Tuesday, January 21, 2025
বাড়িখেলাযে ইতিহাস গড়া হয়নি মারাদোনা-দুঙ্গার, পারবেন কি লরিস?

যে ইতিহাস গড়া হয়নি মারাদোনা-দুঙ্গার, পারবেন কি লরিস?

স্যন্দন ডিজিটেল ডেস্ক, ১৬ ডিসেম্বর: ফ্রান্সের হয়ে সবচেয়ে বেশি ম্যাচ খেলার রেকর্ড চলতি বিশ্বকাপেই নিজের করে নিয়েছেন লরিস। আর অধিনায়ক হিসেবে তো দেশের হয়ে সবচেয়ে বেশি ম্যাচ খেলার কীর্তি অনেক দিন ধরেই তার। এবার ফরাসি গোলরক্ষকের সামনে সুযোগ নেতৃত্ব দিয়ে ইতিহাস গড়ার। লরিসের নেতৃত্বে ২০১৮ সালে নিজেদের দ্বিতীয় বিশ্বকাপ ঘরে তুলেছিল ফ্রান্স। বিশ্বকাপের প্রথম অধিনায়ক হিসেবে দুটি শিরোপা জিততে পারবেন কি-না এই ফুটবলার, উত্তর মিলবে দুদিন পরই। ২০০২ সালে ব্রাজিলের পর প্রথম দল হিসেবে টানা দুটি বিশ্বকাপের ফাইনালে উঠেছে ফ্রান্স। শিরোপা ধরে রাখার লড়াইয়ে আগামী রোববার আর্জেন্টিনার মুখোমুখি হবে তারা। লুসাইল স্টেডিয়ামের সবুজ আঙিনায় বাংলাদেশ সময় রাত ৯টায় শুরু ম্যাচটি। ২০০৮ সালে ফ্রান্সের হয়ে আন্তর্জাতিক অভিষেক লরিসের। এ নিয়ে ফরাসিদের তিনটি বিশ্বকাপে নেতৃত্ব দিচ্ছেন তিনি। ব্রাজিলে ২০১৪ সালের আসরে তার নেতৃত্বে কোয়ার্টার-ফাইনালে খেলেছিল ফ্রান্স। এবার ব্রাজিলের ৬০ বছর পর টানা দুটি বিশ্বকাপ জেতার কীর্তি গড়ার দুয়ারে শিরোপাধারীরা। ১৯৫৮ ও ১৯৬২ সালে বৈশ্বিক আসরের সেরার ট্রফি ঘরে তুলেছিল লাতিন আমেরিকার দলটি। রেকর্ড পাঁচটি শিরোপাও ব্রাজিলের। 

বিশ্বকাপে বেশ কয়েক জনের সামনে সুযোগ এসেছিল অধিনায়ক হিসেবে দুটি ট্রফি উঁচিয়ে ধরার। দল হেরে যাওয়ায় কিংবা দলে না থাকায় অথবা সতীর্থের কাছে নেতৃত্ব হারানোয় এখন পর্যন্ত এই কীর্তি গড়া হয়নি কারো। ব্রাজিলের সেন্টার-ব্যাক বেল্লিনি পেয়েছিলেন সুযোগটি। ১৯৫৮ সালে সুইডেনে সেলেসাওদের প্রথম শিরোপা জয়ে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন তিনি। চার বছর পরের আসরেও বিশ্বকাপ দলে ডাকা হয় তাকে। কিন্তু পুরো আসরে একটি ম্যাচও খেলার সুযোগ পাননি তিনি। ১৯৬২ সালের ওই আসরে ব্রাজিলকে নেতৃত্ব দেন মাউরো রামোস। লাতিন আমেরিকার দলটির দ্বিতীয় অধিনায়ক হিসেবে বিশ্বকাপ জেতেন তিনি। ১৯৫৮ সালের বিশ্বকাপজয়ী দলের সদস্যও ছিলেন রামোস, কিন্তু সেবার কোনো ম্যাচ খেলার সুযোগ পাননি। চার দশক পর ব্রাজিলের হোল্ডিং মিডফিল্ডার দুঙ্গাও গড়তে পারতেন অধিনায়ক হিসেবে টানা দুটি বিশ্বকাপ জেতার কীর্তি। তার নেতৃত্বে ১৯৯৪ সালে ইতালিকে টাইব্রেকারে হারিয়ে শিরোপা ঘরে তুলেছিল ব্রাজিল। চার বছর পরের আসরে আরেকটি বিশ্বকাপ জেতার খুব কাছে ছিল দুঙ্গার নেতৃত্বাধীন ব্রাজিল। কিন্তু সেবার ফাইনালে ফ্রান্সের বিপক্ষে ৩-০ গোলে হেরে যায় লাতিন আমেরিকার দলটি। জিনেদিন জিদানদের নিয়ে গড়া ফরাসি দলের যেটা ছিল প্রথম বিশ্বকাপ জয়। এবার লরিসের নেতৃত্বে টানা দ্বিতীয় শিরোপা ঘরের তোলার সুযোগ ফ্রান্সের। দুঙ্গার মতো একই অভিজ্ঞতা হয়েছিল আর্জেন্টিনা কিংবদন্তি মারাদোনারও। ১৯৮৬ সালে তার নেতৃত্ব ও একক নৈপুণ্যে নিজেদের দ্বিতীয় শিরোপা ঘরে তুলেছিল আর্জেন্টিনা। 

চার বছর পরের আসরে লাতিন আমেরিকার দলটি আবারও পৌঁছে গিয়েছিল ট্রফি ঘরে তোলার খুব কাছে। কিন্তু মারাদোনার দল এবার আর পেরে ওঠেনি। জার্মানদের কাছে ১-০ গোলে হেরে স্বপ্নভঙ্গ হয় তাদের। একমাত্র ফুটবলার হিসেবে তিনটি বিশ্বকাপ জেতার কীর্তি ব্রাজিল কিংবদন্তি পেলের। এখন পর্যন্ত ফুটবল ইতিহাসে দুটি করে বিশ্বকাপ জিতেছেন চার জন খেলোয়াড়। যাদের মধ্যে একজন ইতালিয়ান কিংবদন্তি জুজেপ্পে মেয়াস্সা। ১৯৩৪ ও ১৯৩৮ সালের দুটি আসরের ফাইনালেই ইতালির শুরুর একাদশে ছিলেন তিনি। কিন্তু দলকে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন তিনি কেবল ১৯৩৮ সালের শিরোপা নির্ধারণী ম্যাচে। যেখানে হাঙ্গেরিকে ৪-২ গোলে উড়িয়ে দিয়েছিল ইতালি। মেয়াস্সা চার বছর আগের আসরে খেললেও সেবার ইতালিকে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন জাম্পিয়েরো কম্বি। তাই মেয়াস্সাও পারেননি অধিনায়ক হিসেবে দুটি বিশ্ব সেরার ট্রফি উঁচিয়ে ধরতে। ফাইনালে খেলতে নামলে জার্মানির মানুয়েল নয়ারকে (১৯) ছাড়িয়ে গোলরক্ষক হিসেবে বিশ্বকাপে সবচেয়ে বেশি ম্যাচ খেলার রেকর্ড হয়ে যাবে লরিসের। উপলক্ষ নিশ্চয়ই রাঙিয়ে রাখতে চাইবেন তিনি।

সম্পরকিত প্রবন্ধ

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে
Captcha verification failed!
CAPTCHA user score failed. Please contact us!

সবচেয়ে জনপ্রিয়

সাম্প্রতিক মন্তব্য