Friday, February 7, 2025
বাড়িজাতীয়ফের একবার দ্য কাশ্মীর ফাইলসের প্রশংসায় পঞ্চমুখ প্রধানমন্ত্রী, দেখতে বললেন দলের সব...

ফের একবার দ্য কাশ্মীর ফাইলসের প্রশংসায় পঞ্চমুখ প্রধানমন্ত্রী, দেখতে বললেন দলের সব সাংসদদের

নয়াদিল্লি, ১৫ মার্চ (হি.স.): ‘দ্য কাশ্মীর ফাইলস’ নিয়ে প্রশংসায় পঞ্চমুখ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী । শুধু তাই নয়, বিজেপি-র সাংসদদেরও বিবেক অগ্নিহোত্রী পরিচালিত সিনেমাটি দেখার পরামর্শ দিলেন প্রধানমন্ত্রী। মঙ্গলবার সংসদীয় দলের বৈঠক করেন প্রধানমন্ত্রী।

 সেখানে বর্তমান দিনে চলচ্চিত্র শিল্পের ভূমিকা নিয়ে মন্তব্য করেন তিনি। প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘‘দ্য কাশ্মীর ফাইলস্- এর মতো সিনেমা আরও তৈরি হওয়া প্রয়োজন।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘এমন সিনেমার মাধ্যমে সাধারণ মানুষ প্রকৃত সত্য জানতে পারে।’’


কাশ্মীর ফাইলস নিয়ে সাম্প্রতিককালে যে তুমুল শোরগোল তৈরি হয়েছে, সেই কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী সংসদীয় দলের বৈঠকে বিজেপির সাংসদদের উদ্দেশে বলেন, ইতিহাস ও ঐতিহাসিক ব্যক্তিত্বদের সঠিক দৃষ্টিকোণে উপস্থাপনের বিষয়ে অনীহার কারণেই মহাত্মা গান্ধীর ভূমিকাকে স্বীকৃতি দিতে দেরি হয়েছে। উল্লেখ্য বিবেক অগ্নিহোত্রী পরিচালিত, দ্য কাশ্মীর ফাইলস সিনেমাটিতে ১৯৯০-এর দশকে কাশ্মীর উপত্যকা থেকে কাশ্মীরি পণ্ডিতদের উৎখাত করার চিত্র তুলে ধরা হয়েছে। সিনেমায় মুখ্য ভূমিকায় অভিনয় করেছেন অনুপম খের, দর্শন কুমার, মিঠুন চক্রবর্তী এবং পল্লবী জোশী। প্রধানমন্ত্রীর মুখে সাধারণত সিনেমার বিষয়ে এই ধরনের মন্তব্য শোনা যায় না। এর আগে অবশ্য উরি সিনেমারও প্রশংসা করতে দেখা গিয়েছিল তাঁকে। বিজেপির তরফে এমনকী প্রধানমন্ত্রীর বক্তৃতার একটি ভিডিয়োও প্রকাশ করা হয়েছে, যেখানে তিনি সিনেমাটির প্রশংসা করছেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, “ইতিহাসকে সময়ে সময়ে সমাজের সামনে সঠিকভাবে উপস্থাপন করতে হয়। এতে যেমন বই, কবিতা ও সাহিত্যের ভূমিকা রয়েছে, তেমনি সিনেমাও তা করতে পারে।”

দলীয় সাংসদদের উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, “ভারতের স্বাধীনতার পরে, আমরা মার্টিন লুথার কিং এবং নেলসন ম্যান্ডেলার কথা শুনেছি কিন্তু মহাত্মা গান্ধী সম্পর্কে তেমন কিছু শোনা যায়নি। কেউ যদি গান্ধীকে নিয়ে সিনেমা তৈরি করে বিশ্বের সামনে তুলে ধরতেন, তাহলে হয়ত বার্তা পৌঁছে যেত। প্রথমবারের মতো, একজন বিদেশি গান্ধীকে নিয়ে একটি চলচ্চিত্র তৈরি করেছিলেন এবং এমনকী এটির জন্য একটি পুরষ্কারও জিতেছিলেন। তখনই গোটা বিশ্ব জানতে পারে যে গান্ধী কত মহান ছিলেন।”

