Saturday, July 27, 2024
বাড়িখেলাইংল্যান্ডে অন্তত তিন টেস্টে ওয়ার্নারকে দেখতে চান টেইলর

ইংল্যান্ডে অন্তত তিন টেস্টে ওয়ার্নারকে দেখতে চান টেইলর

স্যন্দন ডিজিটেল ডেস্ক,,১৮ এপ্রিল: ভারতের বিপক্ষে টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনাল ও পরে অ্যাশেজের জন্য অস্ট্রেলিয়ার দল ঘোষণা করা হবে এই সপ্তাহেই। সেখানে সবচেয়ে বেশি কৌতূহল টপ অর্ডার নিয়েই। আলোচনা কেন্দ্রে এখানে ওয়ার্নার।অভিজ্ঞ ওপেনারের ফর্ম নিয়ে কাটাছেঁড়া চলছে বেশ কিছু দিন ধরেই। দলে জায়গা হারানোর দুয়ারে দাঁড়িয়ে গত ডিসেম্বরে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে বক্সিং ডে টেস্টে দুর্দান্ত এক ডাবল সেঞ্চুরি উপহার দেন তিনি। ওই ইনিংসের আগে টানা ১০ ইনিংসে তার কোনো ফিফটি ছিল না। ডাবল সেঞ্চুরির পর চার ইনিংসে আবার ১৫ রানও পার হতে পারেননি। সব মিলিয়ে গত ৩২ ইনিংসে তার সেঞ্চুরি ওই একটিই। এর মধ্যে গত ফেব্রুয়ারিতে ভারত সফর অর্ধসমাপ্ত রেখেই দেশে ফেরেন তিনি কনুইয়ের চোট নিয়ে।ওয়ার্নারকে নিয়ে বড় একটি সংশয়ের কারণ ইংল্যান্ডে তার বাজে রেকর্ডও। টেস্টে তার ক্যারিয়ার ব্যাটং গড় ৪৫.৫৭, দেশের বাইরে গড় ৩১.৯৫ আর ইংল্যান্ডে গড় ২৬.০৪। ২৫ ইনিংস খেলেও ইংল্যান্ডে কোনো শতরান পাননি তিনি।ইংল্যান্ডে সবশেষ অ্যাশেজে ২০১৯ সালে ১০ ইনিংসে স্রেফ একটি ফিফটি করতে পেরেছিলেন তিনি (৬১), আরেকটি ইনিংসে করেছিলেন ১১। বাকি ৯ ইনিংসেই আউট হন দুই অঙ্ক ছোঁয়ার আগে। সিমিং কন্ডিশনে সুইঙ্গিং বলে তার দুর্বলতাও নতুন কিছু নয়।টেস্ট ক্যারিয়ারে সবচেয়ে বেশি ১৪ বার আউট হয়েছেন তিনি স্টুয়ার্ট ব্রডের বলে, ১০ বার আউট হয়েছেন জিমি অ্যান্ডারসনের বলে। এবারও ওয়ার্নারের জন্য বিভীষিকা হতে প্রস্তুতি নিচ্ছেন ইংল্যান্ডের পেসাররা।

কনুইয়ে চোট কাটিয়ে চলতি আইপিএলে খেরছেন তিনি। সেখানে রান পেলেও তিনি চেনা চেহারায় নেই। তুমুল সমালোচনার জন্ম দিয়েছে তার স্ট্রাইক রেট।তবে তার অভিজ্ঞতায় ভরসা রেখে ওভালে ৭ জুন শুরু হতে যাওয়া টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে তাকে রাখার সম্ভাবনা প্রবল। সেক্ষেত্রে অ্যাশেজেও তাকে আরও দুটি ম্যাচে সুযোগ দেওয়া উচিত, এএপিকে বললেন মার্ক টেইলর।“আমার ধারণা যদি সত্যি হয়, যা বুঝতে পাচ্ছি, ওভালে টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে তারা ডেভিডের (ওয়ার্নার) ওপর আস্থা রাখবে। টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ নিয়ে যদি এটিই অস্ট্রেলিয়ার ভাবনা হয়, তাহলে হ্যাঁ, অ্যাশেজেও তাকে দিয়েই তাদের শুরু করতে হবে।”“উসমান খাওয়াজা ও ওয়ার্নারকে টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে ওপেন করিয়ে এক সপ্তাহ পরই এজবাস্টনে (অ্যাশেজে) প্রথম টেস্টে ওপেনিং জুটিতে পরিবর্তন আনা খুব কঠিন হবে। টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে যে উদ্বোধনী জুটিকে তারা সেরা মনে করবে, (ইংলিশ) গ্রীষ্মের প্রথম তিন টেস্টে তাদেরকেই রাখা উচিত।”চ্যানেল নাইনের হয়ে ধারাভাষ্য দিতে এই সময়টায় ইংল্যান্ডে থাকবেন টেইলরও। অস্ট্রেলিয়াকে ৫০ টেস্টে নেতৃত্ব দিয়েছেন তিনি, দেশটির ইতিহাসেরা সেরা ক্রিকে মস্তিষ্কগুলোর মধ্যে রাখা হয় তাকে। বাঁহাতি এই ব্যাটসম্যান নিজেও ছিলেন ওপেনার।ইংল্যান্ডে টেইলরের রেকর্ড দুর্দান্ত। তার ক্যারিয়ার ব্যাটিং গড় ৪৩.৪৯, দেশের বাইরে গড় ৪৩.৬০, কিন্তু ইংল্যান্ডে তার গড় ৫২.৮০। দেশের বাইরে ৪৯ টেস্টে তার ৮ সেঞ্চুরি, এর মধ্যে ইংল্যান্ডেই ১৮ টেস্টে করেছেন ৫ সেঞ্চুরি। ইংল্যান্ডে খেলার রসায়নটা তাই তিনি ভালোই জানেন।

