স্যন্দন ডিজিটেল ডেস্ক, ২০ জানুয়ারি: বেশ কিছুদিন অসুস্থ থাকার পর গত ৭ জানুয়ারি ইহলোকের মায়া ত্যাগ করেন বেকেনবাউয়ার। প্রিয় তারকাকে হারানোর শোক এখনও বয়ে বেড়াচ্ছে বায়ার্ন মিউনিখ, জার্মানি।ক্লাব ক্যারিয়ারে যে আঙিনায় সাফল্যে ভরা সোনালি সময় কাটিয়েছেন বেকেনবাউয়ার, সেই বায়ার্ন উদ্যোগ নেয় প্রিয় তারকাকে বিশেষভাবে শ্রদ্ধা জানানোর। কয়েকদিন ধরে ‘ধন্যবাদ ফ্রানৎস’ লেখা বার্তার সঙ্গে আলোকিত রাখা হয় আলিয়াঞ্জ অ্যারেনা।সেই আলিয়াঞ্জ অ্যারেনায় এবার আয়োজন করা হলো স্মরণসভা। দেশের প্রেসিডেন্ট, চ্যান্সেলর ওলাফ স্কোলজ, জার্মানির সাবেক ও বর্তমান খেলোয়াড় এবং ১০ হাজার দর্শক উপস্থিত ছিলেন অনুষ্ঠানে।৭৮ বছর বয়সে না ফেরার দেশে চলে যাওয়া বেকেনবাউয়ারের অধিনায়কত্বে ১৯৭৪ সালের বিশ্বকাপ জিতেছিল জার্মানি। পরে তার কোচিংয়ে জার্মানরা চ্যাম্পিয়ন হয় ১৯৯০ বিশ্বকাপ। অধিনায়ক ও কোচ হিসেবে বিশ্বকাপ জয়ের প্রথম কীর্তি গড়েন তিনি।
বিশ্বযুদ্ধ পরবর্তী সময়ে জার্মানির ফুটবলের আধুনিকায়ন, সাফল্য-সবকিছুর জন্য বেকেনবাউয়ারকে ‘ধন্যবাদ’ জানান জার্মান প্রেসিডেন্ট।“আমি জানি না, আকাশে অ্যাঞ্জেলরা কোনো খেলা খেলে কি-না, কিন্তু গত কয়েকদিন তারা হয়ত শুনে থাকতে পারে বাভারিয়ান সুরে তিনি বলছেন-বের হও এবং ফুটবল খেলো।”“তিনি সারা বিশ্বে পরিচিত ছিলেন এবং ফ্রানৎস ছিলেন প্রশংসিত, আদর্শ হিসেবে গ্রহণীয় এবং ভালোবাসা পাওয়া মানুষ। অনেকের জন্য তিনি ছিলেন আদর্শ; আমাদের সবার কাছে তিনি ছিলেন ভাগ্যের ছোঁয়া। একজন গ্রেট জার্মানকে হারিয়েছি আমরা এবং প্রেসিডেন্ট হিসেবে আমি বলব-ধন্যবাদ বেকেনবাউয়ার, সবকিছুর জন্য আপনাকে ধন্যবাদ।”মাঠের মাঝখানে বেকেনবাউয়ারের ছবি রাখা হয়, সেখানেই তার পরিবার, বন্ধু এবং ভক্তরা সবাই শ্রদ্ধা জানান।
জার্মানরা ভালোবেসে তাকে ডাকত ‘ডের কাইজার’ নামে। যেটির মানে ‘দা এমপেরর’ বা ‘সম্রাট।’ এই খেতাব তিনি পেয়েছিলেন তার আভিজাত্যপূর্ণ খেলার স্টাইল এবং ফুটবলের আঙিনায় রাজত্ব করার কারণে। দশকের পর দশক তিনি ছিলেন জার্মান ফুটবলের সাফল্যের সমার্থক।আলো ঝলমলে ক্যারিয়ারে সব বড় শিরোপাই জিতেছিলেন বেকেনবাউয়ার। কোচ হিসেবেও তিনি পেয়েছিলেন অভাবনীয় সাফল্য।জার্মানির হয়ে ১০৩ ম্যাচ খেলেন বেকেনবাউয়ার; খেলোয়াড় হিসেবে বিশ্বকাপ জয়ের দুই বছর পর উঁচিয়ে ধরেন ইউরোপিয়ান চ্যাম্পিয়নশিপের ট্রফিও।বায়ার্নের হয়ে ১৯৭৪ থেকে ১৯৭৬ পর্যন্ত টানা তিনটি ইউরোপিয়ান কাপ (বর্তমানে চ্যাম্পিয়ন্স লিগ) জেতেন বেকেনবাউয়ার। এছাড়া ক্লাব বিশ্বকাপ, ইউরোপিয়ান কাপ উইনার্স কাপ এবং ঘরোয়া পর্যায়ে জেতেন আটটি ট্রফি। এর মধ্যে চারটি বুন্ডেসলিগা ও ৪টি জার্মান কাপ।