Saturday, April 20, 2024
বাড়িখেলামুয়ানির সামনে স্বপ্নপূরণের হাতছানি

মুয়ানির সামনে স্বপ্নপূরণের হাতছানি

স্যন্দন ডিজিটেল ডেস্ক, ১৬ ডিসেম্বর: মুয়ানির কাছে অবশ্য বিশ্ব সেরার মঞ্চে খেলতে পারাটাই ছিল শৈশবের লালিত স্বপ্ন। তবে তা যে এত তাড়াতাড়ি পূরণ হয়ে যাবে, সেটি তার ভাবনাতেও থাকার কথা নয়। কারণ তারকায় ঠাসা ফ্রান্সের আক্রমণভাগে যেসব নাম ছিল, তাতে ২৬ জনের স্কোয়াডে জায়গা পাওয়া ছিল তার জন্য খুব কঠিন। শুরুতে পাননিও তিনি। কিন্তু ভাগ্যদেবী যেন ভিন্ন কিছুই লিখে রেখেছিলেন মুয়ানির জন্য। দেশ ছাড়ার আগে শেষ অনুশীলনে স্ট্রাইকার ক্রিস্তোফা এনকুনকুকে হারায় ফ্রান্স। তার জায়গায় দিদিয়ে দেশম দলে ডাকেন ২৪ বছর বয়সী মুয়ানিকে। ওই সময় জাতীয় দলে তার কেবল দুই ম্যাচে ১২ মিনিট খেলার অভিজ্ঞতা ছিল। দুটিই ছিল ২০২২-২৩ মৌসুমে উয়েফা নেশন্স লিগে, গত সেপ্টেম্বরে। বদলি হিসেবে নামা ওই ম্যাচগুলোয় জালের দেখা পাননি তিনি। তবে বিশ্বকাপ বিরতির আগে ক্লাব পর্যায়ে এই মৌসুমে দারুণ ছন্দে ছিলেন মুয়ানি। জার্মান ক্লাব ফ্রাঙ্কফুর্টের হয়ে সব প্রতিযোগিতা মিলিয়ে এবার ২৩ ম্যাচে ৮ গোল করার পাশাপাশি ১১টিতে সহায়তা করেছেন তিনি। বিশ্বকাপে নিজের অভিষেক অবশ্য সুখকর হয়নি মুয়ানির। শেষ ষোলো নিশ্চিত করে ফেলার পর তিউনিসিয়ার বিপক্ষে গুরুত্বপূর্ণ খেলোয়াড়দের অনেককেই বিশ্রাম দেন দেশম। এতে শুরুর একাদশে সুযোগ মেলে মুয়ানির। কিন্তু তার দলকে পেতে হয় হারের তেতো স্বাদ (১-০)। এরপর দ্বিতীয় সুযোগের জন্য মুয়ানিকে অপেক্ষা করতে হয় সেমি-ফাইনাল পর্যন্ত। মরক্কোর বিপক্ষে দ্বিতীয়ার্ধে বদলি হিসেবে যখন মাঠে নামেন দল তখন ১-০ গোলে এগিয়ে। তবে উজ্জীবিত আফ্রিকান দেশটি বেশ চাপে রেখেছিল দুইবারের বিশ্ব চ্যাম্পিয়নদের। 

তবে নিজের প্রথম স্পর্শেই চিত্রটা বদলে দেন মুয়ানি। মাঠে নামার ৪৪ সেকেন্ডের মধ্যেই দলকে ২-০ ব্যবধানে এগিয়ে উল্লাসে মেতে ওঠেন এই ফুটবলার। জাতীয় দলের পাশাপাশি বিশ্ব সেরার মঞ্চে নিজের প্রথম গোলের জন্য এর চেয়ে সেরা মঞ্চ সম্ভবত আর পেতেন না তিনি। নিয়মিত খেলার সুযোগ না পেলেও মাঠে নেমেই মুয়ানির এমন পারফরম্যান্সে খুশি দেশম। তার মতে, স্কোয়াডের সবার জন্য একটা বার্তা দিয়েছেন তিনি। “কোলোর (মুয়ানি) স্প্রিন্টিং দক্ষতা আরও বেশি তাৎপর্যপূর্ণ। সে যা করেছে তা অন্য সব খেলোয়াড়দের, যাদের খেলানো হয়নি এবং যারা খেলতে পারে তাদের জন্য একটা ভালো উদাহরণ ছিল। বেঞ্চও গুরুত্বপূর্ণ। এটি কোলোর জন্য ভালো এবং পুরো স্কোয়াডের জন্য আরও ভালো।” মুয়ানি মনে করেন, কোচ যখন বলবেন তখনই খেলার জন্য সবাইকেই প্রস্তুত থাকতে হবে। বললেন, বিশ্বকাপে গোল করার মাধ্যমে শৈশবের একটি স্বপ্নপূরণ হয়েছে তার। “আমি কি ছয় মাস আগে এই (মরক্কোর বিপক্ষে সেমি-ফাইনালে) গোল করার স্বপ্ন দেখেছিলাম? অবশ্যই। এমনকি দশ বছর আগে তা একই ছিল! এটি ছেলেবেলার স্বপ্ন।” শৈশবের স্বপ্নকে সবাই বাস্তবে রূপ দিতে পারেন না। মুয়ানি এরই মধ্যে তার একটির দেখা পেয়ে গেছেন। নিঃসন্দেহে আর দশটা ফুটবলারের মতো তারও স্বপ্ন রয়েছে বিশ্বকাপ জেতার। আগামী রোববার আর্জেন্টিনার বিপক্ষে সে সুযোগটা পাবেন তিনি। মাঠে নামার সুযোগ পান বা না পান, তার লক্ষ্য থাকবে একটাই, বিশ্ব সেরার মুকুট উঁচিয়ে ধরা। মুয়ানি কি পারবেন দারুণ একটি গল্পের অসাধারণ সমাপ্তি দিতে?

সম্পরকিত প্রবন্ধ

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

সবচেয়ে জনপ্রিয়

সাম্প্রতিক মন্তব্য