Friday, January 24, 2025
বাড়িখেলাস্যামসনের সেঞ্চুরিতে ভারতের সিরিজ জয়

স্যামসনের সেঞ্চুরিতে ভারতের সিরিজ জয়

স্যন্দন ডিজিটেল ডেস্ক, ২২ ডিসেম্বর: পার্লে সিরিজ নির্ধারণী ম্যাচে ৭৮ রানে জিতেছে লোকেশ রাহুলের নেতৃত্বাধীন দল। প্রতিপক্ষের ২৯৬ রান তাড়ায় দক্ষিণ আফ্রিকা থেমেছে ২১৮ রানে। প্রমোশন পেয়ে তিনে নেমে ১০৮ রানের ম্যাচজয়ী ইনিংস খেলেছেন স্যামসন। তার সঙ্গে শতরানের জুটি গড়ার পথে ক্যারিয়ারের প্রথম ফিফটির দেখা পেয়েছেন তিলাক ভার্মা। দক্ষিণ আফ্রিকার হয়ে প্রায় একাই লড়াই করেছেন টন ডি জর্জি। তাকে কিছুটা সঙ্গ দেওয়া এইডেন মার্করাম ফিরেছেন অপ্রয়োজনীয় ঝুঁকি নিয়ে। অধিনায়কের বিদায়ের পরই মূলত ম্যাচ থেকে ছিটকে পড়া শুরু দক্ষিণ আফ্রিকার। পরে আর দলকে কক্ষপথে ফেরাতে পারেননি কেউ। বোল্যান্ড পার্কে বৃহস্পতিবার টস হেরে ব্যাট করতে নেমে শুরুতেই রজত পাতিদারকে হারায় ভারত। দুই অঙ্ক ছুঁয়েই ফেরেন আরেক ওপেনার সাই সুদার্শান। অনেকটা সময় ক্রিজে থাকলেও তেমন কিছু করতে পারেননি এই সিরিজে ভারতকে নেতৃত্ব দেওয়া লোকেশ রাহুল। মন্থর উইকেটে দক্ষিণ আফ্রিকার স্পিনারদের নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ে লম্বা একটা সময় রানের জন্য সংগ্রাম করে ভারত। সবচেয়ে বেশি ভুগছিলেন তিলাক ভার্মা। নিজের ৩৯তম বলে প্রথম বাউন্ডারির দেখা পান এই তরুণ, চার মেরে ৯ থেকে পৌঁছান ১৩ রানে। 

মাঝের ওভারগুলোতে সেভাবে স্ট্রাইক পাচ্ছিলেন না স্যামসন, কিন্তু ধৈর্য হারাননি তিনি। ১১ থেকে ৩০, এই ২০ ওভারে ভারত যোগ করতে পারে কেবল ৭৩ রান। কঠিন সময় পার করে দিয়ে ধীরে ধীরে রানের গতি বাড়ান তিলাক। স্বাগতিকদের স্পিন কিংবা পেস কিছুই ভাবাতে পারেনি স্যামসনকে। শুরু থেকেই আস্থার সঙ্গে খেলে যান তিনি। ৭৫ বলে ক্যারিয়ারের প্রথম পঞ্চাশ ছুঁয়ে বেশিদূর যেতে পারেননি তিলাক। কেশভ মহারাজকে ছক্কায় ওড়ানোর চেষ্টায় ধরে পড়েন সীমানায়। ভাঙে ১১৬ রানের জুটি। এতে ১ ছক্কা ও ৫ চারে তিলাকের অবদান ৭৭ বলে ৫২। ৬৬ বলে পঞ্চাশ ছোঁয়া স্যামসন গতি বাড়িয়ে ১১০ বলে স্পর্শ করেন তিন অঙ্ক, ক্যারিয়ারে প্রথমবার। শেষ পর্যন্ত তিনি ফেরেন তিন ছক্কা ও ছয় চারে ১১৪ বলে ১০৮ রান করে। মঞ্চ প্রস্তুত ছিল রিঙ্কু সিংয়ের জন্য। সেটা ভালোভাবেই কাজে লাগান বিস্ফোরক এই ব্যাটসম্যান। ২৭ বলে খেলেন ৩৮ রানের ঝড়ো ইনিংস। শেষ দিকে ছোট্ট, কিন্তু কার্যকর দুটি ক্যামিও ইনিংস খেলেন ওয়াশিংটন সুন্দর ও আর্শদিপ সিং। 

