Friday, March 29, 2024
বাড়িখেলামেসির জন্য মরিয়া সবাই

মেসির জন্য মরিয়া সবাই

স্যন্দন ডিজিটাল ডেস্ক, আগরতলা,১ ডিসেম্বর: সৌদি আরবের বিপক্ষে ম্যাচে দশম মিনিটে স্পট কিকে আর্জেন্টিনাকে এগিয়ে নেন মেসি। কিন্তু তার দেখানো পথ ধরে এগিয়ে যেতে পারেননি সতীর্থরা। আর্জেন্টিনার তাই জেতা হয়নি। ২-১ গোলের হারের হতাশা নিয়ে মাঠ ছাড়তে হয় মেসিকেও।মেক্সিকো ম্যাচ থেকে মার্তিনেসদের কথা রাখার যাত্রা শুরু। যথারীতি এ ম্যাচেও প্রথম গোলের ঝলকটি দেখান মেসি। ৬৪তম মিনিটে দূরপাল্লার শটে লক্ষ্যভেদ করে এগিয়ে নেন দুইবারের বিশ্ব চ্যাম্পিয়নদের। কিন্তু এক গোলে স্বস্তি মেলে, আশঙ্কার মেঘ সরে না। ৮৭তম মিনিটে তাই ফের্নান্দেসের এগিয়ে আসা। মেসির পাস ধরে বাঁ দিক দিয়ে ডি-বক্সে ঢুকে, এক ঝটকায় সামনের প্রতিপক্ষের বাধা দূর করে জোরাল শটে জাল খুঁজে নেন ফের্নান্দেস। মরুভুমির বিশ্বকাপে জয়ের হাহাকার ঘোচে আর্জেন্টিনার, খাদের কিনার থেকে একটু ফিরে আসার স্বস্তির হাসি ফিরে সাতবারের বর্ষসেরার মুখে। আত্মবিশ্বাসী কণ্ঠে অধিনায়ক বলতে পারেন, “আর্জেন্টিনার বিশ্বকাপ সবে শুরু।”স্টেডিয়াম ৯৭৪-এর আঙিনায় পোল্যান্ডের বিপক্ষে ম্যাচ যেন মার্তিনেসদের প্রতিশ্রুতি পূরণের আরেকটি সিঁড়ি পেরুনোর গল্পে সাজানো। যে চিত্রনাট্যে মেসি নায়ক হতে হতেও শেষ পর্যন্ত হয়ে ওঠেন না। কিন্তু দলের সেরা তারকার মলিনতা ঠিকই আড়াল করে দেন দুই তরুণ সতীর্থ আলিস্তের ও আলভারেস। ২-০ গোলের জয়ে পোল্যান্ড বাঁধা পেরিয়ে, গ্রুপ সেরার মুকুট পরে নকআউট পর্বের মঞ্চে উঠে যায় আর্জেন্টিনা। মেসির বুক থেকেও নেমে যায় সুযোগ হারানোর কষ্টের পাথরটি।

কারো দিকে তৃষ্ণার্ত চাতকের মতো না তাকিয়ে থেকে নকআউট পর্বে উঠতে জিততে হতো আর্জেন্টিনাকে। লিওনেল স্কালোনি তাই রণকৌশল সাজিয়েছিলেন আক্রমণাত্মক ছকে। শুরু থেকে পোল্যান্ডের রক্ষণে খুনে মানসিকতা নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়ে দল। বরাবরের মতোই গোলের জন্য ক্ষুধার্ত ছিলেন মেসি। দি মারিয়া, মার্কোস আকুনিয়ারা সুযোগও তৈরি করলেন বেশ কয়েকটা, কিন্তু ভয়চেখ স্ট্যাসনি অবিশ্বাস্য দৃঢ়তায় কখনও ঝাঁপিয়ে, কখনও লাফিয়ে ব্যর্থ করে দিতে থাকলেন সব আক্রমণ। মাঠে আসা আর্জেন্টাইন সমর্থকদের উৎকণ্ঠার পারদও চড়তে থাকে লাফিয়ে লাফিয়ে।৩৫তম মিনিটে সে উৎকণ্ঠা আরও বাড়ে। পেনাল্টি থেকে গোলের সুযোগ হাতছাড়া করেন মেসি!আর্জেন্টিনার সর্বোচ্চ গোলদাতা তিনি, কিন্তু এ নিয়ে জাতীয় দলের হয়ে মিস করলেন চারটি পেনাল্টি। ক্লাব ও জাতীয় দল মিলিয়ে ৩১ বার পেনাল্টি থেকে গোল করতে ব্যর্থ হলেন তিনি। গত বিশ্বকাপেও আইসল্যান্ডের বিপক্ষে স্পট কিকে ব্যর্থ হয়েছিলেন এই মহাতারকা। ওই ম্যাচে আলবিসেলেস্তারাও জিততে পারেনি, ১-১ ড্রয়ের হতাশায় শুরু করে রাশিয়ার আসর।চার বছর আগের আসরে আর্জেন্টিনার বিদায় ঘণ্টা বেজেছিল শেষ ষোলোয়, ফ্রান্সের কাছে হেরে। ১৯৮৬ সালের পর আরেকটি বিশ্বকাপ জয়ের অপেক্ষাও হয়েছিল দীর্ঘ। পোল্যান্ডের বিপক্ষে মেসির এবারের পেনাল্টি মিস দুইবারের বিশ্বচ্যাম্পিয়নদের দিতে থাকে আবার সেই ফ্রান্সের সামনে পড়ার চোখ রাঙানি। মার্তিনেসের সেই পণও পড়ে যায় প্রশ্নের মুখে। কিন্তু দ্বিতীয়ার্ধের চিত্রনাট্যে মিলে যায় সবকিছু।

এই অর্ধের ৬৮ সেকেন্ডের মাথায় নাহুয়েল মোলিনার পাস বক্সে পেয়ে যান আলিস্তের। কোনাকুনি শট দূরের পোস্ট দিয়ে বল জালে পাঠিয়ে আন্তর্জাতিক ফুটবলে গোলের খাতা খোলেন ২৩ বছর বয়সী এই মিডফিল্ডার। এরপর ৬৭তম মিনিটে দারুণ এক গোলে ব্যবধান দ্বিগুণ করেন আলভারেস। মেক্সিকো ম্যাচের গোলদাতা ফের্নান্দেসের পাস ধরে ঠাণ্ডা মাথায় জায়গা বের করে নিয়ে ডান পায়ের জোরাল শটে লক্ষ্যভেদ করেন ২২ বছর বয়সী এই ফরোয়ার্ড। ম্যাচের ভাগ্য, গ্রুপ সেরা হয়ে আর্জেন্টিনার নকআউট পর্বে ওঠার গল্প যেন লেখা হয়ে যায় তখনই।তাই প্রথমার্ধের সুযোগ নষ্টের হতাশা, পেনাল্টি মিস, ৫৬তম মিনিটে বল পায়ে ডি-বক্সে ঢুকে ঠিকমতো শট নিতে না পারার ব্যর্থতা নিয়েও ম্যাচ শেষের বাঁশি বাজতে বাঁধনহারা উচ্ছ্বাসে মেতে উঠতে পারেন মেসি। এখন তিনিও বিশ্বাস করতে পারেন, তার জন্য সিংহের মতোই লড়াই করছে সতীর্থরা।

সম্পরকিত প্রবন্ধ

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

সবচেয়ে জনপ্রিয়

সাম্প্রতিক মন্তব্য