এর পাশাপাশি যাঁরা দ্য কাশ্মীর ফাইলস মুক্তির বিরুদ্ধে ছিলেন তাঁদেরও কটাক্ষ করেন মোদী। প্রধানমন্ত্রী বলেন, “কিছু মানুষ মতপ্রকাশের স্বাধীনতার কথা বলেন, কিন্তু জরুরী অবস্থার উপর কোনও চলচ্চিত্র তৈরি করা হয়নি। কারণ সত্যকে কবর দেওয়ার জন্য ক্রমাগত চেষ্টা করা হয়েছিল।” সেই সঙ্গে তাঁর আরও সংযোজন, “১৪ আগস্ট (দেশভাগের দিন) যখন আমরা একটি বিশেষ দিন হিসেবে চিহ্নিত করার সিদ্ধান্ত নিই, তখনও কিছু মানুষের সমস্যা ছিল… কিন্তু দেশ কীভাবে সেই দিনটিকে ভুলতে পারে?”


প্রধানমন্ত্রী আরও উল্লেখ করেন যে, দেশভাগের উপর ভিত্তি করে কোনও চলচ্চিত্র নেই। বলেন, “দেশভাগের ওপর কি কোনও চলচ্চিত্র নির্মিত হয়েছে? আপনি নিশ্চয়ই কাশ্মীর ফাইলস নিয়ে আলোচনার কথা শুনেছেন। যারা মতপ্রকাশের স্বাধীনতার পতাকা নিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছেন, সেই পুরো দলটি গত কয়েকদিন ধরে হৈচৈ করছে।”

সিনেমাটিকে “বদনাম” করার প্রচেষ্টা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন নরেন্দ্র মোদী। বলেন, “বাকস্বাধীনতার ধ্বজাধারী জামাতরা ক্ষেপে রয়েছে বিগত পাঁচ – ছয় দিন ধরে। তথ্য ও সত্যের ভিত্তিতে সিনেমাকে মূল্যায়ন না করে, এটিকে খাটো করার জন্য এক প্রচার চলছে। পুরো ব্যবস্থাটাই এমন যে কেউ সত্য দেখানোর চেষ্টা করে, তার বিরোধিতা করে। তারা (দ্য কাশ্মীর ফাইলস) সত্য হিসাবে যা দেখতে চায়, তা উপস্থাপন করার চেষ্টা করেছেন। সত্য কেউ যাতে না দেখে, সে জন্য গত কয়েকদিন ধরে ষড়যন্ত্র চলছে। আমার ইস্যুটি একটি চলচ্চিত্র নিয়ে নয়, দেশের সামনে সত্যকে তার সঠিক আকারে তুলে ধরার বিষয়ে।”

মোদী সেই সঙ্গে আরও পরামর্শ দেন, যাঁরা সিনেমার দৃষ্টিভঙ্গির সঙ্গে ভিন্ন মত পোষণ করেন তারা তাদের মতামত নিয়ে সিনেমা তৈরি করতে পারেন। বলেন, “সত্যের অনেক দিক এবং ভিন্ন দৃষ্টিভঙ্গি থাকতে পারে। যারা এটিকে সঠিক নয় বলে মনে করেন তারা তাদের নিজস্ব চলচ্চিত্র তৈরি করতে পারেন, তবে যে সত্যকে তারা চাপা দেওয়ার চেষ্টা করেছিলেন তা এখন বেরিয়ে আসছে।” তিনি সাংসদদের “সত্যের পক্ষে দাঁড়ানোর” জন্য আহ্বান জানিয়ে বলেন, “যাঁরা সত্যের পক্ষে, তাঁদের দায়িত্ব এটির পাশে দাঁড়ানো। আমি আশা করি সবাই তা করবেন।।”

সম্পরকিত প্রবন্ধ

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে
Captcha verification failed!
CAPTCHA user score failed. Please contact us!

সবচেয়ে জনপ্রিয়

সাম্প্রতিক মন্তব্য