ম্যাট রেনশ ও ক্যামেরন ব্যানক্রফট। অস্ট্রেলিয়ার নির্বাচকরা অবশ্য আগেই ইঙ্গিত দিয়ে রেখেছেন, ইংল্যান্ডে এবার ৬ টেস্টকে তারা দুই ভাগে ভাগ করবেন। ভারতের বিপক্ষে টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনাল ও অ্যাশেজের প্রথম দুই টেস্ট থাকবে প্রথম ভাগে। অ্যাশেজের দ্বিতীয় টেস্টের পর আবার পুনর্বিবেচনা করা হবে স্কোয়াড।

টেইলর তার ভাবনা জানিয়েছেন বিকল্প ওপেনার নিয়েও। অ্যাশেজ পুরোটা পার করতে পারলেও ৩৬ বছর বয়সী ওয়ার্নারকে বেশি দিন আর দেখা যাবে না টেস্টে। তার উদ্বোধনী জুটির সঙ্গী উসমান খাওয়াজার বয়সও ৩৬ পেরিয়ে গেছে।বিকল্প হিসেবে নির্বাচকদের আস্থা আপাতত মার্কাস হ্যারিসকে নিয়ে। গত ১৫ মাস টেস্ট না খেললেও ৩০ বছর বয়সী এই বাঁহাতিকে সম্প্রতি কেন্দ্রীয় চু্ক্তিতে রাখা হয়েছে। তবে টেইলের বেশি আগ্রহ ক্যামেরন ব্যানক্রফট ও ম্যাট রেনশকে নিয়ে।“আমার সনাতনি ভাবনা হলো, ওপেনিংয়ে সবসময় ডান ও বাঁহাতির সমন্বয় চাই। টপ অর্ডারে তাই ক্যামেরন ব্যানক্রফটকে (ডানহাতি) আরেকটি সুযোগ পেতে দেখতে চাই। রেনশকেও দেখছি নিউ জিল্যান্ডে অনেক রান করছে (অস্ট্রেলিয়া ‘এ’ দলের হয়ে)। তবে অস্ট্রেলিয়ান গ্রীষ্মে ব্যানক্রফট রানের জোয়ার বইয়ে দিয়েছে।”“ব্যানক্রফটের একটি ব্যাপার আমার ভালো লাগে, যেটা রেনশর মধ্যেও আছে, মাঠে তাদের ক্যাচিং সামর্থ্য। পরবর্তী এক-দুই বছরের মধ্যে আমাদের দুজন ওপেনার প্রয়োজন হবে। হ্যারিসকে নিয়ে আমার দুভার্বনার মূল কারণ তার ফিল্ডিং। এই সিরিজ যেভাবে এগোবে বলে মনে হচ্ছে, তাতে ফিল্ডিং খুব গুরুত্বপূর্ণ হবে। আমার মনে হয়, এটাই হ্যারিসের বিপক্ষে যাবে, তার ফিল্ডিং খুব ভালো নয়।”ব্যানক্রফট তার ১০ টেস্টের সবশেষটি খেলেছেন ২০১৯ অ্যাশেজেই, ইংল্যান্ডে। এবারের শেফিল্ড শিল্ডে ওয়েস্টার্ন অস্ট্রেলিয়ার হয়ে ১১ ম্যাচে ৪ সেঞ্চুরিতে ৯৪৫ রান করেছেন তিনি ৫৯.০৬ গড়ে। টুর্নামেন্টে ৭০০ রানও করতে পারেননি আর কেউ। হ্যারিস ৯ ম্যাচে ৬০১ রান করেন ৩৭.৫৬ গড়ে।রেনশ শেফিল্ড শিল্ডে ৫ ম্যাচ খেলে ৩১০ রান করেন ৫১.৬৬ গড়ে। অস্ট্রেলিয়ার টেস্ট একাদশেও জায়গা ফিরে পান তিনি প্রায় ৫ বছর পর। ফেরার পর ৪ ইনিংস খেলে অবশ্য দুই অঙ্ক ছুঁতে পারেননি তিনি। তবে এরপর অস্ট্রেলিয়া ‘এ’ দলের হয়ে এই মাসেই নিউ জিল্যান্ড ‘এ’ দলের বিপক্ষে দুই ম্যাচে করেন দুটি সেঞ্চুরি, সঙ্গে আরেকটি ইনিংসে করেন ৭৮।

সম্পরকিত প্রবন্ধ

সবচেয়ে জনপ্রিয়

সাম্প্রতিক মন্তব্য