Monday, January 13, 2025
বাড়িখেলাএশিয়া তাকিয়ে কোরিয়া–জাপানের দিকে

এশিয়া তাকিয়ে কোরিয়া–জাপানের দিকে

স্যন্দন ডিজিটাল ডেস্ক, আগরতলা, ৫ ডিসেম্বর: ইতিহাসের একটা পাতা এরই মধ্যে নতুন করে লেখা হয়ে গেছে। ৯২ বছরের ইতিহাসে কাতার বিশ্বকাপেই যে প্রথম এশিয়ার তিনটি দলে উঠেছে শেষ ষোলোতে। সেই তিন দলের একটি অস্ট্রেলিয়ার বিশ্বকাপ অবশ্য গত পরশুই শেষ হয়ে গেছে। লিওনেল মেসির আর্জেন্টিনার কাছে হেরে বিদায় নিয়েছে সকারুরা। বিশ্বকাপে এশিয়ার পতাকা বয়ে নেওয়ার ভার এখন এশীয় ফুটবলের দুই পরাশক্তি জাপান ও দক্ষিণ কোরিয়ার কাঁধে।দূরপ্রাচ্যের এই দুই দলই মাঠে নামছে আজ। বাংলাদেশ সময় রাত নয়টায় জাপানের প্রতিপক্ষ গতবারের রানার্সআপ ক্রোয়েশিয়া। রাত একটায় পাঁচবারের চ্যাম্পিয়ন ব্রাজিলের বিপক্ষে মাঠে নামবে দক্ষিণ কোরিয়া। এশিয়ান ফুটবলে নতুন ইতিহাস কী লেখা হবে, নাকি এশিয়ার বিশ্বকাপে এশীয়দের পথচলা শেষ হয়ে যাবে আজই?বিশ্বকাপে এশিয়ার সর্বোচ্চ সাফল্য চতুর্থ হওয়া। ২০০২ বিশ্বকাপে সেই কীর্তি গড়ে বিশ্বকাপের সহ–আয়োজক দক্ষিণ কোরিয়া। আজ দোহার স্টেডিয়াম ৯৭৪-এ সেই কোরিয়ার পরীক্ষাটাই বড়। সামনে যে নেইমারের ব্রাজিল। হিউং-মিন সনের দক্ষিণ কোরিয়ার সামনে ইতিহাস বদলে দেওয়ার হাতছানি। ইতিহাসটা বিশ্বকাপে এশীয় দলের বিপক্ষে ব্রাজিলের রেকর্ড। এশীয় কোনো দলের বিপক্ষে ব্রাজিলিয়ানরা যে কখনোই হারেনি। তবে ব্রাজিলের এমন অজেয় রেকর্ড তো আফ্রিকার দলের বিপক্ষেও ছিল। কাতার বিশ্বকাপে এসেই তো সেই ঈর্ষণীয় রেকর্ড খুইয়েছে তিতের দল। ক্যামেরুনের কাছে গ্রুপ পর্বের শেষ ম্যাচের সেই হারের টাটকা ক্ষত নিয়েই আজ মাঠে নামবে ব্রাজিল।কোরীয়রা নেইমারদের সেই ক্ষতকে আরও দগদগে করতে পারবে কি না, কে জানে! তবে যদি আজও অঘটন ঘটেই যায়, সেটি এশিয়ার ফুটবল ইতিহাসের অন্যতম বড় কীর্তিই হয়ে থাকবে।দক্ষিণ কোরিয়া মাঠে নামার আগেই যদি জাপানিরাও সুখবর দিতে পারে, আর রাতে কোরিয়া যদি সেই সুখবরকে দ্বিগুণ করতে পারে, তবে তো নতুন এক দিগন্তই দেখবে এশিয়ান ফুটবল। এক বিশ্বকাপে এশিয়ার একাধিক দল যে কখনোই কোয়ার্টার ফাইনালে উঠতে পারেনি।এশিয়ার দলগুলো বিশ্বকাপের কোয়ার্টার ফাইনালেই অবশ্য উঠেছে মাত্র দুবার। প্রথমবার ১৯৬৬ সালে উত্তর কোরিয়া। ইংল্যান্ডের সেই বিশ্বকাপের শেষ আটে পর্তুগালের বিপক্ষে ৩-০ গোলে এগিয়ে গিয়েও শেষ পর্যন্ত হেরেছিল উত্তর কোরীয়রা। ইউসেবিও নামের এক ফুটবল জাদুকরের ভোজবাজিতে সেদিন কী করে যেন হেরে গিয়েছিল উত্তর কোরিয়া। চার-চারটি গোল করে সেদিন পর্তুগিজদের ৫-৩ গোলে জিতিয়েছিলেন মোজাম্বিক বংশোদ্ভূত ইউসেবিও। ৩৬ বছর পর উত্তরের সাফল্যকে ছাড়িয়ে যায় দক্ষিণ।