লম্বা সময় ধীর ব্যাটিংয়ের পরও ভারতের রান তিনশ’র কাছে যাওয়ার পেছনে বড় অবদান শেষ ২০ ওভারে তাদের দারুণ ব্যাটিং, দায় আছে দক্ষিণ আফ্রিকার এলোমেলো বোলিংয়েরও। এই সময়ে ১৬৪ রান তোলে সফরকারীরা। রান তাড়ায় টনি ডি জর্জির ব্যাটে শুরুটা ভালোই করে দক্ষিণ আফ্রিকা। তার সঙ্গে ৫৯ রানের শুরুর জুটিতে রিজ হেনড্রিকসের অবদান ২৪ বলে ১৯। রাসি ফন ডাসেনের দ্রুত বিদায়ের পর মার্করামের সঙ্গে ৬৪ রানের জুটিতে দলকে টানেন ডি জর্জি। সুন্দরের বলে অহেতুক রিভার্স প্যাডলের চেষ্টায় মার্করাম উইকেট বিলিয়ে এলে ভাঙে বিপজ্জনক জুটি। এরপর আর তেমন কোনো জুটি গড়তে পারেনি দক্ষিণ আফ্রিকা। খানিক পর ডি জর্জিও ফিরে গেলে শুরু হয় আসা-যাওয়ার মিছিল। ৮৭ বলে ৩ ছক্কা ও ৬ চারে ডি জর্জি করেন ৮১ রান। ৪১ রানে শেষ ৬ উইকেট হারিয়ে গুটিয়ে যায় দক্ষিণ আফ্রিকা। ৯ ওভারে একটি মেডেন দিয়ে ৩০ রান খরচায় ৪ উইকেট নিয়ে ভারতের সফলতম বোলার আর্শদিপ সিং। প্রথম ওয়ানডেতে ৩৭ রানে ৫ উইকেট নিয়েছিলেন তিনি। তিন ম্যাচে ১০ উইকেট নিয়ে সিরিজ সেরা এই পেসার।

সংক্ষিপ্ত স্কোর

ভারত: ৫০ ওভারে ২৯৬/৮ (পাতিদার ২২, সুদার্শান ১০, স্যামসন ১০৮, রাহুল ২১, তিলাক ৫২, রিঙ্কু ৩৮, আকসার ১, ওয়াশিংটন ১৪, আর্শদিপ ৭*, আভেশ ১*; বার্গার ৯-০-৬৪-২, উইলিয়ামস ১০-০-৭১-১, বিউরান হেনড্রিকস ৯-০-৬৩-৩, মুল্ডার ৭-০-৩৬-১, মহারাজ ১০-২-৩৭-১, মার্করাম ৫-০-১৯-০) 

দক্ষিণ আফ্রিকা: ৪৫.৫ ওভারে ২১৮ (রিজা হেনড্রিকস ১৯, ডি জর্জি ৮১, ফন ডার ডাসেন ২, মার্করাম ৩৬, ক্লসেন ২১, মিলার ১০, মুল্ডার ১, মহারাজ ১৪, বিউরান হেনড্রিকস ১৮, উইলিয়ামস ২, বার্গার ১*; মুকেশ ৯-০-৫৬-১, আর্শদিপ ৯-১-৩০-৪, আভেশ ৭.৫-০-৪৫-২, ওয়াশিংটন ১০-০-৩৮-২, আকসার ১০-০-৪৮-১) 

ফল: ভারত ৭৮ রানে জয়ী 

সিরিজ: তিন ম্যাচের সিরিজ ভারত ২-১ এ জয়ী 

ম্যাচ সেরা: সাঞ্জু স্যামসন 

সিরিজ সেরা: আর্শদিপ সিং

সম্পরকিত প্রবন্ধ

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে
Captcha verification failed!
CAPTCHA user score failed. Please contact us!

সবচেয়ে জনপ্রিয়

সাম্প্রতিক মন্তব্য