রথযাত্রা, লোকারণ্য… তারপরই হাহাকার। কার্যত বেনজির অবব্যস্থা পুরীর রথে। যার জেরে ইতিমধ্যেই প্রাণ গিয়েছে ৩ জনের। আরও ৬ জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। কিন্তু কেন ঘটল এই দুর্ঘটনা? গাফিলতি কার? হাজারও প্রশ্নের মধ্যে শোনা যাচ্ছে স্বজনহারাদের কান্নার রোল।
কীভাবে দুর্ঘটনা ঘটল? ওড়িশা সরকার পুরো বিষয়টির জন্য ভিড়কেই দায়ী করছে। এর আগে গত শুক্রবারও রথযাত্রার সময় পদপিষ্টের পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল। এমনকী সময়মতো রথ পৌঁছতে না পারায় যাত্রা স্থগিতও করে দিতে হয়। রবিবার ভোরেই ফের পদপিষ্টের পরিস্থিতি। স্বাভাবিকভাবেই বিজেপি শাসিত রাজ্যের পুলিশ প্রশাসনের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। স্থানীয়দের দাবি, ভিড় সামাল দেওয়ার জন্য যথাযথ ব্যবস্থা করেনি প্রশাসন। পুলিশকর্মীর সংখ্যাও ছিল অপ্রতুল। ভিড় নিয়ন্ত্রণের কোনও ব্যবস্থাই ছিল না।
এসবের মধ্যে কয়েকজন প্রত্যক্ষদর্শী আরও বিস্ফোরক অভিযোগ করেছেন। তাঁদের দাবি, “ভিআইপিদের জন্য আলাদা ব্যবস্থা করতে গিয়েই এই দুর্ঘটনা। পুলিশ শেষমুহূর্তে পুণ্যার্থীদের সরিয়ে আলাদা করে রাস্তা তৈরির চেষ্টা করছিল ভিআইপিদের জন্য। ফলে সাধারণ পুণ্যার্থীদের সরে যেতে হয়েছে। তাছাড়া অনেক পুণ্যার্থীকে জগন্নাথদেবের দর্শনের আগেই ফিরে যেতে হয়েছিল। ফলে প্রবেশ পথই প্রস্থানের পথ হয়ে দাঁড়িয়েছিল। তাতেই এক জায়গায় হুড়োহুড়ি পড়ে যায়।” আবার আর একটা সূত্র বলছে, শনিবার সারারাত গুন্ডিচা মন্দিরের সামনে ভিড় ছিল। প্রভু জগন্নাথদেবকে রথে আসীন অবস্থায় দেখার জন্য হাজার হাজার মানুষ সংকীর্ণ পরিসরে জমায়েত করেন। ওই পরিস্থিতিতে মন্দিরের কাছে রীতি পালনের সামগ্রী ভর্তি গাড়ি এসে পৌছলে হুড়োহুড়ি শুরু হয়। ভেঙে যায় ভিড় নিয়ন্ত্রণের জন্য তৈরি ব্যারিকেড। তৈরি হয় পদপিষ্টের মতো পরিস্থিতি।
এসবের মধ্যে মুখ্যমন্ত্রী মোহন চরণ মাঝি গাফিলতির কথা স্বীকার করে নিয়েছেন। জগন্নাথ ভক্তদের কাছে ক্ষমা চেয়ে নিয়ে তাঁর বক্তব্য, “আমি এবং আমার সরকার জগন্নাথ ভক্তদের কাছে ক্ষমা চেয়ে নিচ্ছি। প্রভু জগন্নাথদেব স্বজনহারাদের এই দুঃখ সহ্য করার শক্তি দিক। এই ধরনের গাফিলতি সহ্য করা যায় না। পুরো ঘটনার পুঙ্খানুপুঙ্খ তদন্ত করা হচ্ছে। দোষীরা শাস্তি পাবেই।”