা লিগায় নিজেদের ইতিহাসে এক মৌসুমে সবচেয়ে বেশি ম্যাচে জাল অক্ষত রাখার রেকর্ড তারা গড়েছে। আলাভেসের বিপক্ষে ম্যাচ দিয়ে এবার ২০ ম্যাচে গোল হজম করেনি তারা। এছাড়া গোটা মৌসুমে তারা হারেনি ঘরের মাঠে।“এটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ এক পরিসংখ্যান এবং মৌসুমজুড়ে রক্ষণভাগের সম্মিলিত কাজের পুরস্কার। লিগে একমাত্র পরাজয়টির পরই আমরা সবকিছু ঠিকঠাক করে ফেলি। দলের সাফল্যে এই রক্ষণভাগের অবদান বিশাল।আপাতত দল দুর্দান্ত ফর্মে থাকলেও শেষ কাজটি ভুলে যাচ্ছেন না আনচেলত্তি। ১ জুন বরুশিয়া ডর্টমুন্ডের বিপক্ষে চ্যাম্পিয়ন্স লিগ ফাইনালে সতর্ক দৃষ্টি রাখছেন তিনি।
“আমরা খুবই খুশি ও উচ্ছ্বাসে ভাসছি। তবে এই ফর্ম ধরে রাখতে হবে আমাদের, কারণ মৌসুমের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচটি এখনও খেলিনি।”গ্রানাদার বিপক্ষে ৪-০, আলাভেসের বিপক্ষে ৫-০ গোলের এসব জয় চ্যাম্পিয়ন্স লিগ ফাইনালের পথে এগিয়ে যেতে ও প্রস্তুত হতে দলকে সহায়তা করবে বলে মনে করেন আনচেলত্তি।“দলের ছন্দ, গতি, প্রেরণা ও ভালো পারফরম্যান্স ধরে রাখতে এই ম্যাচগুলি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। সামনে দুই সপ্তাহ আছে (চ্যাম্পিয়ন্স লিগ ফাইনালের জন্য)। এখন আমরা কয়েক দিন বিশ্রাম নেব, এরপর কিছু শারীরিক কাজ করব। দ্বিতীয় সপ্তাহে আমরা ট্যাকটিক্যাল কাজ শুরু করব। আপাতত এখন বিশ্রাম নেওয়া জরুরি। আমিও বিশ্রাম নেব।”