স্যন্দন ডিজিটেল ডেস্ক, ৩০ আগস্ট: প্রবল বৃষ্টির জেরে এমনিতেই নাজেহাল অবস্থা দেশের একাধিক রাজ্যে। এরই মাঝে উদ্বেগ বাড়াচ্ছে ঘূর্ণিঝড় আসনা। কেন্দ্রীয় মৌসম বিভাগের দাবি, আরব সাগরের থেকে ধেয়ে আসছে ভয়ংকর ঘূর্ণিঝড় ‘আসনা’। ইতিমধ্যেই এই বিষয়ে সতর্কবার্তা জারি করা হয়েছে আবহাওয়া দপ্তরের তরফে। যদিও উপকূল পর্যন্ত পৌঁছতে পৌঁছতে ঝড়ের প্রভাব সেভাবে থাকবে না বলে মনে করা হচ্ছে। কিন্তু ব্যাপক বৃষ্টিপাত হবে। সেটাই সব চেয়ে বেশি উদ্বেগের বিষয়।
জানা যাচ্ছে, গত ৪৮ বছরের মধ্যে প্রথমবার আগস্ট মাসে কোনও ঘূর্ণিঝড় তৈরি হচ্ছে আরব সাগরে। শেষবার আগস্ট মাসে আরব সাগরে এমন দুর্লভ ঘূর্ণিঝড় তৈরি হয়েছিল ১৯৭৬ সালে। হাওয়া অফিসের দাবি, এর সব চেয়ে বেশি প্রভাব পড়বে গুজরাট ও উত্তর মহারাষ্ট্রের উপকূলে। ৬৫ থেকে ৭৫ কিলোমিটার বেগে ঝড় হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তবে চিন্তার বিষয় হল বৃষ্টি। এই বছর জুন থেকে আগস্ট পর্যন্ত গুজরাটের কচ্ছ ও সৌরাষ্ট্রে প্রায় ৭০০ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে। সাধারণত ওই এলাকায় সর্বোচ্চ ৪৩০ এমএম বৃষ্টি হয়। ফলে চলতি বছর বৃষ্টির পরিমাণ প্রায় দ্বিগুণ। এর উপর ‘আসনা’র জেরে হাল আরও খারাপ হতে পারে গুজরাটবাসীর। পরিস্থিতি সামাল দিতে ইতিমধ্যেই মাঠে নেমে পড়েছে প্রশাসন। মৎসজীবীদের সমুদ্রে যেতে নিষেধ করা হয়েছে।
এলাকায় যে সকল মানুষ ঝুপড়ি ও অস্থায়ী ঘরে বসবাস করেন তাঁদের স্কুল, মন্দির ও অন্যান্য বড় বাড়িতে আশ্রয় নিতে বলা হয়েছে প্রশাসনের তরফে। নির্দেশ দেওয়া হয়েছে শুক্রবার সন্ধের মধ্যে ঝুপড়ি ও অস্থায়ী বাড়ি থেকে সাধারণ মানুষ যেন নিরাপদ জায়গায় উঠে যান। আগামী ১২ ঘণ্টার মধ্যে এটি আছড়ে পড়তে পারে উপকূলে। এর পর গত ২ দিন ধরে ভারতের পশ্চিম উপকূলে ব্যাপক নিম্নচাপের আকার নেবে। হাওয়া অফিস জানিয়ে এই ঝড়ের জেরে সমুদ্রের পরিস্থিতি অত্যন্ত খারাপ আকার নেবে। প্রবল ঢেউয়ের পাশাপাশি গুজরাট উপকূলে ৭৫ কিমি বেগে হওয়া বইতে পারে।
তবে আগস্ট মাসে আরব সাগরে তৈরি হওয়া এই ঘূর্ণিঝড়কে স্বাভাবিক চোখে দেখছেন না আবহাওয়াবিদরা। এই ঘটনা অত্যন্ত দুর্লভ বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। কারণ ১৮৯১ সাল থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত এই দীর্ঘ বছরে আগস্ট মাসে মোট ৩ বার এমন ঘূর্ণিঝড় তৈরি হয়েছে। উল্লেখ্য, নয়া এই ঝড় ‘আসনা’র নামকরণ করেছে পাকিস্তান।