স্যন্দন ডিজিটেল ডেস্ক, ২২ জুন: ম্যাককালাম কোচের দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে যে আগ্রাসী ঘরানার ক্রিকেট খেলছে ইংল্যান্ড, সাবেক এই নিউ জিল্যান্ড অধিনায়কের ডাকনামের সঙ্গে মিলিয়ে সেটিই পরিচিতি পেয়ে গেছে ‘বাজবল’ নামে। তবে গত এক বছরে এই কৌশল দিয়ে দারুণ সাফল্য পেলেও অ্যাশেজের শুরুটা ভালো করতে পারেনি ইংলিশরা। এজবাস্টন টেস্টে যথারীতি আগ্রাসী ব্যাটিংয়ে ওভারপ্রতি ৪.৬১ রান তুলেছে তারা। কিন্তু প্রথাগত ঘরানার ক্রিকেট খেলে ওভারপ্রতি ৩.২০ রান করেই শেষ পর্যন্ত ম্যাচ জিতে নিয়েছে অস্ট্রেলিয়া। ম্যাচের পর অধিনায়ক বেন স্টোকস বলেছিলেন, পরাজয়ে আক্ষেপ থাকলেও দলের পারফরম্যান্সে তিনি গর্বিত। এবার একই কথা শোনা গেল ম্যাককালামের কণ্ঠে। বিনোদনদায়ী ক্রিকেট খেলতে পেরেই খুশি ইংল্যান্ড কোচ। “ছেলেদের নিয়ে আমি গর্বিত। কখনও কখনও কিছু ব্যাপার আমাদের পক্ষে আসেনি, তবে খেলাটির ধরনই এমন। আমি ও অধিনায়ক, আমরা বিশ্বাস করি, এভাবে খেললেই আমাদের সবচেয়ে সেরা সুযোগ আসবে। পাঁচদিন ধরে যারা টেস্ট ম্যাচটি দেখেছেন, তাদের মধ্যে খুব বেশি লোক যদি আমাদের খেলার ধরন নিয়ে ভিন্নমত পোষণ করেন, তাহলে আমি অবাকই হব।” “সবাই বিনোদন পেয়েছে। সবসময় জেতা সম্ভব নয় এবং আমরা তা অনুধাবন করি। আমরা আবার উঠে দাঁড়াব এবং দল হিসেবে চেষ্টা করব প্রতিপক্ষকে নাড়িয়ে দিতে। ছেলেরা যেভাবে খেলেছে, তাতে আমি সত্যিই গর্বিত।”
প্রথম দিনে শেষ বিকেলে আচমকাই ইংল্যান্ডের ইনিংস ঘোষণা করা নিয়ে আলোচনা-সমালোচনা চলছে। অতি আগ্রাসী হতে গিয়ে অস্ট্রেলিয়াকে উইকেট উপহার দিয়েছেন বেশ কজন ইংলিশ ব্যাটসম্যান। ১৩১ টেস্টের ক্যারিয়ারে প্রথমবারের মতো স্টাম্পড হয়েছেন জো রুট। অনেকেই তাই আঙুল তুলেছেন ইংল্যান্ডের কৌশলে। তবে ম্যাককালামের মতে, এই ম্যাচে তাদের কৌশলের যৌক্তিকতাই প্রমাণ হয়েছে। তিনি বরং কিছুটা আক্ষেপ করলেন ভাগ্যকে পাশে না পাওয়ায়। “অবশ্যই ম্যাচ জিততে পারলে আমাদের ভালো লাগত… কখনও কখনও খেলার ধরনই এমন… তবে আমার মনে হয়, যেভাবে আমরা খেলেছি, এতে আমাদের কৌশলের যথার্থতাই ফুটে উঠেছে। আমরা একটু সৌভাগ্যের ছোঁয়া পেলে ম্যাচের ফল অন্যরকমও হতে পারত।” ম্যাককালাম ও স্টোকস সাম্প্রতিক সময়ে বারবারই বলেছেন বিনোদনদায়ী ক্রিকেটের কথা। এই ম্যাচের পরও কোচ বললেন একই কথাই। ভিন্ন ঘরানার দুই দলের তুমুল লড়াইয়ে রোমাঞ্চকর এক সিরিজের মঞ্চও এখন প্রস্তুত বলে মনে করেন ম্যাককালাম। “অসাধারণ একটি টেস্ট ম্যাচ ছিল এবং ভিন্ন কৌশলের দুই দলের দারুণ লড়াই ছিল। তবে হেভিওয়েট বক্সিং ম্যাচের মতোই, সবার একই কৌশলে খেলা জরুরি নয়। চমৎকার একটি টেস্ট ম্যাচ ছিল এটি এবং আমি নিশ্চিত, বিশ্বজুড়ে যারা খেলাটি দেখেছে এবং এজবাস্টনে যারা ছিল, আমরাসহ সবাই দারুণ উপভোগ করেছি।” “আমাদের আমাদের ঘরানায় খেলেছি, খেলাটাকে সামনে এগিয়ে নিতে চেষ্টা করেছি। অস্ট্রেলিয়াও নিজেদের মতো খেলতে পেরে খুশি এবং এটিই তাদেরকে সাফল্যের পথে এগিয়ে নিয়েছে। আমি নিশ্চিত, গোটা সিরিজে তারা এই ঘরানাতেই খেলবে এবং এতে মুগ্ধতা জাগানিয়া একটি সিরিজের প্রেক্ষাপট তৈরি হয়ে গেছে।”