জাপানিরা অবশ্য দ্বিতীয় রাউন্ডে বাধা পেরোতে পারেনি কখনো। ২০০২ সালে ঘরের মাঠের বিশ্বকাপে দ্বিতীয় রাউন্ডে ওঠার পর ২০১৮ সালে রাশিয়া বিশ্বকাপেও শেষ ষোলোতে উঠেছিল। ২-০ গোলে এগিয়ে গিয়েও বেলজিয়ামের কাছে হেরে গিয়েছিল জাপানিরা।এবার কী হবে, জাপান কি রোস্তভের সেই দুঃস্মৃতি কবর দিতে পারবে আল ওয়াকরার আল জানুব স্টেডিয়ামে? গ্রুপ পর্বে দলটির পারফরম্যান্সে সেই আশা করতেই পারেন সমর্থকেরা। ‘ই’ গ্রুপে সাবেক দুই বিশ্ব চ্যাম্পিয়নকে পেছনে ফেলে জাপান গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হবে, কে ভাবতে পেরেছিলেন। চারবারের চ্যাম্পিয়ন জার্মানিকে হারিয়ে বিশ্বকাপ অভিযান শুরু করা জাপান শেষ ম্যাচে হারিয়েছে ২০১০ সালের চ্যাম্পিয়ন স্পেনকেও। স্পেন-জার্মানির তুলনায় তো আজকের প্রতিপক্ষ ক্রোয়েশিয়া চমকে-ধমকে অনেকটাই পিছিয়ে। কিন্তু ভয় আবার এটাই, দুই চ্যাম্পিয়নকে হারালেও জাপানিরা যে হেরেছে কোস্টারিকার মতো ‘দুর্বল’ দলের কাছে।অনুপ্রেরণা আছে দক্ষিণ কোরিয়ারও। ব্রাজিলকে হারানোর অভিজ্ঞতা যে আছে তাদের ঝুলিতে। ১৯৯৯ সালে এক প্রীতি ম্যাচে ব্রাজিলকে হারিয়ে দেয় দক্ষিণ কোরিয়া। এর আগে-পরে খেলা ছয় ম্যাচে ছয়টিতেই অবশ্য জিতেছে ব্রাজিল, গত জুনে যার সর্বশেষটিতে ৫-১ গোলে জিতেছে ব্রাজিল।১৯৯৯-কে মনে করেই আজ মাঠে নামবে দক্ষিণ কোরিয়া। আর জাপানিরা তো মুখোমুখি লড়াইয়ের হিসাবে সমতায় ক্রোয়াটদের সঙ্গে। এশিয়ার ফুটবলকে নতুন উচ্চতায় নেওয়ার স্বপ্ন দেখতেই পারে জাপান-কোরিয়া।

 

সম্পরকিত প্রবন্ধ

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে
Captcha verification failed!
CAPTCHA user score failed. Please contact us!

সবচেয়ে জনপ্রিয়

সাম্প্রতিক মন্তব্য